ভালোবাসা এখন ‘ভার্চুয়াল’, আবেগেও পড়েছে টান : তবুও বসন্ত জেগেছে বনে

আগের সংবাদ

সংস্কৃতির চর্চা জোরদারের তাগিদ > বাঙালির প্রাণের মেলার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী : হাতে নিয়ে বই পড়ার আনন্দ অনেক

পরের সংবাদ

রাজাকার মুক্ত সংসদ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও সফলতা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ ধর্মনিরপেক্ষ অসা¤প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের কাজে হাত দেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বাংলাদেশের চাকা আবার পিছনের দিকে ঘোরা শুরু করে। তখন রাষ্ট্র ও সমাজে মানবতাবিরোধীদের পুনর্বাসনের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি ধারা চালু হয়। এই পাকিস্তানি ধারা চালুর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান, সমাজ ও রাষ্ট্রে সামরিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। মানুষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলা বা প্রচার করার সাহস হারিয়ে ফেলে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের সূত্রপাত
মানবতাবিরোধীদের পুনর্বাসনের ধারা অব্যাহত থাকে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সামরিক শাসক এরশাদের পতন ঘটে। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে। এই নির্বাচনে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামী ১৮টি আসন পায়। বিএনপি জামায়াতের সহায়তায় সরকার গঠন করে। এই সুযোগে বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাসরত পাকিস্তানি নাগরিক শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সুশীল সমাজ তা মেনে নিতে পারেননি। এর প্রতিবাদে শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে আহ্বায়ক করে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করা হয় যা আজ ২৭ বছরে পদার্পণ করেছে। এর কিছুদিন পর ১১ ফেব্রুয়ারি ৭২টি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠন করা হয় জাতীয় সমন্বয় কমিটি। সমন্বয় কমিটি ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ প্রকাশ্য গণআদালতে গোলাম আযমের প্রতীকী বিচারে মৃত্যদণ্ডের রায় ঘোষণা করে সরকারকে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানায়। কিন্তু তৎকালীন বিএনপি সরকার দণ্ড বাস্তবায়নে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। উপরন্তু নির্মূল কমিটির ২৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দিয়েছে।
এরপর সমন্বয় কমিটি শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের অপরাধ অনুসন্ধানের জন্য গণতদন্ত কমিশন গঠন করে। এই কমিশন ১৬ জন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর অপরাধ জনসম্মুখে প্রকাশ করে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির জামায়াত তোষণ নীতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার করে। তখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন শহীদ জননী মৃত্যুবরণ করার পর সমন্বয় কমিটির কাজ স্থবির হয়ে পড়ে। নতুন করে তরুণ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্মূল কমিটি পুনর্গঠন করে এর হাল ধরেন শাহরিয়ার কবির ও কাজী মুকুল। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশের জন্য মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগার প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। এই পাঠাগারের মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বিস্তার ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের অপকর্ম তুলে ধরা।
১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঠাগারের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কমিটিগুলো স্থানীয় নির্মূল কমিটি এবং অন্যান্য সমমনা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহায়তায় জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের সহযোগী সা¤প্রদায়িক ও মৌলবাদী প্রার্থীদের ভোট না দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রার্থীদের ভোটদানের জন্য ব্যাপক প্রচারাভিযান চালায়। ট্রাস্ট ও পাঠাগার কমিটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের নির্বাচন পর্যন্ত এইসব এলাকায় জনসভা, জনসংযোগ ও প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণ করেন। এ কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পাঠাগার কমিটির নেতৃবৃন্দ জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী ও অপরাপর মৌলবাদী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের এলাকায় ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেড় লাখ পোস্টার এবং চার লাখ লিফলেট ও পুস্তিকা বিতরণ করা হয়েছে। প্রধান প্রধান যুদ্ধাপরাধীরা যাতে জয়ী হয়ে সংসদে আসতে না পারে সেজন্য তাদের অতীত দুষ্কর্মের বিবরণ তুলে ধরে প্রত্যেকের নামে আলাদা লিফলেট প্রকাশ করে এলাকায় বিলি করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী যে ইসলাম প্রচার করে তা যে প্রকৃত ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত একটি ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক মতবাদ এবং তারা যে আদর্শগতভাবে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদ সমর্থন করে- এসব কথা জামায়াতীদের বিভিন্ন পুস্তিকা থেকে সংগ্রহ করে পোস্টার, লিফলেট ও পুস্তিকার মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এর ফলে দেখা যায় যে, জামায়াতে ইসলামীর ভোট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে এবং তারা মাত্র ৩টি আসনে জয়লাভ করে। এর পাশাপাশি নির্মূল কমিটি সংখ্যালঘু ধর্মীয় স¤প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়ায়। