কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকার মিরপুরে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) ৯টি প্লট বরাদ্দে সরকারের প্রায় ৭০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে সংস্থাটির উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ দপ্তর।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা মিরপুর-১ নম্বর সেকশনে চিড়িয়াখানা রোডের শুরুতে ৯টি বাণিজ্যিক প্লটের অবস্থান। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি কাঠা কমপক্ষে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা। কিন্তু জাগৃকের বরাদ্দ নির্দেশিকা উপেক্ষা করে এসব প্লট আবাসিক হিসেবে প্রতি কাঠা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫০ লাখ টাকায়। ফলে এই ২৫ দশমিক ৭৬ কাঠা জমির বাজারমূল্যের চেয়ে কমপক্ষে ৭০ কোটি টাকা সরকারের ক্ষতিসাধন হয়েছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ডিভিশন-১ এর তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিলা খানম প্রধান কার্যালয়ে বাণিজ্যিক প্লটের একটি প্রতিবেদন পাঠান। সেখানে মোট ৪২টি বাণিজ্যিক প্লটের তালিকায় রয়েছে এই ৯টি প্লট। তৎকালীন চেয়ারম্যান খন্দকার আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ওই বছরের ২০ মার্চ বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ সংস্থার আরো কিছু প্লটসহ সব প্লট জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দের সিদ্ধান্তের জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরে ৪২টি বাণিজ্যিক প্লটসহ মোট ৬৩টি প্লট বিধিমালা অনুযায়ী নিলামে তুলে বিক্রি করার জন্য চিঠি দেয়া হয়।
এরই মধ্যে মাঝখান থেকে ৯টি প্লটের মোট ২৫ দশমিক ৭৬ কাঠা আবাসিক মূল্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গৃহায়ণের ১৯৭তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিরপুর সেকশনের ৮০ ফুটের ঊর্ধ্বে সড়কের পাশের আবাসিক জমির মূল্য কাঠাপ্রতি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সে হিসাবে এ জমির দাম ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার মতো হয়। কিন্তু বাস্তবে এখানে কাঠাপ্রতি জমির বর্তমান বাজারমূল্য কমবেশি ৩ কোটি টাকার মতো। সে হিসাবে জমির মোট মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৮৩ কোটি টাকা। কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখা ও আইন শাখাকে কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্টরা বাণিজ্যিক প্লটকে আবাসিক করে তা বরাদ্দ দিয়ে সরকারের কমপক্ষে ৭০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছেন।