ক্ষমা চেয়েছেন চীনা নাগরিক, টাকা চাননি সার্জেন্ট

আগের সংবাদ

জাতীয় পুরুষ বেসবল শুরু

পরের সংবাদ

কড়া নির্দেশনা কার্যকরে ঢিলেমি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

** নতুন নির্দেশনা ** স্কুল-কলেজ বন্ধ ** একশর বেশি লোকসমাগম নয় ** মাস্ক ছাড়া বাইরে নয় **

কাগজ প্রতিবেদক : দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় ১১ দিনের মাথায় আবারো নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। এবার স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখাসহ জনসমাগমে লোকসংখ্যা সীমিত করার নির্দেশনা এসেছে। মাস্ক পরা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে গতানুগতিভাবে। তবে এসব নির্দেশনা আদৌ কার্যকর হবে কিনা- এ প্রশ্ন থেকেই গেছে। বিতর্ক রয়েছে বিধিনিষেধের শর্ত নিয়েও।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গতকাল শুক্রবার ৬টি বিধিনিষেধ সংবলিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ নিয়ে গতকাল সকালেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সশরীরে ক্লাস বন্ধ রাখবে। তবে অনলাইনে ক্লাস নেয়া ও হলগুলো খোলা রাখতে পারবে।
এছাড়া যে কোনো সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি জনসমাগম করা যাবে না। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া প্রত্যেক ব্যক্তিকে টিকা সনদ অথবা আগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করা পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট সঙ্গে রাখতে হবে। সব অফিস, শিল্প কারখানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের টিকা নিতে হবে। বাসার বাইরে সব জায়গায় বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। নির্দেশনাগুলো প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা- তা স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদারক করবে বলে জানান তিনি।
তবে বাণিজ্যমেলা, বিপিএল, বইমেলা, কিংবা পর্যটন কেন্দ্রগুলো চালু থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেখানে খেলার বিষয় আসবে সেখানে ১০০-এর বেশি লোক যাবে না, এ কথা তো বলা যাবে না। কারণ, এটা স্টেডিয়ামে হয়। সেখানে টিকা কার্ড ও টেস্টের সনদ দেখিয়ে ঢুকতে হবে। সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় বইমেলা দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়ার কথা জানান তিনি।
এদিকে, করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে দেশের হাসপাতালগুলোতে ‘আশঙ্কাজনক হারে’ রোগী ভর্তি হচ্ছেন বলে জানান জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, প্রতিদিনই রোগী শনাক্তের হার বাড়ছে, যদিও মৃত্যুর হার এখনো কিছুটা কম। সংক্রমণ বাড়ছে কারণ, আমরা এখনো সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছি না। হাসপাতালের বেড এক-তৃতীয়াংশ ভরে গেছে। এভাবে বাড়লে ঢাকা শহরের সব হাসপাতালেই আর বেড পাওয়া যাবে না। তাই আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতে অর্ধেক জনবল দিয়ে চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। ১৩ জানুয়ারি থেকে সেটি

কার্যকর করা হয়। যদিও ওই সব নির্দেশনার বেশিরভাগই প্রতিপালিত হতে দেখা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের নির্দেশনার অবস্থাও একই রকম হবে বলে তাদের ধারণা। শুধু স্কুল-কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তটি কড়াকড়িভাবে কার্যকর হবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সরোয়ার হোসেন জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা সহজ। শুধু নির্দেশনা দিলেই হয়ে যায়। কিন্তু বাকি সব জায়গায় স্বাস্থবিধি উধাও হতে আমরা দেখি। এর আগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল মাস্ক পরা নিশ্চিতের কথা। এবারো বলা হয়েছে। কিন্তু এখনো অনেকেই মাস্ক পরছেন না। দু’চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কাজ হয়নি। আসলে জনগণ সচেতন তখনই হবে, যখন দেখবে নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকার ব্যাপকভাবে কাজ করছে।
ড. সরোয়ার আরো বলেন, এর আগের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খেতে হলে টিকা কার্ড দেখাতে হবে। এখন বলা হচ্ছে- স্টেডিয়ামে, বাণিজ্যমেলায় ঢুকতে টেস্ট রিপোর্ট লাগবে। কিন্তু আসলে কি তা নিশ্চিত করার মতো অবস্থা আমাদের আছে? নাকি বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাপে মেলা-খেলা উন্মুক্ত রেখে শুধু নামমাত্র বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে। অতীতে কিন্তু কোনো নির্দেশনায় সঠিকভাবে কার্যকর হতে দেখা যায়নি। এমনকি গণপরিবহনে অর্ধেক আসনে যাত্রী নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকেও পরে সরকারের সরে আসার কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়