১৬ জেলায় বৃষ্টিপাত, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা

আগের সংবাদ

চূড়ান্ত হলো ১০ জনের নাম : রাষ্ট্রপতির কাছে তালিকা যাবে কাল > নতুন ইসির শপথ রবিবার!

পরের সংবাদ

নতুন ইসি আগামী সপ্তাহে : কাল প্রজ্ঞাপন, বরণে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এন রায় রাজা : নতুন ইসি গঠনে প্রজ্ঞাপন কাল বুধবার জারি হতে পারে এবং রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত সিইসি ও অন্য চার কমিশনার আগামী রবিবারের মধ্যে শপথ নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে পারেন। বঙ্গভবনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। সুপ্রিম কোটের্র প্রধান বিচারপতি তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। এদিকে নতুন ইসিকে বরণ করে নিতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।
গত সোমবার সার্চ কমিটি ইসি গঠনে প্রস্তাবিত তালিকা আরো কাটছাঁট করে ১২ জনে নামিয়ে আনে। আজ মঙ্গলবার সার্চ কমিটি আবার বৈঠকে বসে ১০ জনের তালিকা চূড়ান্ত করবে বলে জানান সার্চ কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার সার্চ কমিটি ১০ জনের তালিকা চূড়ান্ত করবে এবং সম্ভব হলে ওইদিনই তারা এটি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করবে। তবে সার্চ কমিটি সূত্র জানিয়েছে, যেহেতু বৈঠকটি আজ মঙ্গলবার বিকালে হবে, সে কারণে ১০ জনকে বাছাই করতে বেশি সময় লেগে গেলে এবং আজ রাতে তালিকা পাঠানো সম্ভব না হলে কাল বুধবার সকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে তারা ওই ১০ জনের নাম সুপারিশ করবেন। সেক্ষত্রে কমিটি গিয়ে এ তালিকা পেশ করতে পারেন বা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ দায়িত্ব পালন করবে।
বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, সার্চ কমিটি প্রস্তাবিত ১০ জনের তালিকা পাওয়ার পর কোনো সময়ক্ষেপণ না করে সেটি রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় আলোচনা-পর্যালোচনা করে তার মধ্য থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য চারজনকে কমিশনার নিয়োগ দিয়ে ওইদিনই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারেন। তবে তার আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শও নিতে পারবেন। কেননা, সংবিধানের ৪৮ এর ৩ ধারায় বলা আছে- ‘সংবিধানের ৫৬(৩) দফা মতে রাষ্ট্রপতি শুধু প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ এর (১) দফা মতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তার অন্য সব দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন- তবে শর্ত থাকে, সে ক্ষেত্রে কোনো আদালত সেই সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের তদন্ত করিতে পারিবেন না’। সুতরাং ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করবেন তা বলাই বাহুল্য।
আগামীকাল বুধবার যদি সিইসি ও অন্য চার নির্বাচন কমিশনারের তালিকা সংবলিত প্রজ্ঞাপন জারি হয় তাহলে পরের দিন বৃহস্পতিবার নতুন ইসি শপথ নেবে। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নতুন ইসির শপথগ্রহণ আগামী সপ্তাহের শুরুতে অর্থাৎ রবিবার অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। আর শপথ নেয়ার পরে নতুন সিইসি ও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ওইদিন নির্বাচন ভবনে গিয়ে তাদের দায়িত্বভাব গ্রহণ করবেন। এমন আভাসই মিলেছে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের কথায়।
এদিকে নতুন ইসিকে বরণ করে নেয়ার সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, তারা নতুন সিইসি ও অন্য কমিশনারদের বসার কক্ষ, সভাস্থলসহ সবকিছু ঝাড়পোছের

কাজ শেষ করে ফেলেছেন। এমনকি কক্ষগুলো রং করা থেকে শুরু করে ফার্নিচার পরিবর্তনসহ সব কাজ সম্পন্ন করে ইসি সচিবালয় এখন পুরোপুরি প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত গত ২৭ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে ইসি গঠনে আইন পাস হয়। পরে ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই আইন অনুযায়ী সিইসি ও অন্য চার কমিশনার নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।
জানা গেছে, দেশের ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো সিইসি ও কমিশনারবিহীন সময় পার করছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে বিচারপতি মো. আবদুর রউফ নেতৃত্বাধীন কমিশন ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। এরপর বিচারপতি এ কে এম সাদেক নেতৃত্বাধীন কমিশন ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল থেকে ১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। মাঝে ৯ দিন সিইসিশূন্য ছিল ইসি। মোহাম্মদ আবু হেনার নেতৃত্বাধীন কমিশন ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল থেকে ২০০০ সালের ৮ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে দুদিন সিইসিশূন্য ছিল কমিশন। এম এ সাইদ নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০০ সালের ২৩ মে থেকে ২০০৫ সালের ২২ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। তাদের দায়িত্ব গ্রহণের আগে ১৫ দিন সিইসিশূন্য ছিল ইসি। এরপর বিচারপতি এম এ আজিজ কমিশন দায়িত্ব পালন করে ২০০৫ সালের ২৩ মে থেকে ২০০৭-এর ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ২০০৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেয় এ টি এম শামসুল হুদা কমিশন। দায়িত্ব নেবার আগে ১৩ দিন কমিশনে কোনো সিইসি ছিলেন না। ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শামসুল হুদা কমিশন বিদায় নেয়। একই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ নেতৃত্বাধীন কমিশন। তবে পরে শপথ নেয়ায় নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেয় কে এম নূরুল হুদা কমিশন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এই কমিশন বিদায় নেয়।
নির্বাচন কমিশন সিইসি ও কমিশনার শূন্য হওয়ায় কোনো সংকট দেখা দেবে না বলে এরই মধ্যে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, সংবিধানে, আইনে এ রকম শূন্যতার কথা, শূন্য থাকতে পারবে না- এমন কোনো কথা নেই। তবে এ সময়ে প্রশাসনিক কাজ ইসি সচিবালয়ই চালিয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়