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সংখ্যালঘু ধর্মীয় স¤প্রদায়ের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার স্বরূপ, কারণ ও করণীয় সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র ৮০ পৃষ্ঠার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। এর মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের চিত্র সারাদেশের সামনে তুলে ধরা হয়। নির্বাচনে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ভোট না দেয়া এবং বেতার টেলিভিশনে তাদের সংবাদ প্রচার না করার জন্য নির্মূল কমিটি প্রচারণা চালায়। এছাড়াও নির্বাচনী প্রচারণায় যাতে ধর্মের ব্যবহার না করা হয় সে জন্য আহ্বান জানানো হয়। বেতার টেলিভিশন ও অন্যান্য সরকারি প্রচার মাধ্যমে একাত্তরের চিহ্নিত ঘাতক-দালাল ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের কোনোরকম সুযোগ না দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানানো হয়। নির্বাচনী প্রচারণায় ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার অযোগ্য ঘোষণার দাবিও জানায়।
১৯৯৭ সালের ১৩ আগস্ট একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ২১ বছর পর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের ক্ষমতাগ্রহণ এবং প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয়। নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত শিবির চক্রের সা¤প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্মারকপত্র প্রদান করা হয়। যুদ্ধাপরাধী বিচার আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে অসংখ্য গণহত্যার স্থান, গণকবর, নির্যাতন কেন্দ্র চিহ্নিত করার জন্য নির্মূল কমিটি দাবি জানায়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার কাজও শুরু হয়। নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের আন্দোলনের ফলে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের প্রতি মানুষের ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘রাজাকারমুক্ত সংসদ’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার এবং রাজাকার মুক্ত সংসদ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়।
২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। নির্বাচনের পর শুরু হয় ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন। ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধেও নির্মূল কমিটি প্রতিবাদ ও প্রতিকারের ব্যবস্থা করেছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে শাহরিয়ার কবির ও মুনতাসীর মামুনকে জেলে থাকতে হয়েছে। জেল-জুলম, নির্যাতন উপেক্ষা করে নির্মূল কমিটির এই দুই নেতার নেতৃত্বে নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রতিনিয়ত দৈনিক পত্রিকায়, টিভি টকশোতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বিস্তারের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সিরাজগঞ্জের পূর্ণিমা শীলের ওপর বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্যাতনের কথা দেশবাসী এখনও ভুলতে পারেনি। পূর্ণিমা শীলের পাশে নির্মূল কমিটি দাঁড়ানোর কারণে তিনি বিচার পেয়েছেন এবং অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি এখন নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে কাজ করছেন।
দেশব্যাপী জোরালোভাবে উচ্চারিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গণদাবির কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের শরিক অপরাপর দলগুলো ২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঘোষণা প্রদান করেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে এবং জামায়াতে ইসলামী মাত্র ২টি আসন পায়। মহাজোটের বিজয়ের প্রধান কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতি অঙ্গীকার। এই বিচার দ্রুত আরম্ভ করার জন্য ২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস হয়।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এই ট্রাইব্যুনালকে সহযোগিতা করার জন্য নির্মূল কমিটির উদ্যোগে বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংক্রান্ত নাগরিক কমিশন’ গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালে বিচারক, আইনজীবী ও তদন্ত কর্মকর্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে মক্তিযুদ্ধের প্রতি অঙ্গীকার, সততা ও দক্ষতা- এ তিনটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব আরোপের কথা এই কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়। নির্মূল কমিটি বিচারের জন্য আন্দোলনের পাশাপাশি সরকারকে বিচারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরামর্শও প্রদান করে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত শীর্ষস্থানীয় মানবতাবিরোধী অরপরাধীদের বিচার করে শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি কার্যকর করারও ব্যবস্থা করেছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধীদের দল বাংলাদেশকে একটি ধর্মভিত্তিক সা¤প্রদায়িক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল। তাদের বিচারের ফলে আন্দোলনের একটি পর্যায় বিচারের দাবি শেষ হয়। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশ বিচারমুখিনতার সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মধ্যে দিয়ে আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি। আন্দোলনের একটি পর্যায়ের সফলতা এসেছে। এখন মানুষের মধ্যে এই বোধ সৃষ্টি হয়েছে যে, অপরাধ করলে বিচার হয় এবং শাস্তিও ভোগ করতে হয়।
আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য ধর্মনিরপেক্ষ অসা¤প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আজো সফলতা পায়নি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানের মাধ্যমে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পথচলা শুরু করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশকে একটি সা¤প্রদায়িক ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশ একটি অসা¤প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের দাবিতে পরিচালিত চার দশকের আন্দোলন সত্যিকারের সফলতা লাভ করবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্মূল কমিটি অসা¤প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছে।
আশি ও নব্বয়ের দশকের প্রজন্ম একটি বিকৃত পাকিস্তান মনস্ক ইতিহাস পড়ে বেড়ে উঠেছে। কিন্তু নির্মূল কমিটির আন্দোলন, পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিরোধের জন্য পাঠ্যপুস্তক তদন্ত কমিশন গঠন ও রিপোর্ট প্রদান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য স্থাপন এবং শাহবাগের গণজাগরণমঞ্চ তরুণ প্রজন্মের মানস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নির্মূল কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী ২০১২ সাল থেকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষার সকল পর্যায়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বাধ্যতামূলক করার আন্দোলন শুরু করে। এই বিষয়ে শিক্ষা সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে একটি শুনানিও হয়। সেই শুনানিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সকল কলেজে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস পাঠ বাধ্যতামূলক করার প্রতিশ্রæতি দেন এবং তা বাস্তবায়নও করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মুনতাসীর মামুন ও মাহবুবর রহমান একটি গ্রন্থও রচনা করে দেন।
ইতিহাস সম্মিলনীর চেষ্টায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বাধ্যতামূলক করেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের জন্যও মুনতাসীর মামুন ও মাহবুবর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের একটি গ্রন্থ রচনা করে দিয়েছেন। গত পাঁচ বছরে (প্রতি বছর ৫ লাখ) প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে বেড়ে উঠেছে। তাদের মনোজগতে পাকিস্তানি ধারার পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারা প্রভাব বিস্তার করেছে এবং পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এ জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নানকে নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন।
পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিস্তারের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য বিশাল জায়গা দিয়েছেন। সেখানে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিভিন্ন উপাদান পরিদর্শনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারছে। অন্যদিকে মুনতাসীর মামুন খুলনায় দেশের প্রথম গণহত্যা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই জায়গাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দান। এই গণহত্যা জাদুঘরে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা পরিদর্শন করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকারদের নির্মম গণহত্যা সম্পর্কে জানতে পারছে। যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াতে ইসলামীকে বিএনপি কীভাবে পুনর্বাসন করছে তাও তরুণ প্রজন্ম জানতে পারছে। এই সব বিষয় তাদের মনোজগতে বিরাট পরিবর্তন ঘটিয়েছে যার প্রমাণ ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের শোচনীয় পরাজয়।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৬ মাস আগে থেকে তরুণ নির্বাচকমণ্ডলীকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি রাজাকার মুক্ত সংসদের দাবিতে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ আরম্ভ করেছে। এই অভিযাত্রার অংশ হিসেবে কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্মূল কমিটি ১০১টি আলোচনা সভা, মতবিনিময় সভা ও জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এই জনসভাগুলোতে দুই থেকে দশ হাজারেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে। এসব সভায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের প্রার্থীকে ভোটদানের জন্য নির্বাচকমণ্ডলীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে ৭টি সংকলন, ৪টি পোস্টার, ১টি লিফলেট এবং ‘বাংলাদেশ কোন পথে’ ও ‘ভুলি নাই’ নামে দুটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের ‘আমাদের বাঁচতে দাও’, ‘যুদ্ধাপরাধ ৭১’ এবং ‘জিহাদের প্রতিকৃতি’ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রদর্শন করা হয়েছে।
অতীতের নির্বাচনের পর আমরা দেখেছি ধর্মীয় সংখ্যালঘু স¤প্রদায় মহাআতঙ্কে থাকেন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খালেদা-নিজামী নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও এথনিক স¤প্রদায়ের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির ওপর নজিরবিহীন নির্যাতন চালিয়েছে। হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও গৃহে অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী যাবতীয় অপরাধ তারা করেছে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রার্থীকে ভোটদানের জন্য। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দশ হাজারেরও বেশি ঘটনা ঘটলেও শতকরা ৯৯ ভাগ ভিকটিম কোনো ন্যায়বিচার পাননি আইনি সীমাবদ্ধতা এবং উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে- যার অন্যতম হচ্ছে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র।
