হুদা কমিশনের শেষ দুই দিনে বদলি ১৮ কর্মকর্তা

আগের সংবাদ

প্রাণীদের খাবারেও সিন্ডিকেট : মিরপুর চিড়িয়াখানায় তিন দশক ধরে ওরা ৯ জন, চাপে কমল গরুর মাংসের দাম

পরের সংবাদ

সংস্কৃতির চর্চা জোরদারের তাগিদ > বাঙালির প্রাণের মেলার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী : হাতে নিয়ে বই পড়ার আনন্দ অনেক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা আরো জোরদারের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাহিত্য সম্মেলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো আয়োজন দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে বাংলা একাডেমিকে উদ্যোগী হতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে যুক্ত হয়ে অমর একুশে বইমেলা-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষাশহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বাঙালির ‘প্রাণের মেলার’ ৩৮তম আসর শুরু হলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রত্যেক জেলায় বা মহকুমায় অতীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো, সাহিত্য চর্চা হতো, সাহিত্য সম্মেলন হতো, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা হতো। এই চর্চাটা অনেকটা কমে গেছে। এটাকে আবার একটু চালু করা দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের শিল্পকলা একাডেমি প্রায় প্রতিটি জেলায়, এখন উপজেলা পর্যন্ত করে যাচ্ছি। পাশাপাশি আমাদের এ বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকেও যদি আপনারা একটু উদ্যোগ নেন, তাহলে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেক মেধাবী কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবী আমরা পাব।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেলেও কাগজের বইয়ের আবেদন সব সময় থাকবে। ডিজিটাল ডিভাইসে বই পড়ার চেয়ে একটা বই হাতে নিয়ে পাতা উল্টেপাল্টে পড়া অনেক আনন্দের। বই না পড়লে মনে হয় কী যেন হলো না, কী যেন জানলাম না। এই মেলা হচ্ছে আমাদের প্রাণের মেলা, কোনো কারণে এ মেলা হতে না পারলে আমাদের সবারই খারাপ লাগে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বইমেলা দেরিতে শুরু করতে হলো। প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিল। এ কারণে দেরি করে শুরু করতে হলো। আজকে (গতকাল) ১৫ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করতে পারছি, সেটাই বড় কথা। বাংলা ভাষা মায়ের ভাষা, কথা বলার অধিকার। এই ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। তখনই প্রতিবাদ

জানানো হয়। রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা আদায় করতে হয় আমাদের।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা একাডেমির বইমেলা প্রাণের মেলা। সেটা না হতে পারলে সবার মন খারাপ হয়। আমাদের ভাষার অধিকারে বারবার আঘাত এসেছে। আরবি অক্ষরে বাংলা ভাষা, রোমান হরফে বাংলা লেখার বিষয়টি এলো। বারবারই প্রতিবাদ করা হয়েছে। একটি জাতি সবসময় উন্নতি করতে পারে ভাষা সংস্কৃতির উন্নতি হলে। প্রতিটা আন্দোলন সংগ্রামে সংস্কৃতিসেবীদের ভূমিকা রয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি। কিন্তু স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনে তার অবদানকেও মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ভাষার জন্য রক্তদানের মধ্য দিয়ে একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি, মাতৃভাষায় কথা বলার সুযোগটিও পেয়েছি। এটা ধরে রাখতে হবে। অনেক আঘাত ও বাধা এসেছে। সব অতিক্রম করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতা বলতেন, জাতির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার অর্জনের জন্যই ছিল আমাদের সংগ্রাম।
অনুবাদের গুরুত্ব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষার গুরুত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে কেবল নিজের ভাষাকে গুরুত্ব দিলেই হবে না। অনুবাদ সাহিত্য যেন আরো ভালো হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। আমাদের বাংলা সাহিত্য যেন অন্য ভাষাভাষীরা জানতে পারে, সেদিকে যেমন নজর দিতে হবে, তেমনি অন্য ভাষার সাহিত্যও আমাদের জানতে হবে।
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ জয়ীদের হাতে তুলে দেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন কবিতায় আসাদ মান্নান ও বিমল গুহ; কথাসাহিত্যে ঝর্না রহমান ও বিশ্বজিৎ চৌধুরী, প্রবন্ধ/গবেষণায় হোসেনউদ্দীন হোসেন, অনুবাদে আমিনুর রহমান ও রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী, নাটকে সাধনা আহমেদ, শিশুসাহিত্যে রফিকুর রশীদ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় পান্না কায়সার, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় হারুন-অর-রশিদ, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশবিজ্ঞানে শুভাগত চৌধুরী। আরো পুরস্কার পেয়েছেন আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনীতে সুফিয়া খাতুন ও হায়দার আকবর খান রনো এবং ফোকলোরে আমিনুর রহমান সুলতান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়