মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ১২৪

আগের সংবাদ

যোগ্যরা নৌকা পাননি যে কারণে : ‘বিদ্রোহী’ তকমায় মনোনয়ন পাচ্ছেন না জনপ্রিয়রা, আর্থিক কারণেও যোগ্যদের নাম আসছে না কেন্দ্রে

পরের সংবাদ

ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট অক্সি মরফোন এখন ভয়ংকর মাদক : ৪০০ টাকার পাতা এখন ২৮০০ টাকা > কঠোরতার মধ্যেও ছড়িয়ে পড়া নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আজিজুর রহমান জিদনী : ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তদের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হওয়ার কথা থাকলেও মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অক্সি মরফোন (ও-মরফোন)। এ ড্রাগটির দিকে ঝুকে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীরা। চাহিদা বাড়ায় ৪০০ টাকা পাতার ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। তবে ড্রাগটি সংবেদনশীল হওয়ায় নির্দিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদন করার অনুমতি দেয়াসহ এর বিপণন ব্যবস্থা অত্যন্ত কঠোর রাখার পরও কীভাবে তা ছড়িয়ে পড়ছে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ও মুখপাত্র আইয়ুব হোসেন গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, শুধু জিস্কা ফার্মাকে এ ড্রাগটি উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তারা ১০ মিলিগ্রাম পরিমাণে ট্যাবলেট ও ১ মিলিগ্রাম পার এমএল হিসেবে ও-মরফোন ওষুধ বানাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা যদি এ ড্রাগটির অপব্যবহারের কোনো প্রমাণ পান তারা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। আর আমাদের বিষয়টি অবহিত করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে ওষুধ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরাও বিষয়টি এখন খতিয়ে দেখব।
এদিকে গত শুক্রবার বাবুবাজারস্থ মাজারের সামনে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তি অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আলমগীর সরকার (৫৮) ও জাহিদুল ইসলাম (৩৪)। এ সময় তাদের কাছ থেকে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কোতোয়ালি জোনাল টিম ১৩ হাজার ও-মরফোন উদ্ধার করে। অভিযানটির নেতৃত্ব দেন ডিবি কোতোয়ালি জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ।
জানা গেছে, অক্সি-মরফোন হলো মরফিনের একটি এনালগ, যা একটি এনালজেসিক ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ড্রাগটি কাজ করে মূলত সেন্ট্রাল নার্ভ সিস্টেম অর্থাৎ মস্তিষ্কে। এ ড্রাগটি ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তদের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি একটি

ইউফোরিক ড্রাগ, যা মস্তিষ্কে প্রচণ্ড আনন্দ অনুভূতি তৈরি করে। শরীরে সামগ্রিকভাবে দুঃখ-ব্যথা ভুলিয়ে দেয়। বোধহীন অসাড় হয়ে যাওয়ায় ব্যথার অনুভূতি মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করতে পারে না। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এর ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে, যা গোয়েন্দাদের নজরেও এসেছে।
আরো জানা গেছে, এ ড্রাগটি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কতিপয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট পরিমাণ বাজারজাত করার অনুমোদন দেয়। যা নির্দিষ্ট কোম্পানির কাছ থেকে লাইসেন্স ও পরিবহনের রুট দেখিয়ে নিতে হয়। এমনকি কার কাছে বিক্রি করা হবে বা হচ্ছে তারও প্রমাণ রাখতে হয়।
প্রচণ্ড পরিমাণে ভয়ংকর ড্রাগ হওয়ায় কোম্পানিগুলো তাদের প্রচলিত মার্কেটিং চ্যানেল ব্যবহার ছাড়া বিপণন নিষিদ্ধ করেছে। এত নিয়মের পরও সংবেদনশীল এ ড্রাগটি সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের কাছে কি করে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে ডিবি কোতোয়ালি জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, এ জাতীয় ভয়ংকর ড্রাগের চালান আমরাই প্রথম ধরলাম। গ্রেপ্তার আলমগীর সরকার ও-মরফোন সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ করছিল। এ ড্রাগটি মাদক হিসেবে ছাত্রদের কাছে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সংবেদনশীল হওয়ায় এ ড্রাগটির বিষয়ে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরপরও তা কোন চ্যানেলে বাজারে ছড়াচ্ছে তা জানতে আমাদের তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়