নির্বাচনী আইন প্রণয়নসহ ৫ দফা প্রস্তাব এনপিপির

আগের সংবাদ

বদলে গেছে ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’

পরের সংবাদ

ভোট উৎসবে সরগরম নারায়ণগঞ্জ : আইভীর প্রচারণা জমজমাট তৈমূর শিবিরে অজানা শঙ্কা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এস এম মিজান : আর একদিন পরই রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ভোটযুদ্ধ। আজ মধ্য রাত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হচ্ছে দীর্ঘ দুই সপ্তাহের টানা প্রচার-প্রচারণা। বর্তমানে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এ উপলক্ষে নগরীতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সরগরম হয়ে উঠেছে শহরের অলিগলি। চায়ের দোকানের আড্ডায় হিসাব কষছেন ভোটাররা। নির্বাচন কমিশনও শেষ করে এনেছেন ভোটের সব প্রস্তুতি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা- কে হচ্ছেন বহুল আলোচিত এই শিল্প নগরীর পিতা।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন এবার অন্যবারের চেয়ে একদম আলাদা। এবারের নির্বাচনে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কোনো অজানা আতঙ্ক নেই। কোনো শঙ্কা কাজ করছে না। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ছিল একেবারেই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর। এখন পর্যন্ত অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনা না ঘটায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও স্বস্তি বিরাজ করছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, নাসিক নির্বাচনে সাধারণ মানুষ নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারবেন। কোনো সহিংসতা বা কারচুপির সুযোগ নেই। এ পর্যন্ত নির্বাচনের আলামতও ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। নির্বাচনের আগে সংঘাত সহিংসতার কোনো অভিযোগ আসেনি। প্রধান দুই প্রার্থীর কথার লড়াইয়ে যদিও কিছুটা উত্তাপ বেড়েছে। অনেকে বলছেন, এটি নির্বাচনের সৌন্দর্য।
কথা হয় নগরীর চাষাঢ়া মোড়ের মুদি দোকানি মোজাম্মেল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন পরিস্থিতি গতবারের তুলনায় এবার ভিন্ন। গতবার সেলিনা হায়াৎ আইভী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। এটি আগে থেকে বোঝা যাচ্ছিল। এবার দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামী লীগের সংকট কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত আইভীর ভাগ্যে কী জুটবে তা বলা মুশকিল। একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, আইভী-তৈমূরের শোডাউন দেখে বোঝার উপায় নেই, কী ঘটতে যাচ্ছে নির্বাচনে। দুজনের নির্বাচনী প্রচার জনসমাবেশ প্রায় একই রকম।

