ভারতের গমে রুবেলা ভাইরাস : অর্ধলাখ টন ফেরত দিল তুরস্ক

আগের সংবাদ

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন : ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

পরের সংবাদ

অ্যাসেম্বলিতে ঢাকা ডিবেট

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ছোট লাট সাহেবের ঢাকা সফর
১ আগস্ট ১৯৪০ বিকাল পৌনে ৫টায় কলকাতার অ্যাসেম্বলি হাউসে অধিবেশন শুরু হয়। স্পিকার খান বাহাদুর এম আজিজুল হক। দশজন মন্ত্রী এবং ২১৫ জন সদস্য হাজির।
প্রতুল চন্দ্র গাঙ্গুলির তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন দিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হলো। মাননীয় সদস্য প্রশ্ন রাখলেন- স্বরাষ্ট্র (পুলিশ) দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী জানেন কি যে :
(১) ২ জুলাই ১৯৪০ বাংলার গভর্নর যখন ঢাকায় এলেন তিনি জনাকীর্ণ ব্যবসা ও বাণিজ্যিক এলাকা যেমন- সদর ঘাট, জনসন রোড, নবাবপুর রোড ধরে গিয়েছেন?
(২) তার সফরের জন্য আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ট্রাফিক চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয় এবং পথচারীদের এমনকি রাস্তা পারাপার হতেও দেয়া হয়নি।
(৩) ৪ জুলাই তিনি যখন আহসান মঞ্জিল টি-পার্টিতে যোগদান করতে গিয়েছিলেন সেদিনও একইভাবে ট্রাফিক চলাচল ও পথচারীদের আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়।
(৪) তারপর যতবারই গভর্নর রাস্তায় বের হয়েছেন ট্রাফিক ও জনগণের একই দশা হয়েছে।
(৫) এসব প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের সফরের সময় সাধারণ ব্যবসায়ীদের দুর্গতি লাঘবে সরকার কী ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে?
উত্তরে স্বরাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন বলেন, সরকার এ সম্পর্কে অবহিত। কিন্তু সবাই জানেন ওইটি হচ্ছে একমাত্র রুট। এক্সিলেন্সি গভর্নর মহোদয়ের আগমনের অল্প সময় আগে ট্রাফিক চলাচল বন্ধ করা হয়। তার আগমনের কয়েক মিনিট আগেও পথচারী পারাপার অব্যাহত ছিল। ট্রাফিক মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য বন্ধ ছিল এবং গভর্নর মহোদয়ের নিরাপত্তার বিষয়টির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যতটা সম্ভব কম অসুবিধা সৃষ্টি করে গোটা কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে।
এই জবাবের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চেপে ধরলেন সুরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, অতুল চন্দ্র সেন, অতুল কৃষ্ণ ঘোষ এবং চারুচন্দ্র রায়।
সুরেন্দ্রনাথ রায় জিজ্ঞেস করলেন, পাঁচ মিনিট বন্ধ থাকার তথ্যটি মাননীয় মন্ত্রী বলছেন কেবল পাঁচ মিনিট। তিনি কি পুলিশ রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে জবাব দিয়েছেন?
অতুল চন্দ্র সেন বললেন, মাননীয় মন্ত্রী কি জানেন, অতি উৎসাহী পুলিশ অফিসার ও কনস্টেবল পথচারীদের দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রেখেছে।
মন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন বললেন, আমি বিশ্বাস করি এসব ঘটেনি।
অতুল চন্দ্র সেন ট্রাফিক আটকে রাখার এই বাড়াবাড়ির তদন্ত দাবি করলেন; কিন্তু মন্ত্রী বললেন, তদন্তের প্রয়োজন দেখছি না।
প্রতুল চন্দ্র গাঙ্গুলির তারকা খচিত প্রশ্ন : জুলাই ১৯৪০ শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার পর থেকে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় এক্সিলেন্সি গভর্নর বাহাদুরের ঘোড়দৌড়ের মাঠে আসা উপলক্ষে গভর্নর হাউস থেকে জিমখানা রেস গ্রাউন্ড পর্যন্ত ঢাকা শহরের সব রাস্তাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল?
জবাবে মন্ত্রী বললেন, পুরনো প্রথা অনুযায়ী তা করা হয়েছে। পরে এই প্রথা ভাঙার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চারুচন্দ্র রায় জিজ্ঞেস করে বসলেন, তাহলে তথাকথিত জনপ্রিয় মন্ত্রীমণ্ডলী পুরনো প্রথা আঁকড়ে আছে কেন?
মন্ত্রী আর কথা বললেন না।

