ইতিহাসবিদ সুরজিৎ দাশগুপ্তের যুক্তিবাদী ভূমিকা

আগের সংবাদ

সয়াবিন তেলের সংকট ‘কৃত্রিম’ : এখনো বাজারে মিলছে না তেল > সরবরাহকারী-পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা- ত্রিমুখী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ভোক্তা

পরের সংবাদ

রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৯ দফা নির্দেশনা : ঝুঁকি মোকাবিলায় নজরদারিতে চাকরিচ্যুত পুলিশরা

প্রকাশিত: মে ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অপকর্মে জড়িয়ে বিভাগীয় শাস্তির মুখোমুখি হওয়া বা চাকরিচ্যুত হওয়া অনেক পুলিশ সদস্য অপরাধে তৎপর রয়েছেন। চাকরি হারানো অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলসহ নানাবিধ অভিযোগ ওঠে প্রায়ই। রাজধানীতে ছিনতাই ও টানা পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় চাকরি হারানো অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এসব জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অপরাধ দমনে ডিএমপির আটটি অপরাধ বিভাগ, গোয়েন্দা বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগ ও থানা পুলিশকে ১৯টি লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মুহা. শফিকুল ইসলাম। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে।
ডিএমপি সদর দপ্তরের গত ফেব্রুয়ারিতে দেয়া তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরের ৫০ থানা এলাকার ৫৭৫টি জায়গায় প্রায় ৫০০ ছিনতাইকারী সক্রিয় আছে। এরা পথচারী, রিকশাযাত্রী, সিএনজি ও বাসযাত্রীদের টার্গেট করে ছিনতাই করে। গত মাসে ডিএমপি ও র‌্যাব একাধিক অভিযানে অন্তত তিন শতাধিক ছিনতাইকারী, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
রমনা, মতিঝিল ও গুলশান জোনের দুজন কর্মকর্তা জানান, অপরাধ পর্যালোচনা করে নিরসনে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়ে থাকে। সবকিছু বিশ্লেষণ করে পরিত্রাণের পথ খোঁজা হয়। এতে অনেক অপরাধে চাকুরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সে তাদের দিকে বাড়তি নজরদারির নির্দেশনা এসেছে।
জানা গেছে, গত রোজায় ডিএমপি কমিশনারের দেয়া নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে, বাসের যাত্রীরা যাতে তাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোন বাসের জানালার দিকে নিয়ে কথা না বলেন সে বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা চালক ও হেলপারদের নিয়মিত ব্রিফিং করবেন। বাসের গায়ে স্টিকার লাগিয়েও যাত্রীদের সচেতন করবেন। একইভাবে রিকশা আরোহীরা যাতে মোবাইল ফোন ডান কানে ব্যবহার করেন ও ব্যাগ ডান পাশে রাখেন এ ব্যাপারে তাদের সচেতন করতে হবে। বিগত ৩-৪ বছরের ছিনতাইয়ের স্পটগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। খতিয়ান থেকে মামলার সংখ্যা বের করতে হবে। চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদের নজরদারিতে আনা যেতে পারে। ঢাকা মহানগরীর চেক পোস্টগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি মামলার আসামিদের এনআইডি, পাসপোর্ট নং চার্জশিটে উল্লেখ করতে হবে। সিআইএমএসে র‌্যান্ডম

ভিত্তিতে নির্দিষ্ট বাড়ির ভাড়াটিয়া সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করবে। তাৎক্ষণিকভাবে নাম-ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি দক্ষিণ) এবং সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট ডিএমপি ব্যবস্থা নেবেন। আইনগত সহায়তার বিষয়ে বাদীদের প্রত্যাশা জানতে হবে। ইন্টারনাল ওভারসাইট শাখা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। পুলিশ লাইন্স, পিওএমে অবস্থানকারী পুলিশ সদস্যরা যাতে অবৈধ কাজে না জড়িয়ে পড়েন সেজন্য রোলকলে তাদের সচেতন করতে হবে। তাদের সরকারি চাকরির সুবিধাগুলো উল্লেখপূর্বক সচেতন করতে হবে। বেআইনি কাজে জড়ালে পরিণতির বিষয়েও সাবধান করতে হবে।
এছাড়া যেসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সাবধানতার জন্য সেগুলো প্রচার করা যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডিউটিরত অফিসারদের ট্যাকটিক্যাল বেল্ট, বডি ওর্ন ক্যামেরা, শর্ট আর্ম ব্যবহার করতে হবে।
মোটরসাইকেল চোরের তালিকা প্রস্তুত করতে কাজ করবে গোয়েন্দা বিভাগ। মালিকবিহীন উদ্ধারকৃত হারানো মোটরসাইকেলের সব তথ্য সিডিএমএসে আগামী অপরাধ পর্যালোচনা সভার আগেই নিবন্ধন করতে হবে। রমনা-গুলশান বিভাগ দুই বছরের বেশি সময় মামলা মুলতুবি থাকার কারণ লিখিতভাবে জানাবেন। ছিনতাইকারী ও টানা পার্টির তালিকা তৈরি করে স্পেশাল টিমের মাধ্যমে থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ তাদের গ্রেপ্তার করবে। থানার টহল পার্টি প্রতিটি মহল্লার সিকিউরিটি গার্ডদের সার্বক্ষণিক তদারকি করবে। তাদের থানার ফোন নম্বর দিতে হবে এবং সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। স্বর্ণের দোকানে নিযুক্ত সিকিউরিটি গার্ডদের নাম, ঠিকানা ও এনআইডি যাচাই করতে হবে। যানজট নিরসনে পার্শ্ববর্তী জেলার সঙ্গে সমন্বয় ও প্রয়োজনে তাদের সীমানায় গিয়ে কাজ করতে হবে। মাদকসেবীদের ডোপ টেস্ট করে মামলা দিতে হবে। মোবাইল ছিনতাই প্রতিরোধে কীভাবে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে মোবাইল ফোন বিক্রি করে গোয়েন্দা বিভাগ তা উদ্ঘাটন করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়