পুলিশের স্থাপনায় হামলার ঘটনায় মামলা : আসামি অজ্ঞাত কয়েক হাজার

আগের সংবাদ

‘ওমিক্রন’ নিয়ে সতর্ক সরকার

পরের সংবাদ

টিকাদানে শ্লথগতিই দায়ী : হু > চতুর্থ ঢেউয়ের ছোবলে খাবি খাচ্ছে ইউরোপ!

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দেড় বছরের বেশি সময়জুড়ে বিশ্বব্যাপী তাণ্ডব চালানোর পর করোনা ভাইরাস আপাত কিছুটা নমিত হয়েছে। মহাদেশগুলোতে আছড়ে পড়া মহামারির ঢেউ সরে যেতে শুরু করেছে আবারো। দিকে দিকে শুরু হয়েছে টিকার জয়জয়কার। ঘরবন্দি মানুষগুলো বাইরে বেরিয়ে এসেছে টিকার সুরক্ষা নিয়ে। বাজারে এসে গেছে মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট পর্যন্ত। ফলত দীর্ঘদিনের মহামারিজনিত জড়তা ঝেড়ে ফেলে ধীরে ধীরে ফের সচল হতে শুরু করেছে এসব অঞ্চলের জনমানুষের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও জনজীবন। সচেতনতা আর টিকার মতো প্রতিরোধের মুখে বিশ্বজুড়ে করোনার প্রলয়যুগের অবসান এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
কিন্তু এই বাস্তবতার ঠিক উল্টো একটি চিত্র দেখা যাচ্ছে ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকায়। মহামারির চতুর্থ ঢেউয়ে রীতিমতো খাবি খাচ্ছে

এ দুই মহাদেশ। কোভিড পরিস্থিতির ওপর নজরদারি রাখা সংস্থাগুলোর খতিয়ানে, গত দুই সপ্তাহে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত মহাদেশ ইউরোপ। সর্বশেষ একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তে শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় যে দেশগুলোর নাম শোভা পাচ্ছে তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র (৩০,৮৫৩) ছাড়া বাকি বেশির ভাগই ইউরোপীয়, যেমন- যুক্তরাজ্য (৪৬,৬৫৪), রাশিয়া (৩২,৮৬৬), পোল্যান্ড (২৮,১৪৩), নেদারল্যান্ডস (২২,১২৮), চেকোস্লাভিয়া (১৮,০৪৬), ইউক্রেন (১৭,৮৭৩) তুরস্ক (২৪,৪৬৭), ফ্রান্স (৩৩,৩২৯), জার্মানি (৭৪,৫৭৯), অস্ট্রিয়া (১৩,৫৯২) ও ইতালি (১৩,৭৫৬)। খবর রয়টার্স ও এএফপি।
ইউরোপজুড়ে করোনার এই চতুর্থ ঢেউয়ে ‘গভীর’ উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ড. হ্যান্স ক্লুগ সতর্ক করে বলেছেন, জরুরি পদক্ষেপ না নিলে আগামী বছর মার্চের মধ্যে রেকর্ড সাত লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। সেখানে অস্ট্রিয়ায় পুরোপুরি লকডাউন চলছে। এর আগে সেখানে যারা টিকা নেয়নি, শুধু তাদের জন্য বিধিনিষেধ দেয়া ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি ঘটার পর বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে সবার ক্ষেত্রেই। সেøাভেনিয়া টিকা না নেয়া লোকজনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে। আংশিক লকডাউন শুরু হয়েছে নেদারল্যান্ডসে।
পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ইংল্যান্ডে। যদিও সেখানকার সরকারের লকডাউন জারির কোনো পরিকল্পনা নেই, তবু বিশ্লেষকরা বলছেন, শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হতে পারে তারা। ড. ক্লুগ বলছেন, শীত মৌসুম, অপর্যাপ্ত টিকা দেয়া এবং অতি-সংক্রামক ডেল্টা ধরনের প্রকোপ সংক্রমণ বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, আমাদের অঞ্চলে কোভিড-১৯ আবারো মৃত্যুর এক নম্বর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রোগের বিরুদ্ধে লড়তে ‘কী করতে হবে তা আমরা জানি’। এক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক টিকাদান ‘শেষ চেষ্টা’ হিসেবে দেখা উচিত। ইউরোপের দেশগুলো কোভিডের সঙ্গে লড়াই করার জন্য মাঝে অনেক দিন সময় পেয়েছিল। কিন্তু তারা সেই সুযোগ নষ্ট করেছে। যেভাবে টিকাকরণ করা উচিত ছিল, তা তারা করতে পারেনি।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত স্পেনে সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয়েছে। সেখানে ৮০ শতাংশ মানুষ দুটি টিকার ডোজই পেয়েছে। কিন্তু জার্মানি এবং ফ্রান্সে সংখ্যাটি আরো অনেক কম। জার্মানিতে দুই ডোজ পেয়েছেন ৬৬ শতাংশ ও ফ্রান্সে ৬৮ শতাংশ মানুষ। রাশিয়ায় টিকাদানের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। মাত্র ৩২ শতাংশ মানুষ সেখানে দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। জার্মানিতে গত দুই সপ্তাহে সংক্রমণ ভয়ানক বেড়েছে। গড়ে ৩০-৩৫ হাজার মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিদিন। গত কয়েক দিনে রাশিয়ায় মারা গেছে ৮ হাজার মানুষ। ইউক্রেনে মারা গেছেন প্রায় দেড় হাজার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়