ঢাকায় কারফিউ
২৫ মার্চ ১৯৪২ সকাল সাড়ে ৮টায় অ্যাসেম্বলি অধিবেশনের শুরুতেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন :
ক) ১৯৪১-এর অক্টোবরে ঢাকা শহরে কোন কোন এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছিল? সেখানকার লোকসংখ্যা কত?
খ) মাননীয় মন্ত্রী কি দয়া করে বলবেন-
১. যাদের কারফিউ নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই দিন, তিন দিন ঘর হতে বের হতে দেয়া হয়নি, সরকার কি তাদের বাড়িতে খাবার সরবরাহ করেছে?
২. সে সব পরিবারের শিশুদের জন্য দুধ ও রোগীর জন্য পথ্য সরবরাহ করেছে?
৩. যাদের চিকিৎসাসেবা গ্রহণের প্রয়োজন ছিল, তাদের সে সেবা প্রদান করেছে?
গ) দীর্ঘদিন কারফিউ থাকার কারণে সেইসব এলাকার মানুষের যে কষ্ট হয়েছে সরকার কি সে বিষয়ে কোনো তদন্তানুষ্ঠানের কথা ভাবছে?

জবাব দিলেন স্বরাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ কে ফজলুল হক। তিনি সরকারেরও প্রধান।
ক) কোতোয়ালি, সূত্রাপুর ও লালবাগ থানার আওতাধীন গোটা এলাকা রাতের বেলা নির্ধারিত সময়ের জন্য ১৯৪১-এর অক্টোবর মাসে কারফিউর আওতায় আনা হয়। ১৯৩১ সালের লোকগণনার রিপোর্ট অনুযায়ী এই তিনটি এলাকার লোকসংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫১৮।
সূত্রাপুর থানার ফরাশগঞ্জের কিছু এলাকায় টানা ৪৮ ঘণ্টা, নবাবপুর রোডের পূর্বদিক থেকে শুরু করে বনগ্রাম রোড এলাকায় টানা ৭২ ঘণ্টা, লালবাগ থানার রহমতগঞ্জ পোস্তা এবং নবাবগঞ্জে দুটি এলাকা, কোতোয়ালির কায়েতটুলি, সূত্রাপুরের টিকাটুলি টানা ৪৮ ঘণ্টা কারফিউর আওতায় আসে। এসব এলাকার পৃথক জনসংখ্যা পাওয়া যায়নি।
খ) ১. পর্যাপ্ত সামগ্রী রয়েছে এই বিশ্বাস করে সরকার কোনো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
২-৩. শিশুদের দুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে একজন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন। চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা ছিল। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সাহায্য করেছেন একজন হিন্দু কমিশনার, ঢাকা পৌরসভার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং স্থানীয় পাহারাদারগণ।
নগেন্দ্রনাথ সেন জিজ্ঞেস করলেন, সেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নাম কী?
মন্ত্রী বললেন, আমার জানা নেই।
নগেন্দ্রনাথ সেন জিজ্ঞেস করলেন, শিশু খাদ্যের চাহিদা এবং চিকিৎসাসেবার প্রয়োজনীয়তা কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে- কোনো ট্রাইব্যুনালে না অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে?
অনুরূপ প্রশ্নে তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, সরকার কি আমাদের বিশ্বাস করতে বলে যে, শিশুদের দুধ আর রোগীদের ওষুধ পুরো বাহাত্তর ঘণ্টার জন্য প্রয়োজনমতো সরবরাহ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বললেন, আমি কেবল এটুকু বলতে চাই যে, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটও রক্তমাংসের মানুষ। শিশু ও অসুস্থদের প্রয়োজনটা তিনি নিশ্চয়ই বুঝবেন।
অতুল চন্দ্র সেন বললেন, মাত্র দুই মাস আগে কদুটোলা এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। আমি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে গভর্নরের কাছে নালিশ জানিয়েছি সে সময় শিশুরা দুধ পায়নি, রোগীরা ওষুধ পায়নি, জনগণের ভোগান্তির কোনো সীমা ছিল না। এই বিষয়টি কি আপনার জানা নেই?
মন্ত্রী বললেন, তিনি অবহিত নন।
নরেন্দ্র নাথ দাসগুপ্ত বললেন, মন্ত্রী মহোদয় কি জানেন যেসব এলাকায় কারফিউ বলবৎ করা হয় তা মূলত: হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা?
মন্ত্রী বললেন, আমি বলতে পারব না।
চারুচন্দ্র রায় বললেন, এটা কি সত্য যখন ঢাকা ও নবাবপুরের মানুষ ওইসব হতভাগ্যদের জন্য দুধ, পানি ও অন্যান্য জিনিসপত্র সরবরাহ করতে এগিয়ে গিয়েছে তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সার্জেন্ট তাদের বাধা দিয়েছে?
মাননীয় মন্ত্রী এ কে ফজলুল হক বললেন, এগুলো সুনির্দিষ্ট ধরনের অভিযোগ। আলাদাভাবে নোটিস দিলে আমি জেনে জবাব দেব।

