তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

শেষ আটে সালাহদের প্রতিপক্ষ মরক্কো

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের (আফকন) শেষ ১৬ তে আইভরি কোস্টকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে মোহাম্মদ সালাহর মিসর। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলশূন্য থাকা দুই দলের অতিরিক্ত সময়েও গোল হয়নি। অবশেষে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে শেষ হাসি হেসেছে মোহাম্মদ সালাহরা। আইভরি কোস্টের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে মিসরের মহানায়ক ছিল মোহাম্মদ আবু গাবাল ‘গাবালস্কি’। আগামী ৩০ জানুয়ারি মরক্কোর সঙ্গে সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে খেলবে মোহাম্মদ সালাহরা। অন্যদিকে, স্বাগতিক ক্যামেরুন কমোরোসকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি গাম্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে স্বাগতিকরা। আফ্রিকান কাপ অব নেশনের (আফকান) এই আসরে ২৪টি দল যোগ্যতা অর্জন করেছিল। এই ২৪টি দলকে চারটি দলের ছয়টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রুপের দল একটি করে রাউন্ড রবিন খেলেছে।
গ্রুপ পর্বের পর প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল এবং চারটি সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কের তৃতীয় স্থান অধিকারী দল শেষ ১৬তে খেলেছে। ১৬ রাউন্ডের বিজয়ীরা কোয়ার্টার ফাইনালে এবং কোয়ার্টার ফাইনালের বিজয়ীরা সেমিফাইনালে যাবে। সেমিফাইনালের পরাজিতরা তৃতীয় স্থানের ম্যাচে খেলবে। আর সেমিফাইনালের বিজয়ীরা খেলবে আফ্রিকার সেরা হওয়ার লড়াইয়ের ফাইনালে।
শেষ আটে যাওয়ার লড়াইয়ে ক্যামেরুনের ডুয়ালা স্টেডিয়ামে আইভরি কোস্টের মুখোমুখি হয়েছিল মিসর। পুরো ম্যাচে বল দখলের আধিপত্যে এগিয়ে ছিল আইভরি কোস্ট। তবে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোল নিয়েছে মিসর। সর্বাধিক সংখ্যক শট নিলেও লক্ষ্য উদ্দেশ্যে রাখতে পেরেছিল মাত্র ৫টি। ম্যাচের ১৫ মিনিটে ওমার মারমুশের দিশাহীন শটে শুরু, তারপর পুরো ম্যাচেই চলেছে এর পুনর্মঞ্চায়ন। সালাহদের বিপরীতে প্রতিপক্ষের মোট শট কম নিলেও ১৩ শটের মধ্যে ৮টি রেখেছিলেন গোল উদ্দেশ্যে। তাদের এই আক্রমণকে নিষ্ফল করার জন্য মাঠের বাইরে থেকে যে মাস্টারমাইন্ড কাজ করেছেন তিনি হলেন মিসরের কোচ। পুরো টুর্নামেন্ট ধরেই কার্লোস কুইরোজের অধীনে মিসর খেলছে বেশ রক্ষণাত্মক ফুটবল। পুরো টুর্নামেন্টে ‘ফারাওদের’ কৌশল ছিল অনেকটা এরকম, গোল করতে পারলে ভালো, না পারলেও সমস্যা নেই, রক্ষণটা ঠিক থাকলেই হলো। এই কৌশলের জন্য সমর্থকদের বেশ সমালোচনাও সহ্য করতে হচ্ছে তাদের। অধিকাংশেরই একই মতামত, দলে একজন বিশ্বতারকা মোহাম্মদ সালাহ আছে। তারপরও কেন রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলবে। তবে দলের আক্রমণভাগ নিষ্ফলা সব ফিনিশে কোচ কুইরোজের কৌশলকে যেন যৌক্তিক প্রমাণ করছে প্রতি ম্যাচেই। আইভরি কোস্টের সঙ্গেও একই কৌশল। তাই প্রতিপক্ষের ক্রসের জবাব দিচ্ছিল নিষ্ফলা ফিনিশে। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল ম্যাচটা বুঝি শেষ হওয়ার নয়। নিজেরা সুযোগ তৈরি না করে প্রতিপক্ষের ভুলের অপেক্ষা করার কৌশলে যে কয়টা সুযোগ বুধবার রাতে এসেছে, তার সবকটাই যে হয়েছে লক্ষ্যভ্রষ্ট। প্রথমার্ধে গোল করার অন্তত তিনটা ভালো সুযোগ পেয়েছিল মিসর। মোহাম্মদ সালাহর দুটি সুযোগ ঠেকিয়ে দেন আইভরিয়ান গোলকিপার বাদরে আলী সাঙ্গারে। ওমর মারমুশের একটি শট লাগে ক্রসবারে। দ্বিতীয়ার্ধে আমর আল সোলাইয়া আর অ্যাস্টন ভিলার উইঙ্গার ত্রেজেগে সুযোগ পেলেও গোল হয়নি। জবাবে আইভরিয়ানরাও কম লড়ে যায়নি ম্যাচে। দলটি গোলের কাছে গিয়েছিল ডিফেন্ডার এরিক বাইয়ির শটে। দুর্ভাগ্যক্রমে ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে সেটি। আইভরিয়ান মিডফিল্ডার ইব্রাহিম সাঙ্গারের একটা শট আটকে দেন মিসরের মূল গোলকিপার এল শেনাউই। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা খানিকটা বাড়তি তীব্রতা নিয়ে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে গেছে সেটাও। তাই মিসর কোচ কুইরোজ বাধ্য হয়েই ছক বদলে ৪-২-৩-১ এ দল সাজাতে বাধ্য হন। উদ্দেশ্য একটাই, গোল হোক কিংবা না হোক, হজম করা যাবে না। সে কৌশলে অবশ্য সফলও হয়েছেন তিনি। ফলাফল যা হওয়ার তাই হলো। ম্যাচটা গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। শুটআউট পর্বে পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও পেনাল্টি শুটআউটে বাইয়ির দুর্বল শটই আটকে দেন গাবালস্কি। শেষের এই ব্যর্থতাই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে বাইয়ির কাছে। পাঁচ নম্বর পেনাল্টি নিতে আসা সালাহ হতাশ করেননি দলকে। মহাগুরুত্বপূর্ণ পেনাল্টিটা ঠাণ্ডা মাথায় জড়ান জালে, তাতেই পুরো টুর্নামেন্টে নির্ধারিত সময়ে দুটো মাত্র গোল করা মিসর পৌঁছে যায় প্রতিযোগিতার শেষ আটে। পেনাল্টি শুটআউটে সালাহর পাশাপাশি মিসরের হয়ে গোল করেন জিজো, আমর আল সুলাইয়া, ওমর কামাল, মোহাম্মদ আবদুলমোমেন। ওদিকে বাইয়ি মিস করলেও আইভরিয়ানদের হয়ে গোল করেন বার্নলির ফরোয়ার্ড ম্যাক্সওয়েল কর্নেত, জাহা, সাঙ্গারে ও নিকোলাস পেপে। শেষমেশ সালাহ-গাবালস্কির বীরত্বেই পরের রাউন্ডে উঠে গেল মিসর। ম্যাচ চলাকালীন মূল গোলকিপার এল শেনাউই পায়ে চোঁট পেয়ে মাঠ ছাড়লে তার বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিল গাবালস্কি। যদি আগামী রবিবরের আগে শেনাউই সুস্থ হতে না পারেন, মরক্কোর বিপক্ষে কোয়ার্টারেও দেখা যাবে গাবালস্কিকে। মোহাম্মদ সালাহর মিসর পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে সরাসরি গোল করতে পেরেছেন মাত্র দুইটি। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে নাইজেরিয়ার কাছে পরাজিত হয়ে আফ্রিকার সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু করেছিলেন। পরবর্তী দুই ম্যাচ গিনিবিসাউ ও সুদানের সাথে ১-০ গোলের জয় নিয়ে শেষ ষোলোতে লড়াই করার সুযোগ অর্জন করে। শেষ ষোলো তো ট্রাইবেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল সালাহর মিসর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়