প্রজ্ঞাপন জারি : সরকারি-বেসরকারি অফিস অর্ধেক জনবলে আজ থেকে

আগের সংবাদ

বৈধ লবিস্টের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবহার : বিএনপি-আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ > ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

একটি সেতু বদলে দিয়েছে ২ পাড়ের মানুষের জীবনমান

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. শাহ আলম, দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) থেকে : একটি কাঠের সেতু বদলে দিয়েছে কয়েকটি গ্রামের মানুষের জীবনমান। দৌলতপুর উপজেলার কালীবাড়ি শ্মশান ঘাট সংলগ্ন খালের ওপর সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হয় ২১৮ ফুট লম্বা কাঠের সেতু। সেতুটি হওয়ার আগে সারা বছর দুই পাশের মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের সারা বছর সেতু না থাকায় ভোগান্তি যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। সরজমিন গিয়ে জানা যায়, এলজিএসপি ৩-এর অর্থায়নে চকমিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে ৩৫ মিটার লম্বা দৌলতপুর কালীবাড়ি শ্মশান সংলগ্ন খালের ওপর কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। খালটির প্রস্থ অনেক বড় থাকায় নৌকা দিয়ে পারাপারে প্রায়ই ঘটত দুর্ঘটনা। দৌলতপুর থানা থেকে মাত্র ১০০ মিটার উত্তরে কালীবাড়ি মোড়। খালের পশ্চিম পাশে চক সমেতপুর, সারোটিয়াগাজী, গুচ্ছগ্রাম, ধুনাইল, ভুগোলহাটসহ কয়েকটি গ্রামের ২০ হাজার লোকের বসবাস।
থানা সদর থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে মাত্র পাঁচ মিনিটের পথ হলেও সেতুর পশ্চিম পাড়ের মানুষের নৌকা দিয়ে পারাপারের কারণে থানা সদরে আসতে অনেকটা সময় লেগে যেত। বর্ষা ছাড়া এ এলাকার কৃষিপণ্য বিক্রি করা যেত না। এই কাঠের সেতু দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে নতুন এক সেতুবন্ধন তৈরি করেছে।
সেতুর পশ্চিম পাশ সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি থেকে দৌলতপুর থানার দূরত্ব ১০০ মিটার হবে। বাড়ির সামনে খালে পানি থাকার কারণে সেই দূরত্বটা অনেক বেশি মনে হতো। আমাদের এমনি দুর্ভাগ্য ছিল মোটরসাইকেল তো দূরের কথা একটা সাইকেলও কিনতে পারতাম না, কারণ বাড়ি আসার কোনো উপায় ছিল না। কৃষি পণ্য আনা-নেয়া ছিল খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ব্রিজ হওয়ার কারণে কৃষি পণ্য আনা-নেয়ায় খরচও আগের চেয়ে অনেক কম হয়। দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা ফরিদপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা ছোট সময় থেকেই সেতুর পশ্চিম পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। সবচেয়ে বেশি কষ্ট ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিকের প্রচেষ্টায় সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
দৌলতপুর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান আলী বলেন, এটা কাঠের সেতু না আমাদের জন্য এইটা পদ্মা সেতু। সেতু হওয়ায় চক সমেতপুর, সারোটিয়া গাজীসহ ও ওই এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরতে পারে। আগে এখানে একটি এক বাঁশের পুল ছিল। এখান দিয়ে বাচ্চারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনার খবর পেতাম। এ বিষয়ে চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী এখানকার মানুষের কথা কেউ কখনো ভাবেনি।
এতদিন বঞ্চিত ছিল কৃষিপ্রধান এই অঞ্চলের মানুষ। এই এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। তবে এখন আলোর মুখ দেখছে এলাকাবাসী। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল এখানে একটা সেতুর ব্যবস্থা করব। অবশেষে সেতুটি করতে পেরে আমারও অনেক ভালো লেগেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরুল হাসান বলেন, এখানে একটা সেতু ওই এলাকার মানুষের জন্য খুব দরকার ছিল। সেতু হওয়ায় তারা খুব সহজে এখন দৌলতপুর আসতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়