ঢাকায় সিপিবির সমাবেশ কাল

আগের সংবাদ

টার্গেট এবার রাজপথ দখল : পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ ও প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি

পরের সংবাদ

জামায়াতের গোপন তৎপরতা : দলটি নিষিদ্ধকরণ সময়ের দাবি

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জামায়াত-শিবির এত নীরব কেন- এমন প্রশ্ন সচেতন মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। তারা কি রাজনীতির মাঠ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল? নাকি তলে তলে তলা গোছানোর কাজ করে চলেছে? গতকাল ভোরের কাগজের এমন একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামায়াত-শিবিরের কার্যক্রম দৃশ্যমান না হলেও গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছে সংগঠনটি। দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর নানা কৌশলে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে স্বাধীনতাবিরোধী এ দলটি। ভেতরে ভেতরে তলা গোছানোর কাজ তারা করছে অতি বিচক্ষণতার সঙ্গে। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোট। এরপর ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এত কিছুর পরও জামায়াত আছে। জামায়াত আছে, কারণ তাদের পেছনে বিএনপি আছে। দলের নিবন্ধন বাতিল হলেও তারা আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠছে। সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্যের পথে হাঁটা বিএনপিসহ রাজপথের বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে ‘যুগপৎ’ আন্দোলনে নিজেদের সক্রিয় করতেও প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী দলটি। পাশাপাশি সদস্য সংগ্রহ, চাঁদা আদায়, ঝটিকা মিছিল থেকে শুরু করে নানা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড গোপনে চালিয়ে যাচ্ছেন এ দলটির নেতাকর্মীরা। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে এলাকায় এলাকায় তারা করছেন গোপন বৈঠক। আলোচনায় জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন বসতবাড়ি, কোচিং সেন্টার ও ব্যক্তিগত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সামাজিক গণমাধ্যমকে তারা প্রচারের নির্ভরযোগ্য জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক কার্যক্রম চলছে- হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক যোগাযোগ রাখছেন নেতারা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর সারাদেশে জামায়াতের রাজনীতিতে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও প্রশাসনিক বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়া ২০১৩ ও ২০১৫ সালে আগুন সন্ত্রাসের মামলায় দলটির নেতাকর্মীদের নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে আদালতে। মোকাবিলা করতে হচ্ছে অসংখ্য মামলা। এরপরও তারা সাংগঠিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েকশ নেতাকর্মী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন গোপন বৈঠককালে। এমতাবস্থায় দলটিকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার মামলাটি ঝুলে আছে। জামায়াত সত্যি নিষিদ্ধ হবে কিনা, নিষিদ্ধ হলে জামায়াত কী কৌশল নেবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধকে কোনোদিনই সমর্থন করেনি জামায়াতিরা। বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপের জন্য ১৯৭১ সালেই নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় জামায়াত। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পরই ফের মাথাচাড়া দেয় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। দেশের স্বাধীনতাকে চিরকাল অসম্মান করে চলেছে তারা। তাই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে প্রকাশ্যে গৃহযুদ্ধ বলার সাহস পেয়েছিল বিএনপির আমলে। দেশবাসী চান, জামায়াতকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক। নির্বাচনে লড়াইয়ের অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনো লাভ নেই। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করতে হবে। ৩০ লাখ বাঙালির হত্যাকারী, তিন লাখেরও বেশি নারী নির্যাতনকারীকে নির্মূল না করলে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পেতে পারে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়