ওয়ারী থেকে উদ্ধার : মারা গেল সেই নবজাতকটি

আগের সংবাদ

বিদ্রোহের ভারেই নৌকাডুবি

পরের সংবাদ

গবেষণা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনকালে মুনতাসীর মামুন : মুক্তিযুদ্ধে ৫ লাখ নারী ধর্ষণের শিকার

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধের সময়ে দুই লাখ নয়, অন্তত পাঁচ লাখ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। গতকাল রবিবার বিকালে ‘বিষয় মুনতাসীর মামুন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মুনতাসীর মামুনের ৭০তম জš§দিন উপলক্ষে তার ছাত্র, বন্ধু ও সুহƒদদের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তার কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে ১২টি গবেষণা গ্রন্থের মোড়ক উšে§াচন করা হয়।
এ সময় মুনতাসীর মামুন বলেন, আমরা বিভিন্ন টর্চার সেল গণকবর নিয়ে সার্ভে করেছি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এটি করার কথা ছিল। ৩০টি জেলায় জরিপ চালিয়ে আমার মনে হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমরা কিছুই জানি না। বলা হয়, ৩০ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা দেখেছি, এই সংখ্যাটা অনেক বেশি। শরণার্থী শিবিরের মধ্যে মহামারির কারণে ৫ লাখ মানুষ মারা গেছেন। আমি বলব, দেশের প্রতিটা বর্গমাইলে গণহত্যা হয়েছে। তখনকার সময়ে নির্যাতন ৪০ রকমের ছিল। চোখের পাতায় এসিড ঢেলে দেয়া থেকে শুরু করে নারীদের গোপন অঙ্গ কেটে দেয়ার মতো ঘটনাও আছে। এখনো আমরা বিভিন্ন বধ্যভূমি থেকে কঙ্কাল পাচ্ছি।
সব শাসকই ইতিহাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে উল্লেখ করে মুনতাসীর মামুন বলেন, যারা ইতিহাসের ছাত্র, তাদের বোধটা কম। একজন ইতিহাসের ছাত্র বা শিক্ষকের কাজ হলো, শাসকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে ইতিহাসের চর্চা করা।
অনুষ্ঠানে প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের ওপর আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আনিসুল হক ও গবেষক মামুন সিদ্দিকী। বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কবি তারিক সুজাত। আয়োজনের শুরুতে রেজওয়ান হিরা পরিচালিত মুনতাসীর মামুনের জীবন ও কর্ম নিয়ে ‘আমাদের মুনতাসীর মামুন’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। মুনতাসীর মামুনকে নিয়ে লেখা কবিতা পড়ে শোনান কবি আসাদ মান্নান।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা বলেন, মুনতাসীর মামুনের পায়ের কোনো স্থবিরতা নেই। কারণ ইতিহাসের পায়ে কোনো স্থবিরতা থাকে না। সেই ৬৭-৬৮ সাল থেকে আমি তাকে দেখেছি, কখনো দৌঁড়াতে দেখি নাই, পালাতে দেখি নাই, শুধু হাসতে দেখেছি।
মুনতাসীর মামুনের জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রকাশিত বইগুলোর হলো- ড. মাহবুবর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনীর বহুমাত্রিক পাঠ: মুনতাসীর মামুনের বঙ্গবন্ধু চর্চা’, ‘বহুমাত্রিক মুনতাসীর মামুন’ ও ‘মুনতাসীর মামুনের স্থানীয় ইতিহাস চর্চা’, ড. মুর্শিদা বিনতে রহমানের ‘সিভিল সমাজ ও রাষ্ট্র দর্শন : মুনতাসীর

মামুনের বাংলাদেশ চর্চা’, ড. আহম্মেদ শরীফের ‘রাষ্ট্র ও প্রজšে§র উত্তরাধিকার : মুনতাসীর মামুনের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চা’, ড. চৌধুরী শহীদ কাদেরের ‘মুনতাসীর মামুন কীভাবে আমাদের হলেন’, মামুন সিদ্দিকীর ‘পূর্ববঙ্গের জাগরণ : মুনতাসীর মামুনের পূর্ববঙ্গ চর্চা’ ও ‘ঐতিহাসিকের মানসজগৎ : মুনতাসীর মামুনের সাক্ষাৎকারগুচ্ছ’, তপন পালিতের ‘আন্দোলন, সংগঠন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে মুনতাসীর মামুন’, সোনালী ইসলামের ‘মেঘবতীর খোঁজে মুনতাসীর মামুন’, ড. মুর্শিদা বিনতে রহমানের ‘মুনতাসীর মামুন গ্রন্থপঞ্জি’, রেহানা পারভীনের ‘ঢাকার ইতিহাস চর্চা ও মুনতাসীর মামুন’।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়