ঢাকায় কারফিউ
২৫ মার্চ ১৯৪২ সকাল সাড়ে আটটায় অ্যাসেম্বলি অধিবেশনের শুরুতেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন-
ক) ১৯৪১-এর অক্টোবরে ঢাকা শহরে কোন কোন এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছিল? সেখানকার লোকসংখ্যা কত?
খ) মাননীয় মন্ত্রী কি দয়া করে বলবেন-
১. যাদের কারফিউ নিষেধাজ্ঞার কারণে দু’দিন তিনদিন ঘর হতে বের হতে দেয়া হয়নি, সরকার কি তাদের বাড়িতে খাবার সরবরাহ করেছে?
২. সে সব পরিবারের শিশুদের জন্য দুধ ও রোগীর জন্য পথ সরবরাহ করেছে?
৩. যাদের চিকিৎসা সেবা গ্রহণের প্রয়োজন ছিল, তাদের সে সেবা প্রদান করেছে?
গ) দীর্ঘদিন কারফিউ থাকার কারণে সেইসব এলাকার মানুষের যে কষ্ট হয়েছে সরকার কি সে বিষয়ে কোন তদন্তানুষ্ঠানের কথা ভাবছে?
জবাবে দিলেন স্বরাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ কে ফজলুল হক। তিনি সরকারেরও প্রধান।
ক) কোতওয়ালি, সুত্রাপুর ও লালবাগ থানার আওতাধীন গোটা এলাকা রাতের বেলা নির্ধারিত সময়ের জন্য ১৯৪১-এর অক্টোবর মাসে কারফিউর আওতায় আনা হয়। ১৯৩১ সালের লোকগণনার রিপোর্ট অনুযায়ী এই তিনটি এলাকার লোকসংখ্যা ১,৩৮,৫১৮।
সূত্রাপুর থানার ফরাগঞ্জের কিছু এলাকায় টানা ৪৮ ঘণ্টা, নবাবপুর রোডের পূর্বদিক থেকে শুরু করে বনগ্রাম রোড এলাকায় টানা ৭২ ঘণ্টা, লালবাগ থানার রহমতগঞ্জ পোস্তা এবং নবাবগঞ্জে দুটি এলাকা, কোতাওয়ালীর কায়েতটুলি, সূত্রাপুরের টিকাটুলি টানা ৪৮ ঘণ্টা কারফিউর আওতায় আসে। এসব এলাকার পৃথক জনসংখ্যা পাওয়া যায়নি।
খ) ১. পর্যাপ্ত সামগ্রী রয়েছে এই বিশ্বাস সরকার কোন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
২-৩. শিশুদের দুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে একজন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন। চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা ছিল। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সাহায্য করেছেন একজন হিন্দু কমিশনার, ঢাকা পৌরসভার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং স্থানীয় পাহারাদারগণ।
নগেন্দ্রনাথ সেন জিজ্ঞেস করলেন, সেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নাম কি?
মন্ত্রী বললেন, আমার জানা নেই।
নগেন্দ্র নাথ সেন জিজ্ঞেস করলেন, শিশু খাদ্যের চাহিদা এবং চিকিৎসা সেবার প্ররয়াজনীয়তা কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে- কোন ট্রাইব্যুনালে না অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে?
অনুরূপ প্রশ্নে তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, সরকার কি আমাদের বিশ্বাস করতে বলে যে, শিশুদের দুধ আর রোগীদের ঔষধ পুরো বাহাত্তর ঘণ্টার জন্য প্রয়োজনমত সরবরাহ করা হেেছ।

