সোনারগাঁওয়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি

পরের সংবাদ

মেলান্দহে মা-মেয়ে খুন : ধর্ষণে বাধা দেয়ায় কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধা ও বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্বপ্নাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন অটোরিকশাচালক মো. আনোয়ার হোসেন (৩৬)। এতে বাধা দেয়ায় স্বপ্না ও তার মা মোছা. জয়ফুল বেগমকে (৫০) কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান তিনি।
জামালপুরের মেলান্দহে চাঞ্চল্যকর মা-মেয়ে জোড়া খুনের মামলায় খুনি মো. আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। গতকাল রবিবার দুপুরে মালিবাগের সিআইডির প্রধান কার্যালয় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে থাকেন জয়ফুল বেগমের দুই ছেলে- মো. হাসান চৌধুরী (২৮) ও মো. খালেক চৌধুরী (২৬)। গত ১ জানুয়ারি তারা মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোন দেন। তবে মা ফোন না ধরায় পরে তারা ফোন করেন বোন স্বপ্নাকে। তবে বোনও কল রিসিভ না করায় চিন্তায় পরে যান দুই ভাই। এমন পরিস্থিতিতে মামা মানিক মিয়াকে বিষয়টি জানালে বোনের বাড়িতে যান তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে বাড়ির দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় তার। তখন প্রতিবেশীদের সহায়তার ঘরের দরজা খুলে প্রবেশ করলে পৃথক দুটি কক্ষে বোন ও ভাগ্নির গলাকাটা লাশ দেখতে পান তিনি। পরে মো. মানিক মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি এলআইসি শাখা মামলাটির তদন্ত শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, তদন্তের পর আসামি আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে ঘটনার যোগসূত্র পাওয়া যায়। পরে গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, প্রায় পাঁচবছর আগে নারায়ণগঞ্জে অবস্থানকালে মামলার ভুক্তভোগী স্বপ্নার সঙ্গে আনোয়ার হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, এর মধ্যেই স্বপ্না তার বাড়িতে চলে যান। তবে সম্প্রতি প্রবাসী দুই ভাই আনোয়ার হোসেন ও জহুরুল চৌধুরীর বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করলে সেখানে কাজ করতে আসেন আনোয়ার। ঘটনার দিন গত ১ জানুয়ারি স্বপ্না আনোয়ারকে ডেকে বলেন, মা ও তার প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করছে। কাজ শেষ করে যেন সে তাদের জন্য ওষুধ নিয়ে আসে। এরই মধ্যে অবৈধ যৌন লালসা পূরণের জন্য ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। তারই অংশ হিসেবে কাজ শেষে সন্ধ্যার পর আনোয়ার তাদের বাড়ি গিয়ে স্বপ্নার সঙ্গে গল্প শুরু করেন। একপর্যায়ে রাতের খাবার শেষে মাথা ব্যথার ওষুধ চাইলে দুজনকে ৩টি করে ঘুমের ট্যাবলেট দেয়া হয়। ট্যাবলেট খেয়ে কিছুক্ষণে মধ্যে দুজন ঘুমিয়ে পড়েন। তখন আনোয়ার হোসেন অচেতন স্বপ্নাকে কোলে করে তার মায়ের পাশের কক্ষে নিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে স্বপ্না জেগে ওঠেন। তখন আনোয়ার জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে স্বপ্না বাধা দেয়। আনোয়ার ব্যর্থ হয়ে ঘরে থাকা ধারাল বঁটি দিয়ে স্বপ্না ও তার মা জয়ফুল বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তা ধর বলেন, বিয়ে বিচ্ছেদের পর পার্লারের কাজ শিখতে নারায়ণগঞ্জে বসবাস শুরু করেন স্বপ্না। এ সময়ই অটোচালক আনোয়ারের সঙ্গে সখ্যতা থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে স্বপ্না গ্রামে চলে যান। এরপর ৭৫ হাজার টাকায় অটোরিকশা বিক্রি করে স্বপ্নার গ্রামে গিয়ে তাদের বাড়ি নির্মাণের শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন আনোয়ার। এক সপ্তাহের মধ্যেই ডাবল মার্ডার রহস্য উদ্ঘাটন সিআইডি এলআইসি শাখার উল্লেখযোগ্য সাফল্য বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়