গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সরকার

আগের সংবাদ

ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ! জিনোম সিকুয়েন্সিং বাড়ানোর তাগিদ > সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে : বিশেষজ্ঞদের মত

পরের সংবাদ

বিশ্ববাজারে চাহিদা বাড়ছে মেহেরপুরের বাঁধাকপির

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রুপক, মেহেরপুর থেকে : মেহেরপুরে উৎপাদিত কপি জেলাসহ দেশের অনেক এলাকার চাহিদা পূরণ করে আসছে বহু বছর ধরে। শুধু নিজের দেশেই নয়, বিশ্ববাজারেও দিন দিন এ জেলার কপির চাহিদা বাড়ছে। মেহেরপুরের বাঁধাকপি এখন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে যাচ্ছে। এই রপ্তানিতে সবজি চাষে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ। বিদেশে চাহিদা বাড়ায় এবং আর্থিক লাভ বিবেচনায় নিরাপদ সবজি উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নিরাপদ সবজি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে মেহেরপুর। এ জেলায় সারাবছরই সব ধরনের সবজি চাষ হয়। এসব সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশে ও বিদেশে। বিদেশে বেশি করে রপ্তানি করতে পারলে একদিকে চাষিরা লাভবান হবেন অন্যদিকে অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা। এ লক্ষ্যে জেলার চাষিরা এক হাজার হেক্টর জমিতে কীটনাশক সহনশীল সবজি বাঁধাকপি চাষ করেছেন। গত বছর এশিয়ার তিনটি দেশে ৫শ টন বাঁধাকপি রপ্তানি হয়েছিল। চলতি মৌসুমেও চারটি দেশ ১ হাজার ৫শ টন কপির চাহিদা দিয়েছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। চাহিদা অনুযায়ী মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হবে নিরাপদ সবজি। এখন রপ্তানিকারকরা কৃষকদের কাছ থেকে কপি সংগ্রহ করছেন। জমি থেকে বাঁধাকপি সংগ্রহ করে সাদা কাগজে মুড়িয়ে বস্তায় ভরে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। রপ্তানিকারকদের কাছে কপি বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এক বিঘা জমিতে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন চুক্তিবদ্ধ বেশ কয়েকজন কৃষক।
নাজ এন্টারপ্রাইজ ও এগ্রো ফ্রেশসহ বেশ কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জমি থেকে বাঁধাকপি সংগ্রহ শুরু করেছে। কৃষি অফিসের সহায়তায় তারা মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ থেকে বাঁধাকপি সংগ্রহ করছেন।
সরজমিন গাংনীর কোদাইলকাটি গ্রামের আজগর আলীর কপিক্ষেতে গিয়ে জানা যায়, কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবং রপ্তানিকারদের নির্দেশনায় বাঁধাকপি ক্ষেত থেকে সংগ্রহের আগেই নিরাপদ হিসেবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। কপি কাটার পর সাদা কাগজে মুড়িয়ে নেট বস্তায় ভরা হয়।
কৃষক বলেন, প্রতিবছরই শীতকালের সবজি চাষে আমাদের লোকসান হয়। রপ্তানি করতে পারলে আমরা সবজি চাষ বৃদ্ধি করতে পারব। একই কথা বলেন সবজি গ্রামখ্যাত সাহারবাটির তৈয়ব আলী, তবারক হোসেন, বেল্টু মিয়াসহ অনেকেই। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সবজির চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান বেড়েছে বলে জানান শ্রমিক সর্দার মো. জনি।
এগ্রো ফ্রেশের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজার রুবেল আহমেদ বলেন, এ বছর চুক্তিবদ্ধ ৪৫ জন কৃষকের ৭৫ একর জমিতে নিরাপদ উপায়ে চাষ করা হয়েছে বাঁধাকপি। চারা রোপণের পর থেকে কপি সংগ্রহ পর্যন্ত নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে রপ্তানি উপযোগী করা হয়। গত বছর মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হয়েছিল। এ বছর নতুন দেশ হিসেবে তাইওয়ান ও ইন্দোনেশিয়ায়ও রপ্তানি করা হচ্ছে।
নাজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নাজমুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিকে আমাদের জেলায় উৎপাদিত বাঁধাকপির মূল্য থাকলেও শেষের দিকে এসে কৃষকরা একেবারেই মূল্য পাননি। অনেক সময় পরিবহন খরচও ওঠে না। এখন রপ্তানি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তবে সরকারিভাবে অন্যান্য দেশে এর বাজার তৈরি করলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার বলেন, বিশ্ববাজারে এ জেলার সবজির চাহিদা বাড়ায় চাষিদের নানাভাবে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়