আইনমন্ত্রী : মানবপাচার রোধে সবার প্রচেষ্টা প্রয়োজন

আগের সংবাদ

বৈশ্বিক চাপ এড়ানোর কৌশল! রোহিঙ্গাফেরাতে নেপিদোর নাটকীয় চিঠি > আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন, ঢাকার অসন্তোষ

পরের সংবাদ

নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার হুংকার রাশিয়ার : মার্কিন নাগরিকদের অনতিবিলম্বে কিয়েভ ছাড়ার নির্দেশ বাইডেনের

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ক্রেমলিন জানিয়ে দিল, ইউক্রেনের বড় শহরগুলোর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে রুশ বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নই তাদের ঠেলে দিচ্ছে এই কাজে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, আমাদের সেনারা বেসামরিক প্রাণহানি এড়িয়ে থাকার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবে। কিন্তু এ ধরনের যে কোনো নগরযুদ্ধে বেসামরিক প্রাণহানি যে অনিবার্য, সে কথাটিও মনে করিয়ে দেন তিনি। পেসকভ বলেন, শান্তিকামী নাগরিকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেষ্টা করবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে যে কোনো প্রকারেই হোক, বড় শহরগুলো নিজেদের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে আমাদের বাহিনী।
কিয়েভ ছাড়–ন, মার্কিন নাগরিকদের বাইডেন : ইউক্রেনে থাকা মার্কিন নাগরিকদের কালবিলম্ব না করে সে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ওয়াশিংটন। কিয়েভে মার্কিন দূতাবাস থেকে গতকাল সোমবার দুপুরে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে নাগরিকদের সতর্ক করে নিরাপদ ভ্রমণ ও ভ্রমণপথের ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জনবহুল সড়ক, রাশিয়ার আচমকা হামলার মুখোমুখি হওয়া এবং সড়ক ও সেতুর মতো অবকাঠামোগুলো ধ্বংসের ঝুঁকিতে থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।
যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আরেক দফা বৈঠক : এদিকে কয়েক সপ্তাহব্যাপী চলমান যুদ্ধ বন্ধে গতকাল ফের আলোচনায় মিলিত হয় দুই দেশের প্রতিনিধিরা, তবে বৈঠকটি মুখোমুখি নয়, ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। ইউক্রেন প্রতিনিধি বৈঠকের অগ্রগতিতে সন্তোষ জানিয়ে বলেন, আমরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দিচ্ছি। একইসঙ্গে রুশ সেনার প্রত্যাবর্তন ও নাগরিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছি। তবে ভিডিও যোগাযোগ মাধ্যমে এই আলোচনা যখন চলছে, ঠিক একই সময়ে দেশটির রাজধানী কিয়েভে একটি বেসামরিক আবাসন এবং একটি বিমান তৈরির কারখানায় গোলাবর্ষণ চালিয়ে গেছে রুশ

বাহিনী।
এদিকে ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ডের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, রবিবার সামরিক ঘাঁটিতে পুতিনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার উদ্দেশ্য ছিল ন্যাটোকে উসকে দিয়ে যুদ্ধে নামানো। অন্যদিকে চীন বলেছে, বেইজিংয়ের কাছে মস্কো সাহায্য চেয়েছে, এ মর্মে মার্কিন কর্মকর্তা যে তথ্য দিয়েছেন, তা ‘বিভ্রান্তিকর’। এছাড়া ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দরগুলোর দখল নিয়ে ইউক্রেনকে সমুদ্রবাণিজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে রাশিয়া।
যুদ্ধের মাঠে কম দামে রুশ তেল কিনছে ভারত : এদিকে রয়টার্স সূত্র জানায়, অবরোধের চাপে থাকা রাশিয়ার কাছ থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে জ¦ালানি এবং অন্যান্য পণ্যসামগ্রী কেনার একটি প্রস্তাব গভীরভাবে বিবেচনা করছে ভারত। চলমান যুদ্ধে পশ্চিমা অবরোধের কারণে কিছুটা বেকায়দায় রয়েছে মস্কো। তাদের বেশ কয়েকটি শীর্ষ ব্যাংক বৈশ্বিক লেনদেনের নেটওয়ার্ক ‘সুইফট’ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাধ্য হয়েই ভারতসহ বিকল্প অন্যান্য বাজারে হ্রাসকৃত মূল্যে পণ্য বেচার উদ্যোগে নেমেছে মস্কো। অন্যদিকে, নিজের চাহিদা মেটাতে ভারত তার আমদানিকৃত তেলের ৮০ শতাংশই আমদানি করে বিভিন্ন উৎস থেকে- যার মধ্যে রাশিয়া থেকে কেনে মাত্র ২-৩ শতাংশ। কিন্তু এ মুহূর্তে বিশ্ববাজারে জ¦ালানির দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা অবরোধের জাল এড়িয়ে রুশ তেল কেনার প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে দেশটি।
যুদ্ধের জেরে কোভিড ছড়াবে, হুর উদ্বেগ: রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে আরো খারাপ হতে পারে কোভিড পরিস্থিতি, এই সতর্কবার্তা জারি করল হু। গত ১৯ দিনের যুদ্ধে ২৫ লাখের বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। হু-র আশঙ্কা তাদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে ইউক্রেন তো বটেই, প্রতিবেশী দেশগুলোকেও সতর্ক করা হয়েছে। রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন ইউক্রেনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হাসপাতালগুলোর ক্ষতি না করে। হু-র স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি বিভাগের পরিচালক মাইক রায়ানও বলেন, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে কোভিড টিকা দেয়ার প্রক্রিয়া থমকে গেছে। কোভিড পরীক্ষাও বন্ধ হয়ে গেছে। এটাই সবচেয়ে উদ্বেগের কারণ। শরণার্থীরাও অজান্তেই ভাইরাস বহন করে আনতে পারেন নিজেদের সঙ্গে। এজন্য হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়ার মতো দেশগুলো শরণার্থীদের বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা এবং টিকাকরণের ব্যবস্থা করছে হু। এছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের জনতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে রুশ ফৌজের উদ্দেশে এক বিবৃতিতে হু জানায়, তারা যেন ইউক্রেনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হাসপাতালগুলোর ক্ষতি না করে। সেখানে যেন বোমাবর্ষণ না করে। সীমা পার হওয়ার সময় যেন নারী এবং শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়