রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের আগুন, পুড়ল সহ¯্রাধিক ঘর

আগের সংবাদ

তিন জট থেকে মুক্তির প্রত্যাশা > নাসিক নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মতামত : জলজট, যানজট ও আবর্জনা জট নারায়ণগঞ্জবাসীর গলার কাঁটা

পরের সংবাদ

আগৈলঝাড়ায় সেতু সংস্কারের দাবি : ঝুঁকি নিয়ে ৪ গ্রামের মানুষের পারাপার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : আগৈলঝাড়ায় ৩০ বছর আগে নির্মিত একটি সেতুর বেহাল দশার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শত শত শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। জরাজীর্ণ সেতুটি ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের উদ্যোগে নেয়া হয়নি। প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের পশ্চিম বাগধা ও কালারবাড়ি গ্রামের সংলগ্ন খালের ওপর ৩০ বছর আগে এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণের ৮ বছর পর থেকেই সেতুর ওপর সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ধসে যাওয়ায় এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে এটি ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ বিধ্বস্ত এই সেতুটি বিকলাবস্থার কারণে চলাচলের একদম অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের শত শত কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ লোকজন। বিকল্প কোনো যাতায়াত পথ না থাকায়, মরণ ফাঁদ জেনেও পার হচ্ছেন গ্রামবাসীসহ শিশু-বৃদ্ধরা।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির দুই পাশের সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ধসে একপাশ খালের মধ্যে হেলে পড়েছে। সেতুর পাটাতনগুলো ভেঙে যাওয়ার কারণে এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের জন্য মোটরসাইকেল ও ভ্যান চলাচল বন্ধের পথে। প্রতিদিনই সেতুটি পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন একাধিক লোকজন।
সেতুটির বেহাল দশার কারণে উপরের পাটাতন ধসে পড়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি জেনেও পার হচ্ছেন এলাকাবাসী। কিন্তু যোগাযোগের তাগিদে প্রতিনিয়ত সেতু দিয়ে কোনো যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না।
শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুবই করুণ। যে কোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন পথচারীসহ শিক্ষার্থীরা।
বাগধা স্কুল এন্ড কলেজের শত শত শিক্ষার্থী, নারায়ণখানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও উপজেলা সদরে চলাচলের একমাত্র সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ স্থানীয়রা। এছাড়া জমি থেকে ধান আনার জন্য কোনো গাড়ি চলাচল করতে না পারায় কৃষকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভাঙা সেতু দিয়ে পার হচ্ছেন।
পশ্চিম বাগধা গ্রামের বাসিন্দা কাওছার মোল্লা বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে নির্মিত এই সেতুটির সিমেন্টের তৈরি পাটাতনগুলো ধসে যাওয়ায় সেতুটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। সেতুটির শুরুতেই পাটাতনগুলো না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভাঙা সেতুর ওপর কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে পার হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।
জয়রামপট্টি গ্রামের মিন্টু মিয়া জানান, সেতুটিতে মানুষ উঠলে কখনো ডানে অথবা কখনো বামে কাঁত হয়ে যায়। অথচ সেতুটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো মাথাব্যথা নেই। কয়েক বছর ধরে শুনি সেতুটি মেরামত করা হবে, কিন্তু মেরামত কবে হবে তা কেউই বলতে পারে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রুস্তুম মিয়া জানান, সেতুটি সংস্কার হলে বাগধা, আমবৌলা, জয়রামপট্টি ও পার্শ্ববর্তী সীমান্ত কোটালীপাড়া এলাকার মানুষসহ আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে। সেতুটি যাতে দ্রুত সংস্কার করা যায় সে বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করব।
বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি বলেন, পশ্চিম বাগধা কালারবাড়ি গ্রামের পাশে অবস্থিত খালের ওপর এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অচিরেই এ সমস্যার সমাধান করা হবে। যাতে করে সেতুটি সংস্কার হলে এই এলাকার মানুষসহ আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শিবলু কর্মকার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির অবস্থা খুবই বেহাল। সেতুটি সরজমিন পরিদর্শন করে নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়