গ্যালারি কায়া : বাংলাদেশ-ভারতের শিল্পীদের নিয়ে ‘এপিক ১৯৭১’

আগের সংবাদ

স্বস্তির ভোটে আইভীর হ্যাটট্রিক : সব শঙ্কা উড়িয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট, শামীম ওসমানের কেন্দ্রে হেরেছে নৌকা

পরের সংবাদ

ম্যাগনেটিক কয়েনের অভিনব ফাঁদ : লোভী বিত্তশালীদের টার্গেট করা হতো > ধাতব মুদ্রাসহ চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চোরাই তামার তার গলিয়ে তৈরি করা হতো বিভিন্ন আকৃতির ধাতব মুদ্রা। পরে সেগুলোকে ৫ কোটি টাকা মূল্যের দুর্লভ ম্যাগনেটিক কয়েন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতœতত্ত্ব সম্পদ বলে দাবি করা হতো। এরপর লোভের ফাঁদে পা দেয়া বিত্তশালী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে পাঁচতারকা কোনো হোটেলে চলতো বিক্রির দেন দরবার। এ সময় কয়েনটি পরীক্ষা করে ৪০০ বছর আগের প্রতœতাত্ত্বিক বস্তু হিসেবে নিশ্চিত করত ভুয়া রসায়নবিদ। চক্রটির সদস্যরা এভাবে নিজেদের লোককে বিক্রেতা ও দালাল সাজিয়ে এমন পরিবেশ তৈরি করত যে, ম্যাগনেটিক হওয়ায় কয়েনটির অনেক চাহিদা রয়েছে। পরে কৌশলে বিত্তশালী ব্যক্তির মাধ্যমে কয়েনটি বিদেশি ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির ফাঁদ পেতে হাতিয়ে নেয়া হতো কোটি কোটি টাকা।
এমনই এক চক্রের ভুয়া রসায়নবিদসহ ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সাইফুল ইসলাম ওরফে বিষ্ণু মালো ওরফে শঙ্কর মালো ওরফে শংকর ওরফে স্বপন, সাইদুল ইসলাম জিহাদ ওরফে রাজা, ভুয়া রসায়নবিদ সৈয়দ মুস্তাকিন ওরফে অহিদুজ্জামান ও মতিন মোল্লা ওরফে মোল্ল্যা আতিক। গত শুক্রবার থেকে উত্তরা, সাভার এবং মানিকগঞ্জে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা, এক আনা, দুই আনা এবং বিভিন্ন প্রতিকৃতি খচিত ৪২টি ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, বিভিন্ন ভাঙারি দোকান থেকে চোরাই তামার তার সংগ্রহ করে গলিয়ে বিভিন্ন কয়েন বানিয়ে বিক্রি করত গুলিস্তানের টাকা বদল ব্যবসায়ীদের কাছে। ৩৫ টাকায় কেনা ওই কয়েন গুলিস্তানের ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন ৭০-৮০ টাকায়। গ্রেপ্তারকৃত চক্রটি গুলিস্তান থেকে ওই কয়েন সংগ্রহ করত। তারপর লোভী বিত্তশালী লোকদের টার্গেট করে স্বজনদের মাধ্যমে প্রলোভনে ফেলা হয়। একপর্যায়ে বিদেশি বায়ার, দালাল ও রসায়নবিদ মিলে পাঁচ তারকা হোটেলে দেন দরবার বসানো হয়। রসায়নবিদ ম্যাগনিফায়িং গøাস দিয়ে কয়েনটি পরীক্ষা করেন। সাজানো পরীক্ষায় রসায়নবিদ ৪ ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে জানান, কয়েনটি ৪০০ বছরের পুরনো প্রতœতত্ত্ব ম্যাগনেটিক কয়েন। যার মূল্য ৫ কোটি টাকা। তখন বিদেশি বায়ার সাজা প্রতারক কয়েনটি কেনার জন্য ছটফট করতে থাকেন।
মশিউর রহমান আরো বলেন, বিদেশি বায়ারের কাছে মুদ্রা বিক্রি করে তারা দামের দিক দিয়ে ঠকতে পারে। তাই কয়েনটি বাংলাদেশি বিত্তশালী ব্যক্তির মাধ্যমে বিদেশি বায়ারের কাছে বিক্রির অনুরোধ করে। ঠিক এ সময় প্রতারক বায়ার বলতে থাকে, তার কাছে নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক টাকা আছে। এ সময় প্রতারকরা বাংলাদেশি বিত্তশালী ব্যক্তিকে অনুরোধ করে, কয়েনটি রেখে ওই অর্ধেক টাকা দিয়ে দিতে। বিদেশি বায়ার তার (বিত্তশালীর) টাকা

পরিশোধ করে কয়েন নিয়ে যাবে। সরল বিশ্বাসে অর্ধেক টাকা দেয়ার পর প্রতারকরা নিরুদ্দেশ হয়ে যেত।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানায় রুজু হওয়া একটি মামলার সূত্র ধরে এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে কমপক্ষে ৬ জন বিত্তশালীকে তারা এই প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছে এবং প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়