অধ্যাপক সাইদা হত্যা : গ্রেপ্তার আনারুলের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

আগের সংবাদ

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ : নির্বাচন কমিশন গঠনে ৪ প্রস্তাব

পরের সংবাদ

বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন : নৌকায় ভোট দেয়ায় রংপুর মঙ্গামুক্ত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

** রংপুর এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চল হয়ে গেছে ** শীতার্তদের সাহায্যে বিত্তবানরা এগিয়ে আসুন **
কাগজ প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রংপুরে আর মঙ্গা দেখা দেয়নি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই কিন্তু রংপুরবাসী সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন, সেটা ভুললে চলবে না। গতকাল রবিবার দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রংপুর বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। আর আল্লাহর রহমতে সরকার আসার পর এই অঞ্চলে আর মঙ্গা দেখা দেয়নি, দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়নি। মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। রংপুর এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চল হয়ে গেছে। যেখানে এক সময় খাবারের অভাবে মানুষ মারা যেত। আমরা চাই আমাদের দেশটা আরো উন্নত হবে, এগিয়ে যাবে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই কিন্তু রংপুরবাসী সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন, সেটা ভুললে চলবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, রংপুর বিভাগে যেসব শাকসবজি, তরিতরকারি হয়, সেগুলো যেন প্রক্রিয়াজাতকরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার সে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এদেশে আর কখনো যেন মঙ্গা দেখা না দেয়, আর কখনো দুর্ভিক্ষ যেন না হয়, এদেশের মানুষ যেন আর কষ্ট না পায়, সেদিকে আমরা বিশেষ নজর দিয়েছি।
রংপুরের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর যত উন্নতি হয়েছে, এর আগে অনেকেই তো, বিশেষ করে রংপুরের লোকেই তো ক্ষমতায় ছিল কিন্তু রংপুরের মানুষের তেমন কোনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। তারা নিজেদের ভাগ্য গড়েছে, সাধারণ মানুষের ভাগ্য গড়েনি। এই অঞ্চলে শিক্ষার হার কম ছিল, কিন্তু এখানে মেধাবী ছাত্র ছিল, কাজেই আমরা সেদিকে হিসাব করে এখন

পদক্ষেপ নিয়েছি, কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, লালমনিরহাটে এভিয়েশন এবং এরো-স্পেস ইউনিভার্সিটি করে দিচ্ছি, রংপুরে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান পায়রাবন্দ সেখানে তার নামে একটা কমপ্লেক্স এবং ট্রেনিং সেন্টার করা হয়েছে, রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বেগম রোকেয়ার নামেই করে দিয়েছি, তিনিই প্রথম শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেই আমরা কিছু লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছি। এ অঞ্চলের প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ হচ্ছে।
রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভাগীয় যে অফিসটা আমরা চেয়েছি এমন একটা জায়গায় এই কমপ্লেক্স ভবনটা করে দেয়া যেন সব জেলার একটা সেন্টার পয়েন্ট হয়। সেখানে গিয়ে যেন তারা সহজে কাজ করতে পারে, তাদের সেবাটা নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করেই আমরা রংপুর বিভাগের সদর কমপ্লেক্সটা নির্মাণ করেছি। আধুনিক চিন্তাভাবনা নিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগে এই ১০ তলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে এবং টাকাও সাশ্রয় হয়েছে। সাধারণত দেখা যায় একটা প্রকল্প নিলে টাকার আর সাশ্রয় হয় না বরং পরে আরো চায়। কিন্তু এখানে প্রায় ২৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। কারণ আমরা তো প্রকল্পে কখনো বাঁচাতে দেখি না। সেজন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমি আশা করি ভবিষ্যতে যারা অন্য কমপ্লেক্সগুলো করবে, তারাও যেন এটা মাথায় রাখে।
সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নেয়া পদক্ষেপের ফলে অন্তত বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। মানুষ অনেক সচ্ছল হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা চাই, আমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে। জাতির পিতা এদেশকে নিয়ে, এদেশের মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়বেন, আমাদের লক্ষ্যও আমরা সেটাই গড়তে চাই। এদেশে আর কখনো যেন মঙ্গা দেখা না দেয়, আর কখনো দুর্ভিক্ষ যেন না হয়, এদেশের মানুষ যেন আর কষ্ট না পায়। প্রতিটা গ্রামকে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন করে দেব। গ্রামের মানুষ গ্রামে বসবাস করবে কিন্তু নাগরিক সব সুবিধা পাবে।
আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন সমৃদ্ধ জাতি গঠনের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গঠন করে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ করতে চাই। সেটা আমাদের লক্ষ্য। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যে ঘোষণাগুলো দিয়েছিলাম, আল্লাহর রহমতে একে একে সব আমরা বাস্তবায়ন করেছি। আজকে বাংলাদেশ হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হবে। সেই পরিকল্পনা আমি করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে। এজন্য আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। এটাও বাস্তবায়ন হবে ইনশাল্লাহ। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা আর কেউ ভবিষ্যতে থামাতে পারবে না। আমাদের প্রত্যেকটা মানুষ উন্নত হোক, আমাদের প্রতিটি ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখুক। ভবিষ্যৎ বংশধররা সুন্দরভাবে বাঁচবে, উন্নত জীবন পাবে।
উত্তরাঞ্চলের শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার শীত পড়েছে, সবাই শীতে কষ্ট পাচ্ছেন। আমরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করেছি, যারা বিত্তশালী আছেন তাদের অনুরোধ করব আপনারা শীতবস্ত্র বিতরণ করতে পারেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়