সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন : প্রথমদিনে ভোট পড়েছে ২৮২৬

আগের সংবাদ

যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় গতি! পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলায় ‘ক্ষিপ্ত’ ক্রেমলিন > কিয়েভে হামলার তীব্রতা বেড়েছে

পরের সংবাদ

ফের স্থগিত খালেদার সাজা

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো ৬ মাস বাড়িয়েছে সরকার। খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার দুপুরে আইন মন্ত্রণালয় তা মঞ্জুর করে। এবারো তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়। এ নিয়ে চার বছরের বেশি সময় ধরে (আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) তিনি কারাগারের বাইরে থাকবেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ প্রথমে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাজা স্থগিতের মেয়াদ এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বাড়ল। খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম আবেদন করার কথা নিশ্চিত করে বলেছেন, আমরা আমাদের চেষ্টা করছি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল বিকালে বলেন, তার সাজা স্থগিতের বিষয়ে মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। এর আগে দুপুরে মন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আজই (বুধবার) মতামত দেবে আইন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবার একটা দরখাস্ত করেছেন সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর। আমার মতামত পাঠিয়ে দেব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তিনি বলেন, এটা আর প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে না। কারণ আগেরবার যেটা দিয়েছিলাম সেটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যায়নি। এটাও প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে না। মন্ত্রী বলেন, জামিন দেন আদালত। দুই-আড়াই বছর আগে তার পারিবারিকভাবে একটা দরখাস্ত করা হয়, সেটায় কোনো আইনের উল্লেখ ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতার কারণে এটা আইনের মাধ্যমে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী তার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেয়া হয়। আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের অল্প সময় আগে ওই আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভা শেষে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের একটা পত্র আমরা পেয়েছি। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠিয়েছি। আইন মন্ত্রণালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে যে পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হবে, সেখানে পাঠাব আমরা।
প্রসঙ্গত, ৬ মাস করে চারবার খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৪ মার্চ চলতি মেয়াদ শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন ৬ মাসের জন্য মুক্তি পান। সে সময় দুটি শর্তের কথা বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এগুলো হলো- খালেদাকে বাসায় চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। গত বছরের এপ্রিলে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম শর্তটি আর কার্যকর থাকেনি। গত বছরের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বিএনপি নেত্রীকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি

সরকার। বিএনপি নেত্রী ওই বছরের ২৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো ভর্তি হন হাসপাতালটিতে। থাকেন ৫৩ দিন। বাসায় ফেরেন ১৯ জুন। দ্বিতীয় দফায় একই বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ২৬ দিন হাসপাতালে থাকার পর কেবল ৭ দিন তিনি ফিরোজায় কাটিয়েছেন। তৃতীয় দফা হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি এভারকেয়ার থেকে বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া। তৃতীয় দফায় বিএনপি নেত্রী হাসপাতালটিতে ভর্তি হন গত ১৩ নভেম্বর। ভর্তি হওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের নেত্রী জীবন সংশয়ে আছেন। তার লিভার সিরোসিস হয়েছে- এমন তথ্য জানিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা দাবি করেন, দেশে এর চিকিৎসা নেই। বিদেশে পাঠাতে দেরি হলে যে কোনো কিছু হয়ে যেতে পারে খালেদা জিয়ার।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া খালেদা জিয়ার দণ্ড পরে আপিলে দ্বিগুণ হয়। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়। উচ্চ আদালতে জামিন করাতে ব্যর্থ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন নিয়ে যান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়