মন্ত্রী বললেন,
মন্ত্রী বললেন, আমি বলতে পারব না।
চারু চন্দ্র রায় বললেন, এটা কি সত্য যখন ঢাকা ও নবাবপুরের মানুষ ঐসব হতভাগ্যদের জন্য দুধ, পানি ও অন্যান্য জিনিসপত্র সরবরাহ করতে এগিয়ে গিয়েছে তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সার্জেন্ট তাদের বাধা দিয়েছে?
মাননীয় এ কে ফজলুল হক বললেন, এগুলো সুনির্দিষ্ট ধরনের অভিযোগ। আলাদাভাবে নোটিস দিলে আমি জেনে জবাব দেব।

ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনা
১৫ মার্চ ১৯৪৪। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সৈয়দ শাহাবে আলমের প্রশ্ন-
ক. গত চার মাসে ঢাকা শহরে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কত?
খ. এর মধ্যে মিলিটারি ড্রাইভারের বিরুদ্ধে ক’টি দুর্ঘটনার মামলা করা হয়েছে?
গ. ক’টি মামলায় সিভিল ও মিলিটারি ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে?
ঘ. এক বছর আগে ১৯৪২-৪৩ সালে একই সময়ে চার মাসের মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা কত?
খাজা নাজিমউদ্দিনের পক্ষে জবাব দিলেন খান বাহাদুর মোহাম্মদ আলী। তিনি বললেন, নভেম্বর ১৯৪৩ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪ চার মাসে ঢাকার রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। এর মধ্যে ১৮টি দুর্ঘটনার সঙ্গে মিলিটারি ড্রাইভার জড়িত। একটি সড়ক দুর্ঘটনার মামলাতেও শাস্তি হয়নি। আগের বছর একই সময়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে চারটি।
নরেন্দ্র নাথ দাসগুপ্তের সম্পূরক প্রশ্ন : দুর্ঘটায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি কেন?
খান বাহাদুর বললেন, নোটিস চাই।
অতুল চন্দ্র সেন বললেন, নারায়ণগঞ্জে গাড়িচাপা পড়ে একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মারা গেছেন?
তার পরিবারের পক্ষ থেকে যে ক্ষতিপূরণের আবেদন করা হয়েছে তা কি মন্ত্রী জানেন?
খান বাহাদুর বললেন, নোটিস চাই।
অতুল চন্দ্র সেন বললেন, দোষী মিলিটারি ড্রাইভারদের শনাক্ত করার পরও তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন?
খান বাহাদুর বললেন, সামরিক কর্তৃপক্ষ তাদের ড্রাইভারের বিষয়টি দেখবে আর সিভিলিয়ান ড্রাইভারের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন থাকলে নোটিস দিন।
অতুল চন্দ্র সেন, সুরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, এ এফ স্টার্ক, চারু চন্দ্র রায়, আবু হোসেন সরকার, নরেন্দ্র নাথ দাসগুপ্ত, শাহেদ আলী, অতুল কৃষ্ণ ঘোষ একটার পর একটা সম্পূরক প্রশ্ন করে খান বাহাদুরকে নাস্তানাবুদ করে ফেললেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, মিলিটারি ড্রাইভাররা মোটর ভেহিকেল রুলস মানে না, এটা কি সত্য?
তিনি বললেন, এটা এক সময় সত্য ছিল, কিন্তু নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে।
সুরেন্দ্র নাথ জিজ্ঞেস করলেন, আমেরিকান লরি ড্রাইভার যদি দুর্ঘটনা ঘটায় তাহলে বাংলা সরকার কি তার বিচার করতে পারে?
খান বাহাদুর বললেন, প্রাদেশিক সরকারের এখতিয়ার নেই। তবে প্রভোস্ট মার্শালকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়।
(বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির ১৯৪০ থেকে ১৯৪৪ পর্যন্ত বিভিন্ন অধিবেশনের প্রসিডিংস থেকে অনূদিত)।

ড. এম এ মোমেন : সাবেক সরকারি চাকুরে, নন-ফিকশন ও কলাম লেখক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়