কাগজ প্রতিবেদক : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যার মাধ্যমে এ সরকারের দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাই ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
সম্প্রতি এ কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের টেলিফোন কনভারসেশন (কথোপকথন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের ফোনালাপে সরকারের দুর্নীতির একটি প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, আলোচ্য টেলিফোন আলাপে সংশ্লিষ্ট দুই নেতাকে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে শোনা গেছে। সেখানে বলতে শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি প্রজেক্ট ইনফো নিয়ে জানতে চেয়েছেন সালমান এফ রহমান। জবাবে তা পাস করে দিয়েছেন বলে জানান আইনমন্ত্রী।
বিষয়টি টেন্ডারে হবে কিনা তাও জানতে চান উপদেষ্টা। তার মতে, এটা জয়ের প্রজেক্ট। এটা টেন্ডার ছাড়াই হতে পারে বলে তিনি সুপারিশ করেন। এ সময় মন্ত্রী উপদেষ্টাকে বাসায় আসার কথা বললে উপদেষ্টা জানতে চান ওটা পেয়েছেন কিনা। জবাবে মন্ত্রী পেয়েছেন বলে জানান। এ সময় উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের একটি রিট পিটিশন কোন আদালতে হবে, কোন বিচারপতি শুনানি করবেন তাও মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে শোনা যায়। বিচারপতিদের নামও উল্লেখ করা হয়। সর্বশেষে ওয়াসার একটি প্রকল্প নিয়ে তারা কথা বলেন।
তিনি বলেন, যদিও নিজের কথাবার্তাকে ধামাচাপা দিতে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই বলে দাবি করে বলেছেন, একটি ‘ইনোসেন্ট কনভারসেশন’কে ভিন্ন খাতে নেয়ার ষড়যন্ত্র করে একটি দেউলিয়া গোষ্ঠী ফোনালাপটি ফাঁস করেছে।
লক্ষণীয়, তিনি ফোনালাপের কোনো বিষয়বস্তু অস্বীকার করেননি। বরং ইনোসেন্ট কনভারসেশনের মোড়কে তা স্বীকার করেছেন। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল দাবি করেছেন, ফোনালাপ রেকর্ড করার ব্যবস্থা নাকি নেই সরকারের কাছে।
তিনি জানান, এটা তদন্ত করা হবে। এখন প্রশ্ন, তাহলে ফোনালাপ ফাঁস করার জন্য আইনমন্ত্রী যে মহলের দিকে আঙুল তুলেছেন তারা কারা?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যেই বিএনপিসহ দেশবাসী এ ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। কিন্তু সরকার এখনো নির্বাক ও নির্বিকার। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি আবারো দাবি করছে দুর্নীতি নিয়ে সরকারের দুই ক্ষমতাধরের ফোনালাপ অস্বীকার না করে আইনমন্ত্রী তা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই এ ঘটনা কালবিলম্ব না করে অবশ্যই তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে।
দুর্নীতির সঙ্গে বিচার বিভাগকে জড়িয়ে ফেলার স্বীকৃত অপরাধকে আলাদাভাবে বিবেচনায় নেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার জন্য বিএনপি এই মুহূর্তে আইনমন্ত্রী, বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টাসহ এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার পদত্যাগ দাবি করছে।
অবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারে মুখোমুখি দাঁড় করানোর জোর দাবি জানাচ্ছে বিএনপি।