অধ্যাপক সাইদা হত্যা : গ্রেপ্তার আনারুলের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

আগের সংবাদ

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ : নির্বাচন কমিশন গঠনে ৪ প্রস্তাব

পরের সংবাদ

ডিএনসিসি : মাটির নিচে হচ্ছে বর্জ্য ঘর নির্মাণ শুরু শিগগিরই

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রুমানা জামান : নগরীর অলিগলিতে উন্মুক্তভাবে থাকা বর্জ্য ঘরগুলো এবার গণ্ডিবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে মাটির নিচে। পরিবেশ দূষণ রোধ ও পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে তুরস্কের আদলে মাটির নিচে আন্ডারগ্রাউন্ড সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর বিশেষ কারিগরি টিম মাঠ পরিদর্শন শেষে এর যথার্থতা যাচাই করেছে। নকশা প্রণয়নের কাজও শুরু হয়েছে। আগামী এপ্রিলে এই বর্জ্য ঘরগুলো নির্মাণ কাজ শুরু হবে জানিয়েছে ডিএনসিসি।
জানা গেছে, তুরস্কের আদলে মাটির নিচে বর্জ্য ঘর নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) মাধ্যমে চারটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিএনসিসির চারটি নির্ধারিত স্থান হচ্ছে- ৩০০ ফুট এলাকা, মিরপুরে ৬০ ফুট সড়ক, আগারগাঁওয়ের শহীদ মাহবুব সরণি এবং হাতিরঝিলের শুটিং ক্লাব। সেনাবাহিনীর কারিগরি টিমের রিপোর্ট পাওয়ার পরই বর্জ্য ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব গুছিয়ে আগামী মার্চ মাসের শেষে অথবা এপ্রিলের শুরুতে ঘর নির্মাণ শুরু হবে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, আঙ্কারা শহরটি অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। আঙ্কারা সিটি করপোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সফলতার কৌশলটি আমরা কাজে লাগাব। পাশাপাশি আমাদের নগর ব্যবস্থাপনাকে কীভাবে আরো সফল করা যায়, সে বিষয়েও কাজ করব। শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে তুরস্কের আদলে আমরাও মাটির নিচে বর্জ্যঘর নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছি। যেহেতু আমাদের মাটির উপরে জায়গার সংকট রয়েছে। তাই আমরা পর্যায়ক্রমে শহরের প্রতিটি এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড বর্জ্য ঘর নির্মাণ করব। যেন আমরা বিশেষ পদ্ধতিতে বর্জ্যগুলো সংগ্রহ করে ডিসপোজাল করতে পারি।
তিনি বলেন, খোলা জায়গায়

বর্জ্য ফেলার কারণে অনেক সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। অনেক এলাকায় মাটির উপরে জায়গা সংকটের কারণে ময়লা রাখা যায় না। ঢাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বর্জ্য নিয়ে রয়েছে নানা সংকট। এই পরিস্থিতি থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে ডিএনসিসি এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, ঢাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে নগরবাসী এসটিএসের সুড়ঙ্গ মুখের ঢাকনা সরিয়ে ময়লা ফেলতে পারবেন। যা চলে যাবে মাটির নিচে থাকা নির্ধারিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রে। সেখান থেকে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা ল্যান্ডফিলে নিয়ে যাবেন। প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিতে এরই মধ্যে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে (বিএমটিএফ) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন আবাসন কোম্পানিগুলোকে তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মাটির নিচে স্থাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এসএম শফিকুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে তিনটি স্থানে মাটিরে নিচে বর্জ্যঘর স্থাপন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা এরই মধ্যে ফিল্ড পরিদর্শন করেছে। নকশা চূড়ান্তের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই শুরু হবে নির্মাণকাজ।
ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। সব বর্জ্য ল্যান্ডফিলে নেয়া সম্ভব হয় না। কিছু অংশ নগরে থেকে যায়। এ কারণে যত্রতত্র ময়লা পড়ে থাকে। এছাড়া বর্জ্য নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। ল্যান্ডফিল্ডগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একাধিক অবৈধ চক্র। কোনোভাবেই তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না করপোরেশন।
এছাড়া বর্তমানে আমিনবাজারে যে ল্যান্ডফিল (বর্জ্যভূমি) আছে সেটা অস্বাস্থ্যকর। ২০০৫ সালে এটা করা হয়েছিল। তাছাড়া নতুন ওয়ার্ডগুলো যুক্ত হওয়ার পর থেকে বর্জ্যরে পরিমাণ আরো বেড়ে গেছে। তিন বছর আগে ডিএনসিসির প্রতিটি সড়কের ওপর কন্টেনার রেখে সংগ্রহ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে ৫২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখন যে ল্যান্ডফিল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেখানে বর্জ্য সিগ্রেগেশন (পৃথকীকরণ) হবে। বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে সম্পদে রূপান্তর করতে বর্জ্য থেকে বিদুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনাও রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়