বাইরের হাসপাতালও প্রস্তুত : রাজধানীর ৫ স্পটে কলেরার টিকা আগামী মাসে

আগের সংবাদ

ডায়রিয়া পরিস্থিতি এখনো নাজুক : ধীরে কমছে রোগী > ৩ প্রতিষ্ঠানের ঠেলাঠেলি > পরিস্থিতি মোকাবিলায় টিকা দেয়ার উদ্যোগ

পরের সংবাদ

নতুন বছরে নতুন স্বপ্নে বিভোর

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পহেলা বৈশাখ আমাদের সব সংকীর্ণতা, কূপমণ্ডূকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভেতরের সব ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়। অন্যদিকে পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রæটি ও ব্যর্থতার গøানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ। এবারের পহেলা বৈশাখে দুই বছর পর বর্ণিল উৎসবে মেতেছিল দেশ। সব বাঙালি বরণ করে নিয়েছে ‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৯’। নতুন বাংলা বছরে সংস্কৃতি অঙ্গনের কয়েকজন তারকা জানালেন তাদের প্রত্যাশার কথা। শুনলেন রোমান রায়

নতুন বছরে আমরা সুন্দর জীবনযাপন করতে চাই
রামেন্দু মজুমদার

গত দুই বছর আমরা এক প্রকার অবরুদ্ধ ছিলাম। নতুন বছরের স্বাদ পাইনি। অতিমারির সময় কাটিয়ে এই প্রথমবার নববর্ষ উদযাপন করতে পারছি। সবাই মিলে বাইরে গিয়ে উৎসব পালন করতে পারছি। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে নববর্ষ আমাদের বাঙালিদের সবচেয়ে বড় অসা¤প্রদায়িক উৎসব। এখানে আমরা আত্মপরিচয় নিয়ে গর্ব করি, অন্যদিকে আমাদের আবহমান কালের সংস্কৃতি সেটাকে উদযাপন করি। নববর্ষ আমাদের কাছে আনন্দের। আমাদের শহর-গ্রামগঞ্জে সবাই আনন্দে মেতে উঠে। আমরা অবশ্যই চাইব গত দুই বছরের স্মৃতিকে ভুলে যেতে। যে কষ্ট সবাই মিলে করেছে সেটা যেন আর করতে না হয়। একদিকে এই অতিমারি মুছে যাক। অন্যদিকে সমাজের রাষ্ট্রের যে কালো দিক আছে সেগুলো যেন আর প্রত্যক্ষ না করি। নতুন বছরে আমরা সুন্দর একটা জীবনযাপন করতে চাই। তবুও আশঙ্কায় আছি গত কয়েক দিনের মধ্যে সা¤প্রদায়িক কিছু ঘটনা ঘটেছে। ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির কোনো বিরোধ নেই। যে যার ধর্ম পালন করবে তার কোনো বিরোধ নেই এটা স্পষ্ট করে বুঝতে হবে। আমাদের যেটুকু সময় আছে সেটুকু যেন অর্থবহ কাজে লাগাতে পারি এটাই কামনা করি। সুস্থ থেকে কাজ করতে পারি।

সবার মাঝে স¤প্রীতি ফিরে আসুক এটাই আমার চাওয়া
আফসানা মিমি

বাংলাদেশের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে মনে করি নতুন বছরটিতে যেন আমাদের স¤প্রীতি ফিরে পাই। পহেলা বৈশাখ দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব। সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় সর্বজনীন উৎসব। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে যেন আমরা আমাদের সে স¤প্রীতি ফিরে পাই। বাংলাদেশ সব মানুষের সব ধর্মের দেশ। সবার মাঝে সে স¤প্রীতি ফিরে আসুক এটাই আমার চাওয়া। নতুন বছরে আমার দুটি সিনেমা মুক্তি পাবে। মে মাসে মুক্তি পাবে ‘পাপ-পুণ্য’, আরেকটি হচ্ছে ‘পাতালঘর’। নতুন বছরে আরেকটি সিনেমায় কাজ করব। কথাবার্তা চলছে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে তখন জানাতে পারব। আমি যেহেতু শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে কাজ করছি একাডেমির কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকব।

সবাই একসঙ্গে কাজ করে মিডিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে
তানিয়া আহমেদ

নতুন বছরে তো অনেক চাওয়া-পাওয়া থাকে। আমাদের মিডিয়া এখন যেদিকে যাচ্ছে সবাই যে সুখকর জায়গায় আছে তা কিন্তু নয়। আমি সব শিল্পীর কথা বলছি না। অনেকেই সুখকর অবস্থায় নেই। আমাদের এই পুরো মিডিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সব শিল্পী পরিচালক একসঙ্গে থেকে সেটা সম্ভব। আমার কাছে মনে হয় আরেকটু গোছানো দরকার। যারা স্টার তারা ভালো অবস্থানে আছেন। আজকে এই অবস্থানে আসতে আমাদের অনেক লড়াই করতে হয়েছে। শিল্পীরা শুধুমাত্র একার চিন্তা না করে পুরো মিডিয়ার চিন্তা করতে হবে। নিজের পাশাপাশি পরিবারের মতো সবার কথাও ভাবতে হবে। এভাবেই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের মিডিয়াকে। নতুন বছরে আমার এটাই চাওয়া থাকবে। আমি স্টার মানেই যে সবকিছুর অধিকারী তা কিন্তু নয়। আমি তাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি জানি তারা ব্যস্ত থাকেন, তবুও তাদেরকে কিছু জিনিস মেইনটেইন করতে হবে। দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ভালোর দিক বেশি, মন্দের অল্প আছে। প্রত্যেকটা মানুষেরই দেশের প্রতি আলাদা দায়িত্ব আছে। সবাই যদি আমরা নিজেদের দায়িত্বগুলো পালন করি, তাহলে আরো সহজ হয় উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া। অন্যকে দোষারোপ না করে সচেতন হওয়া দরকার।