২০১৮ সালের ৩ ও ৪ আগস্ট একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপশক্তির আক্রমণ মোকাবেলার জন্য ৪টি বিশেষ ফোরাম গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতা রোধে চিকিৎসা সহায়তার জন্য অধ্যাপক উত্তম বড়–য়াকে আহ্বায়ক ও অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবকে সদস্য সচিব করে ‘চিকিৎসা সহায়ক কমিটি’, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে আহ্বায়ক ও ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে ‘আইন সহায়ক কমিটি’, মুক্তিযোদ্ধা সঙ্গীতশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষালকে আহ্বায়ক ও সঙ্গীতশিল্পী জান্নাত-ই-ফেরদৌসীকে সদস্য সচিব করে ‘সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ড’ এবং শহীদ সন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়কে আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তপন পালিতকে সদস্য সচিব করে ‘তথ্যপ্রযুক্তি যোগাযোগ সেল’ গঠন করা হয়।
চিকিৎসা সহায়ক কমিটির উদ্যোগে ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর সারাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের নেতৃস্থানীয় চিকিৎসকদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পূর্বে জেলা পর্যায়ে চিকিৎসা সহায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এছাড়া নবীন চিকিৎসক এবং মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য জেলা পর্যায়ে ওয়ার্কশপ ও সেমিনার আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়। নির্বাচনের সময় কোথাও কোনো সন্ত্রাস ও সহিংসতার ঘটনা ঘটলে চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সদস্যরা দ্রুত ভিটটিমদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
আইন সহায়ক কমিটির উদ্যোগে ১৮ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের আইনজীবীদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয় যে নির্বাচন-পরবর্তীকালে আইনি সহায়তা প্রয়োজন হলে প্রতি শনিবার নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলিত হয়ে সা¤প্রদায়িক নির্যাতনের ভিকটিমদের আইনি সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়াও জেলা পর্যায়ে ভিকটিকদের সহায়তা প্রদানেরও ব্যবস্থা করা হয়।
সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ডের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। নির্মূল কমিটি বিশ্বাস করে সাংস্কৃতিক জাগরণের মাধ্যমে নির্বাচন কেন্দ্রিক সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাস রোধ করা সম্ভব। এই লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ড তাদের কাজ করে যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ যাতে সা¤প্রদায়িক হামলার সুযোগ তৈরি করতে না পারে সে জন্য একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ‘তথ্যপ্রযুক্তি যোগাযোগ সেল’ গঠন করে। এই সেলের উদ্যোগে ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর ‘নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি যোগাযোগ সেল গঠনের পেছনে কিছু সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে- ক). তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সৃজনশীল ও রুচিশীলভাবে তারুণ্যের ভাষায় দেশে ও প্রবাসে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও চেতনায় আলোকিত করা, খ). মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী মৌলবাদী-সা¤প্রদায়িক অপশক্তির পাল্টা জবাব ও ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করা, গ). নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অপপ্রচার বা অন্য কোনো কারণে দেশের কোথাও হামলার ঘটনা ঘটলে এই সেলের মাধ্যমে সংবাদ সংগ্রহ করে তাৎক্ষণিক প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা।

উপসংহার
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের জুন মাস থেকে তরুণ নির্বাচকমণ্ডলীকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি রাজাকার মুক্ত সংসদের দাবিতে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ আরম্ভ করেছিল। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে নির্মূল কমিটির ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ সম্পূর্ণরূপে সফলতা লাভ করেছে। নির্মূল কমিটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে পাকিস্তানিকরণের বিপরীতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, প্রচারপত্র, পুস্তিকা, চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের মাধ্যমে জামায়াত বিএনপির অপকর্ম সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার কাজ চালিয়েছে নিরন্তন। নির্মূল কমিটি বিভিন্ন জেলায় বিশেষ করে জামায়েত প্রার্থীর এলাকায় তাদের অপকর্ম তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানায়। শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ রাজাকার মুক্ত হয়েছে। এই নির্বাচনে জামায়াতের একজন প্রার্থীও জয়লাভ করতে পারেনি যা নির্মূল কমিটির প্রচারণার ফল। নির্মূল কমিটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে তা এই নির্বাচনের মাধ্যমে অনেকাংশে সফলতা লাভ করেছে। তবে যতদিন পর্যন্ত অসা¤প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতষ্ঠিত না হবে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
সবশেষে নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের নতুন ভোটাররা যে বিজয়ের সূত্রপাত করেছিলেন ২০১৮ সালে এসে তা চূড়ান্তরূপ লাভ করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের দল জামায়াতকে চূড়ান্তভাবে সংসদ থেকে বিতাড়িত করে রাজাকার মুক্ত সংসদ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। জয় বাংলা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়