মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ১২৪

আগের সংবাদ

যোগ্যরা নৌকা পাননি যে কারণে : ‘বিদ্রোহী’ তকমায় মনোনয়ন পাচ্ছেন না জনপ্রিয়রা, আর্থিক কারণেও যোগ্যদের নাম আসছে না কেন্দ্রে

পরের সংবাদ

আজমতের রানিংমেট হচ্ছেন কে : কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামরুজ্জামান খান : এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান ও এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বাধীন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে দুবছর আগেই। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের কথা থাকলেও এ নিয়ে কোনো আলোচনাও শুরু হয়নি। এর মধ্যেই বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে শুক্রবার রাতে সাধারণ সম্পাদক পদ হারিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম। তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের পর গাজীপুর আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ ও পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। কে আসছেন পরবর্তী নেতৃত্বে, কারা ধরছেন গাজীপুরে নৌকার হাল- এ নিয়ে আগ্রহ সবার। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আলোচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ২৪ ঘণ্টা পেরুলেও এখনো ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাননি কেউই। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পাশাপাশি আগামীতে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কে হবেন নৌকার কাণ্ডারী সে আলোচনাও মুখে মুখে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে এবং এরপর মন্ত্রণালয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, জাহাঙ্গীর আলম ২০১৮ সালের ২৭ জুনের ভোটে দলীয় মনোনয়নে গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখন দল থেকে বহিষ্কার করায় তিনি মেয়র পদে থাকতে পারবেন না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান বলেছেন, জাহাঙ্গীর বহিষ্কার হওয়ায় সংগঠন আরো গতিশীল হবে। দলের দুর্দিনের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা সোচ্চার হবেন। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দলের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী নেই। তার নিজস্ব কিছু লোক রয়েছে। তাকে বহিষ্কার করায় সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। কেন্দ্র থেকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হবে বলেও জানান টঙ্গী পৌরসভার সাবেক এই পৌর মেয়র।
২০১৩ সালে গাজীপুর মহানগর প্রতিষ্ঠার পর ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর মহানগর আওয়ামী লীগের প্রথম কমিটি ঘোষণা করা হয়। কোনো রকম সম্মেলন ছাড়াই কেন্দ্র থেকে আজমত উল্লাহ খানকে সভাপতি ও গাজীপুর সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেয়া হয়। কমিটি গঠনের আগ থেকেই জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আজমতের বনিবনা ছিল না। ত্রি-বার্ষিক এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর। এরপর দুই বছর কেটে গেলেও সম্মেলনের তোড়জোড় শোনা যায়নি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের কাছে আজমতের হেরে যাওয়ার পেছনে জাহাঙ্গীরের কারসাজি রয়েছে এমন ধারণা অনেকের। আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতার প্রশ্রয়ে থাকা জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির প্রার্থী হাসান সরকারকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। সিটি করপোরেশন ও দলে ছিল জাহাঙ্গীরের সমান দাপট। দলে অন্যরা ছিলেন কোণঠাসা। শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় তাকে বহিষ্কার করার ঘোষণার পরপরই হর্ষধ্বনি দিয়ে মাঠে নেমেছেন এতদিন চুপ মেরে থাকা নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় সূত্র বলেছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি কাজী আলীম উদ্দিন বুদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মণ্ডল, মতিউর রহমান মতি, এস এম মোখছেদ আলম পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। অবশ্য কাজী আলীম উদ্দিন বুদ্দিন বলেছেন, অতীতে দলের কাছে অনেক কিছু চেয়েও কিছুই পাননি। তাই এখন আর কিছু চান না। সভানেত্রী যদি কোনো দায়িত্ব দেন তা পালন করবেন বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে আগামীতে এই সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে আজমত উল্লাহ খান ছাড়াও মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল ও জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কারের দাবিতে সোচ্চার থাকা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। জাহাঙ্গীর বহিষ্কারের পর বিরোধীরা উল্লাসে ফেটে পড়লেও কে হচ্ছেন তার স্থলাভিসিক্ত তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েই গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়