সব সময় চেষ্টা করি নতুন উদ্যমে নতুন কিছু করতে
ফেরদৌস

নতুন বছরে সব সময় চেষ্টা করি নতুন উদ্যমে নতুন আশায় নতুন কিছু করতে। এবারও তেমন প্রত্যাশা করছি। করোনার দুই বছর পর আমরা নতুন বছরে পা দিচ্ছি। গত দুই বছর আমাদের সবার নানান চড়াই-উৎরাই পেরিয়েছে। সে হিসেবে তো আমাদের বিনোদন জগতে আরো খারাপ অবস্থা ছিল। আমার বেশ কিছু কাজ জমে আছে চেষ্টা করব শেষ করার। অনেক সিনেমা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়ে আছে। এমনিতে আমি একটু কম কাজ করি। নতুন বছরে আরো সিলেক্টিভ হওয়া। একেবারে গৎবাঁধা কাজ করা পছন্দ করি না। যে কাজগুলো স্মরণীয় হয়ে থাকবে, দেশের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি হয়। আমাদের প্রোডাকশন থেকেও একটা নতুন কাজ করার পরিকল্পনা চলছে। আমার ধারণা চলচ্চিত্র নতুন বছরে একটু ঘুরে দাঁড়াবে। দর্শকের কাছে চলচ্চিত্রের আবেদন কখনোই ফুরিয়ে যাবে না। নতুন নতুন প্ল্যাটফর্ম আসছে। আমার ধারণা নতুন বছরে এই মাধ্যমে আরো ভালো ভালো কাজ আসবে। হলের সংখ্যা না বাড়া পর্যন্ত সিনেমার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব না। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক পরিকল্পনা করেছেন। ৬৪টি জেলায় ৬৪টি সিনেপ্লেক্সে বানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। বিনা সুদে হল মালিকদের টাকা দিচ্ছেন। হল মালিকরা এক সময় সিনেমা দিয়ে ব্যবসা করেছেন তাদেরকে আবার এই ব্যবসায় ফিরে আসতে হবে। গত দুইটা বছর অনেক অঙ্গন স্থবির হয়ে গেছে। হিসেবে আমাদের সবাইকে আরেকটু সহনশীল মনোভাবের হতে হবে। পাশের জনকে সাহায্য করার মনমানসিকতা থাকতে হবে। শুধু আমি একা ভালো থাকলাম বাকিরা কষ্টে আছে এটাতো ভালো নয়। আমাদের সরকার দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন। শুধু দোষত্রæটি না ধরে আমাদেরও সাহায্য করতে হবে। দেশের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পর্যন্ত অনেক কাজ হচ্ছে।

এ রকম মহামারি যেন আমাদের জীবনে আর না আসে
অপু বিশ্বাস

বিগত দুই বছর পর আমরা সুন্দর একটি পৃথিবী দেখতে পেয়েছি। আমি প্রার্থনা করব এরকম মহামারি যেন আমাদের জীবনে আর না আসে। সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি আমাদের চলচ্চিত্রে একটা সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এবারের ঈদে বেশকিছু সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। আগামী কুরবানি ঈদে আমার অভিনীত একটি সিনেমা মুক্তি পাবে। আমরা সেভাবে তেমন কোনো উৎসব পাই না। যে উৎসব পাই পহেলা বৈশাখ তার মধ্যে একটি। তাই পহেলা বৈশাখে আমরা নিজেদের একটু রাঙিয়ে রাখতে চাই। সাজগোজ, পান্তা-ইলিশ এগুলো থাকবেই। এবার রোজার সময়ে পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়েছে। সেভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা না গেলেও। রোজার মধ্যে যতটুকু সম্ভব সবাই সেভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছে। বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবীর মানুষের জন্য নতুন বাংলা বছরের শুভকামনা রইল। সঙ্গে আমাদের দর্শক ভক্তদের জন্য আমার তরফ থেকে শুভকামনা রইল। সবাই সুস্থ সুন্দর ভালো থেকে নতুন বছর জীবনটা রঙিন করে সামনে এগিয়ে যাক এই কামনা করি। আমরা দেখছি শ্রীলঙ্কায় যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে। সে হিসেবে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে আগলে রেখেছেন। আমি বলব তিনি শুধু প্রধানমন্ত্রী না, তিনি আমাদের মমতাময়ী মা। আমি তার জন্য প্রার্থনা করি তিনি অনেক বছর বেঁচে থাকেন। বাংলাদেশের মতো একটি দেশকে তিনি অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমার প্রত্যাশা বরাবরই চলচ্চিত্র নিয়ে। যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, দর্শকরা সাপোর্ট দিচ্ছেন- এটাই চাওয়া থাকবে। আগামীতে আরো ভালো ভালো কাজ করতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়