মেডিকেল বোর্ড : লিভার সিরোসিসে খালেদার ব্লিডিং হচ্ছে

আগের সংবাদ

সর্বত্র শোকের ছায়া : থেমে গেল জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের চরণযুগল

পরের সংবাদ

চেয়ারম্যানের মারধরে গ্রাম পুলিশের মানবেতর জীবন : ঝিনাইগাতী

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে : ঝিনাইগাতীতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের আঘাতে পঙ্গু হয়ে সাদা মিয়া (৪৫) নামে এক গ্রামপুলিশ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী সাদা মিয়ার। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। পরিবারের সদস্যরা তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। সাদা মিয়া উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের নাচনমহরী গ্রামের মৃত কলিম উদ্দিন চৌকিদারের ছেলে। ২ ছেলে, ৫ মেয়েসহ ৭ সদস্যের পরিবার সাদা মিয়ার। বাড়ি ভিটার এক খণ্ড জমি আর গ্রামপুুলিশের চাকরি ছাড়া সহায়-সম্বল বলতে তার আর কিছুই নেই।
সাদা মিয়া জানান, ২০২০ সালের ১৯ জুলাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। গুরুচরনদুধনই বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে চাল বিতরণের সময় ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও চেয়ারম্যান জহুরুল হক ৬-৭ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবেল মাহমুদ ঘটনাস্থলে আসার সংবাদ শুনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক তার লোকজন দিয়ে গুদামে রাখা অতিরিক্ত চাল দ্রুত সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে সিøপের তুলনায় অতিরিক্ত চাল পান গুদামঘরে। পরে তিনি দাঁড়িয়ে থেকে অতিরিক্ত চালগুলো উপস্থিত দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করেন। নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ চাল বিতরণ শেষে চলে এলে চেয়ারম্যান জহুরুল হক তার কথায় আমি চাল সরিয়ে না নেয়ার অপরাধে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাকে মারধর করেন। এতে আমি মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হই। এরপর থেকে আমি চিকিৎসা করে আসছি। লক্ষাধিক টাকা ঋণধার করে চিকিৎসার কাজে ব্যয় করেও আমার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হয়ে দিনে দিনে অবনতি হয়ে পঙ্গু হয়ে পড়েছি। বর্তমানে আমি কোনো হাঁটাচলা করতে পারছি না। টাকা-পয়সার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছেন না তিনি। পরিবারের সদস্যরাও তাকে রেখে অন্যত্র চলে গেছেন। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। সাবেক ইউএনও রুবেল মাহমুদ অভিযোগ পাওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও পরে এ বিষয়ের আর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামপুলিশ সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে থেমে যায়।
কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, সাদা মিয়াকে আমি মারধর করিনি। স্থানীয় কয়েকজন ইউপি সদস্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। সাদা মিয়া তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাকে মারধরের ঘটনাটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তিনি আরো বলেন, সাদা মিয়া ৫-৭টি সিøপের চাল উত্তোলন করলে তাকে আমি শুধু ধমক দিয়েছিলাম। বর্তমানে সাদা মিয়া ঢাকা উত্তরায় মেয়ের জামাইয়ের বাড়িতে বিনা চিকিৎসায় মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়