মোটরসাইকেলে সার্জেন্ট : ভয়ে পালাতে গিয়ে পথচারীকে চাপা দিলেন অটোচালক

আগের সংবাদ

পি কে কাণ্ডে ভারতেও তোলপাড় : তিন দেশের পাসপোর্ট উদ্ধার, তৃণমূল-বাম দায় ঠেলাঠেলি, তদন্তে যুক্ত হতে পারে সিবিআই

পরের সংবাদ

চুলে রঙের ছোঁয়া

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শেফালী সোহেল

যুগের সঙ্গে যেন রীতিমতো এক রকম পাল্লা দিয়ে রোজ বদলায় ফ্যাশন। আসে নিত্যনতুন ধারা। সেই পরিবর্তন কি শুধু জামা-কাপড়ের ক্ষেত্রেই তা কিন্তু নয়? ফ্যাশনের অংশ পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে ওঠে সাজগোজ এবং অনুষঙ্গ। সাজগোজের একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে চুলের সাজ। কোথাও গেলে কী করে চুল সাজাবেন, তা নিয়ে যেন চিন্তার কোনো সীমা থাকে না।
বলা যায়, চেহারায় রাতারাতি পরিবর্তন আনতে পারে চুলের পরিবর্তিত রূপ। নতুন কাটের পাশাপাশি চুলে রং করলেও ব্যক্তিত্বে যোগ হয় আত্মবিশ্বাস।
তাই এ পরিবর্তনের ধারার অংশ হিসেবেই বলা যায়, আজকাল ফ্যাশনের অংশ হয়ে উঠছে রঙিন চুল। কিশোরী, তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী নারী- সবাই বেশ পছন্দ করছেন চুলে রঙের ছোঁয়া।
তবে এ সবই ইতিবাচক প্রভাব আনবে যদি চুল রং করার আগে পরের নিয়ম মানা হয় ঠিকভাবে। নয়তো আসবে বিপরীত ফলাফল।
কুঁচবরণ কন্যার মেঘবরণ কেশ তো চিরকালই সুন্দর। তবে পরিবর্তনই সময়ের নিয়ম। সবকিছুই যখন বদলে পায় নতুন রূপ, চুলে রং ব্যবহার করে বদল আনতে ক্ষতি কী! বেশ অন্যরকম সুন্দর লাগবে দেখতে। এনে দেবে ট্রেন্ডি এবং স্টাইলিশ লুকও। চুলে সাধারণত দুই ধরনের রং করার চল রয়েছে। স্থায়ী এবং অস্থায়ী। এছাড়াও গোলাপি ও লাল জাতীয় রং সবচেয়ে কম টেকসই হয় চুলে। আপনার ত্বকের রং বা স্কিন টোন, পোশাক, চুলের কাট, রং, পেশা, বয়স ইত্যাদির ভিত্তিতে নির্বাচন করুন রং। সাধারণ ব্রাউন, কুল ব্রাউন, বার্গান্ডি, অমব্রে ইত্যাদি রং মানিয়ে যায় আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সবার ত্বকের রঙের সঙ্গে। প্রথমেই চুলে স্থায়ী রং বা পার্মানেন্ট কালার করার ঝুঁকি না নেওয়াই ভালো। হাইলাইট করে দেখতে পারেন। এক্ষেত্রে নীল এবং কমলার বিভিন্ন শেড, গোল্ডেনসহ বিভিন্ন রং আজকাল বেশ চলছে। চুল কালার বা রং করার আগে-পরে মেনে চলতে হবে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন। কারণ চুল রং করার আগে ও পরে ঠিকঠাক যতœ-আত্তি না করলে চুল রুক্ষ ও শুস্ক হয়ে যাওয়া, ফেটে যাওয়া, ঝরে যাওয়াসহ বিভিন্নরকম বিপত্তিতে পড়তে হয়।

রঙিন চুলের যতেœ প্রাকৃতিক উপকরণ : চুলের যতেœ নারিকেল তেলের তো কোনো বিকল্প নেই। ঘরে হেয়ার মাস্ক বানাতে অ্যাভোকাডো, কলা, মধু, ডিম, জলপাই তেল, মেয়নিজ ইত্যাদি জিনিস ব্যবহার করা হয়। একটি পাকা কলা, একচামচ জলপাই তেল ও আধখানা অ্যাভোকাডোর সঙ্গে মিশিয়ে ঘরেই চটজলদি তৈরি করে নিতে পারেন হেয়ার কন্ডিশনিং মাস্ক। আরেকটি মাস্ক তৈরির ঘরোয়া ব্যবস্থায় একটি ডিম ও কিছুটা মেয়নিজ নিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে মিনিট চল্লিশেক চুল কিছু দিয়ে ঢেকে রাখুন। শাওয়ার ক্যাপ ব্যবহার করতে পারলে সবচাইতে ভালো। সবশেষে ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। যদিও কেমিক্যাল ব্যবহার না করাই শ্রেয়, তাও ঘন ঘন চুল শ্যাম্পু না করে ব্যবহার করতে পারেন ড্রাই শ্যাম্পু। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ড্রাই শ্যাম্পু পাওয়া যায়। এতে করে চুলে বারবার পানি লাগানোর ফলে রং ফিকে হয়ে যাবে না। লিভ-ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এতে থাকা সিলিকন আপনার রঙিন চুলকে দেবে সুরক্ষা। এতে চুল প্রচণ্ড তাপ থেকে শুরু করে অনেক ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে।