আওলাদ হোসেন নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, আমরা চাই নারায়ণগঞ্জে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। ভোটারদের যোগ্য প্রার্থী বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ ভালো। তবে সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কোনো প্রার্থীর সমর্থকদের গ্রেপ্তার ও তাদের বাড়ি তল্লাশি চালানো হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে। তবে প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, তারা যেন নিরপেক্ষ আচরণ করে। নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ যেন থাকে। ১২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মানিক সমাদ্দার বলেন, নির্বাচনের ফলাফলে কোনো চমকপ্রদ ঘটনা ঘটবে কিনা, তা বলা না গেলেও নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক, মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারুক, এটাই এখন আমাদের চাওয়া।
আইভীর প্রচারণা চাঙ্গা : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে এখনো স্থানীয় প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমান অনুসারীদের ভোটের মাঠে নামতে দেখা যায়নি। তবুও প্রচার-প্রচারণায় চাঙ্গাভাব আইভী শিবিরে। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ এলাকার ১৬নং ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান আইভী। এ সময় হাজার হাজার মানুষকে স্বতঃস্ফূূর্তভাবে অংশ নিয়ে নেচে গেয়ে তাদের আনন্দ উল্লাস করতে দেখা যায়। এই ওয়ার্ডের দেওভোগ, বেপারিপাড়া, এক নং বাবুরাইল, দুই নং বাবুরাইল, জল্লারপাড়াসহ বিভিন্ন মহলায় গেলে উঁচু ভবন থেকে নারীরা ফুল ছিটিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। অনেকে তাকে ফুলের নৌকা উপহার দেন। এ সময় তার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আফারোজা হাসান বিভা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল কাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত প্রমুখ ছিলেন। কেমন সাড়া পাচ্ছেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেমন সাড়া পাচ্ছি আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন। আমার পেছনে জনতার ঢল। এতেই বোঝা যায় তারা আমার উন্নয়নের সমর্থক, শেখ হাসিনার উন্নয়নের সমর্থক। নৌকার জোয়ার তৈরি হয়েছে। এই জোয়ারে ইনশাআল্লাহ ১৬ ডিসেম্বর নৌকা জয়ী হবে।
আইভীর অনুসারীরা বলছেন, নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে তারা সাধারণ ভোটার ও আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। শামীম ওসমানের অনুসারীরা শেষমেশ পক্ষে কাজ না করলেও আইভীই জিতবেন। আইভী নিজেও তার জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ প্রকাশ করে বলেছেন, সাধারণ জনগণ তার সঙ্গে আছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা বলেন, শামীম ওসমানের সংবাদ সম্মেলনের পর চার দিন পার হয়েছে। তার লোক কাউকেই প্রচারণার মাঠে দেখিনি। তার অনুসারীদের অবস্থান আগে যা ছিল, এখনো তাই। পদ-পদবিধারী আওয়ামী লীগ নেতাদের নৌকার প্রচারণায় না পাওয়া গেলেও দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা আইভীর সঙ্গে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রচার-প্রচারণায় ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। নির্বাচনে আমরাই জিতব।
তৈমূর শিবিরে শঙ্কা : গত সোমবার তৈমূর আলমের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নির্বাচন সমন্বয়কারী মনিরুল ইসলাম রবিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবি সিদ্ধিরগঞ্জে হাতি প্রতীকের পোলিং এজেন্টের তালিকা তৈরির কাজ করছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ ওই তালিকা নিয়ে গেছে বলে তৈমূরের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। মূলত রবিকে গ্রেপ্তারে পরই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অজানা শঙ্কা ভর করে। তাদের আশঙ্কা, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জয়ী করতে ভোটের ঠিক আগমুহূর্তে তাদের ওপর ধরপাকড় বাড়বে। পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার করা হবে। জেলা বিএনপি সূত্র জানায়, রবিকে গ্রেপ্তারের পর অন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপির অনেক নেতা কিছুটা নিরাপদ দূরত্বে থেকে তৈমূরের পক্ষে কাজ করছেন। এ অবস্থায় কিছুটা কৌশলী হয়ে তৈমূর শিবির সিদ্ধান্ত নেয়, এবার এজেন্টদের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দেবে না তারা। ভোটের দিন সরাসরি ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবেন এজেন্টরা। তাদের আশঙ্কা, তালিকা জমা দিলে ওই তালিকা ধরে গ্রেপ্তার শুরু করতে পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
প্রচারণা চলাকালীন গতকাল বৃহস্পতিবার তৈমূর আলম খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, এখন পর্যন্ত আমার ১৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে গভীর রাতে আমার কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এ কাজ করছে। এ সময় তিনি বিদেশি দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানান। তৈমূরের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ টি এম কামাল বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের পুলিশ হয়রানি করছে। আমাদের নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। আমি একটা ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছি। যে কোনো সময় আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের কিছু করার থাকে না।
সতর্ক নির্বাচন কমিশন : আগামী মাসে শেষ হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনই হতে যাচ্ছে এই কমিশনের মেয়াদে শেষ নির্বাচন। ইউপি নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতায় প্রশ্ন ওঠে ইসির দায়-দায়িত্ব নিয়ে। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক চায় না ইসি। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ একাধিকবার নির্বাচনী এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছেন অন্য কমিশনাররা। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে এই নির্বাচনটি শেষ করতে চায় তারা। এরই মধ্যে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি। বুধবার নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। এ সময় তিনি প্রিসাইডিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে দুবার নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করেন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। একবার পরিদর্শন করেছেন আরেক কমিশনার শাহাদত হোসেন চৌধুরী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো শঙ্কা নেই। অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা। কমিশনারদের বারবার এই পরিদর্শন নির্বাচনকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা সব নির্বাচনই গুরুত্ব দিয়ে করেছি। নারায়ণগঞ্জ ঘরের কাছে বলে আমরা বেশি যেতে পেরেছি। বেশি টেককেয়ার করতে পারছি। আমিও দুবার গেছি। অনেকেই অনেকবার গেছেন। নির্বাচন নিয়ে আমরা সতর্ক আছি। এরপরও যে সহিংসতা হবে না এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না। রাস্তার মধ্যে কেউ যদি কিছু করে ফেলে, তা হলে তো আমরা কিছু করতে পারব না।
ইসি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ জানুয়ারি রবিবার এ সিটিতে ভোটগ্রহণ হবে। এ সিটিতে মোট ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৬ জন ও নারী ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১৯২টি ও ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৩৩টি। নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে ৫টি রাজনৈতিক দল ও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী। সংরক্ষিত ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৩২ জন এবং ২৭টি সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১৪৮ প্রার্থী।
প্রশাসনিক প্রস্তুতি : ভোটের দুদিন আগে থেকে ভোটগ্রহণের পর দিন পর্যন্ত প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং তিনজন পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৫ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে চার পুলিশ ও আনসারসহ ১৬ জন দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি মোবাইল ফোর্স, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১ করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতি থানায় রিজার্ভ ফোর্স রাখা হবে। এ ছাড়া ১৪ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়