ওয়ারী থেকে উদ্ধার : মারা গেল সেই নবজাতকটি

আগের সংবাদ

বিদ্রোহের ভারেই নৌকাডুবি

পরের সংবাদ

বিনিয়োগ সম্মেলনে সালমান এফ রহমান : বদলে যাওয়া বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের বড় বাজার

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ বিনিয়োগের সফলতা পেতে পারে। ফলে এদেশে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের বড় বাজার। পাশাপাশি (আমাদের) পাশে ভারত ও চীন আছে। বাংলাদেশে উৎপাদন করে বিনিয়োগকারীরা সেই সুবিধা নিতে পারেন। সাড়ে পাঁচ বছর পর গতকাল রবিবার থেকে রেডিসন ব্লæ ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন। সম্মেলন অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও বন্দরসহ বড় বড় বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। অবকাঠামোগত এসব উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশে এখন পুরোপুরি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১২ বছরে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে পেরেছি। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ আসছে। বাড়ছে দেশি বিনিয়োগও। একই সঙ্গে দেশে বিদেশি বিনিয়োগের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, দেশ নানা দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, মোবাইল ব্যবহারে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ। গত কয়েক বছর ৬ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ বেড়ে ৪১১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু গড় আয়ও বেড়ে দুই হাজার ৫৫৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা আগের হিসাবে ছিল দুই হাজার ২২৭ ডলার। দেশের অভ্যন্তরে কৃষি, শিল্প ও সেবাসহ সব খাত এগিয়ে যাচ্ছে। সবজি উৎপাদনে আমরা বিশ্বে তৃতীয়, চাল উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছি। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বন্দরসহ বহু বড় বড় প্রকল্পের কাজ শেষের পথে। অবকাঠামোগত এসব উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশে এখন পুরোপুরি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। এখানে ব্যবসা করে বিদেশে মুনাফা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এ দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন। তৈরি পোশাক, কৃষি

প্রক্রিয়াজাতকরণ, আইসিটি, প্লাস্টিক, চামড়াজাতীয় পণ্যসহ বাংলাদেশে কয়েকটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এ দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন হচ্ছে। বাংলাদেশ আগের মতো নেই। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক বাংলাদেশ। যেখানে বিনিয়োগে সব ধরনের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, সৌদি আরবের যোগাযোগমন্ত্রী সালেহ নাসের আল জাসের প্রমুখ।
ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে

বিনিয়োগ বাড়াতে যোগাযোগ, পর্যটন, শিল্প, প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্ব দেবে ভারত। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পীযূষ গয়াল বলেন, ঢাকা-দিল্লি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। ভারত যে কোনো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ ভারত নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরো বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক জোন করছে বাংলাদেশ। এটা অনেক ভালো উদ্যোগ। মিরসরাই ও মোংলা ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করছে ভারত। অন্যান্য অঞ্চলেও বিনিয়োগ বাড়াবে ভারত।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ বিনিয়োগ সম্মেলনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ ১৫টি দেশ থেকে শতকোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথোরিটি (বেজা), বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনস অথোরিটি (বেপজা), বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটি (বিএইচটিপিএ), পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ (পিপিপিএ), ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) এই সম্মেলনে সহযোগিতা করেছে।
দুপুরে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনের এক সেশনে ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস। তিনি বলেন, দেশের তুলনামূলক মজুরি, কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান, স্থিতিশীল নীতি ও বিনিময় হার, বিপুল তরুণ জনসংখ্যা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে। সরকার বিডা, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ তৈরি করেছে এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে।
মুখ্য সচিব বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল, কিন্তু জাতি তখন থেকে বিপুল অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করেছে এবং বিনিয়োগের একটি বিস্ময়কর সুযোগ তৈরি করেছে। 
সম্মেলনের প্রথম দিন বিজনেস সেশনে ‘ট্রান্সপোর্ট এন্ড লজিস্টিক : দ্য রাইট মুভ’ শীর্ষক আলোচনা হয়। এছাড়া ক্যাপিটাল মার্কেট : দ্য রাইজিং টাইগার, পাওয়ার এন্ড এনার্জি : চার্জ অ্যাহেড, লিগাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস : এনশিউরিং সাসটেইন গ্রোথ, এগ্রোবিজনেস : গ্রোথ বাই ন্যাচার, লেদার এন্ড লেদারগুডস : স্টেপ ইট আপ, রেডিমেড গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল : ওয়েভিং দ্য ওয়ে, ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিকস ম্যানুফ্যাকচারিং এন্ড প্লাস্টিক গুডস : রাইড দ্য কারেন্ট-এসব বিষয়ে সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার প্লেনারি সেশনে রয়েছে ইনভেস্টমেন্ট কমপিটিটিভনেস এন্ড বিজনেস এনভায়রনমেন্ট : রেসিং নিউ হাইস্ট ইন দ্য নিউ নরমাল শীর্ষক আলোচনা। দুই দিনই থাকছে বিজনেস নেটওয়ার্কিং সেশন। দ্বিতীয় দিন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থাকবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়