রং করার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কিছু সতর্কতা : এ তো গেল কালার করার পরে কী কী করতে হবে তার কথা। তবে কালার করার আগে অবশ্যই কিছু ব্যাপার মাথায় তো রাখতেই হবে। বাড়িতে বসে নিজে নিজে চুলে রং করার পন্থাকে অনেকে সহজ মনে করেন। তবে কিছুটা ঝুঁকি তো থেকেই যায়। প্রথমত, যে ব্র্যান্ডের রংই বাছুন না কেন, দেখে নেবেন তা ভালো মানের কিনা। যাদের চুল পাতলা তারা এ বিষয়টির প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবেন। যে কোনো ব্র্যান্ডের রংই চুলে লাগাবেন না। প্যাচ টেস্ট এ ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী। পেছনের দিকের কিছুটা চুল নিয়ে আগে পরীক্ষা করে দেখুন। সব চুলে আগেই রংটা লাগিয়ে না দেওয়াই ভালো। স্কিনটোনের সঙ্গে না মিললে ভীষণ বিপত্তিতে পড়তে হবে। তাই আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো। কালার করার আগে কয়েক দিন নারিকেল তেল ম্যাসাজ করে রাখুন। এতে চুল কালার নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হবে। চুল রং করার পর বারবার শ্যাম্পু করবেন না, তা কালার লক শ্যাম্পু হলেও করা যাবে না। এতে কালার ব্লিডিং হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। খুব ধুলো-ময়লা না লাগলে চুল ধুতে যাবেন না প্রথম কিছুদিন। কারণ, পরে যত দিন যাবে এমনিতেই ধীরে ধীরে রং ফ্যাকাশে হয়ে পড়বে। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে চুলে পানি লাগানোর প্রয়োজন পড়বে না খুব একটা। রং অনেক দিন থাকবে।

কদর আছে যেসব রং : চুলে রং করার ব্যাপারটিতেও দেখা যায়, একেক সময় একেক রং ট্রেন্ডে আছে। এটি খুবই সাধারণ ব্যাপার। তবে কিছু রং, যেমন- ব্রাউন, ডার্ক ব্রাউন, কফি, চকলেট, অমব্রে, বারগেন্ডি ইত্যাদি এ দেশের তরুণীদের কাছে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর একটি বড় কারণ হতে পারে ত্বকের রং বা স্কিন টোন। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ত্বকের রং হচ্ছে ফর্সা এবং গাঢ় রঙের মাঝামাঝি একটি রং। প্রায় সবাই হয় হলদেটে, নয় শ্যামলা বর্ণের অধিকারী। সে ক্ষেত্রে এসব রং দিব্যি চলে যায়। খুব প্রাকৃতিক একটি লুক দেয় এবং দেখতে জবরজং লাগে না। তাই যারা খুব একটা বোল্ড লুক চান না বা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না, তবে কালো চুলের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি চান, তারা এসব রংই বেছে নেন। এ ছাড়া গোলাপি বা এ ধরনের রং চুলে টেকে না, খুব দ্রুত আয়ু এবং জেল্লা হারিয়ে ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে। সিলভার, স্ট্রবেরি হানি, কপার, মাশরুম ব্রাউন, গোল্ডেন ব্লন্ড, জেট ব্ল্যাক, ব্লেন্ডেড রুটস ইত্যাদি রংও এখন শো স্টপার।

প্রাকৃতিক লুক অনেকে চাইলেও অনেকেই আবার চান বোল্ড লুক। এটি তাদের আত্মবিশ্বাস যদি বাড়িয়ে দিতে পারে অনেক গুণ, তবে ক্ষতি কী! অস্থায়ী রং হিসেবে হাইলাইটও করে দেখতে পারেন। কিছুদিন থাকার পর উঠে যাবে। নীল, কমলা, গোলাপি, অ্যাশ ইত্যাদি বিভিন্ন রং সবচেয়ে বেশি ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে।

মডেল : সুরল²ী রাজবংশী
আলোকচিত্রী : রহুল চৌধুরি

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়