যে কারণে টিকায় ব্যয়ের হিসাব দিতে নারাজ মন্ত্রী

আগের সংবাদ

কঠিন বার্তা দিল আওয়ামী লীগ : বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস নয় > শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ অপরিহার্য নয় > শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের জন্য অশনি সংকেত

পরের সংবাদ

টি-টোয়েন্টি সিরিজ : লড়াই করে হার মানল টাইগাররা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সদ্যসমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যারা টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে পরে ব্যাট করেছে, তারাই ম্যাচ জিতেছে। গতকাল হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যে ভুল করেছেন, তা প্রমাণ করতে বেশি সময় লাগেনি। পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় টাইগাররা। পরে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি আফিফ-সোহানরা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১২৭ রানে। তিন ব্যাটসম্যান ছাড়া দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি বাকিরা। লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে নেমে পাকিস্তান ৪ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আজ একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। টাইগারা আজ জিততে পারলে সিরিজে সমতা আসবে। আর হারলে সিরিজ নিশ্চিত হবে বাবর আজমদের। গতকাল বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটাররা যেভাবে খেলেছেন, আজ সেই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে এবং ছোটখাটো ভুলগুলো শুধরে নিতে পারলে সিরিজে সমতা আনা অসম্ভব নয়। গতকাল টস জিতলেও আসল ফায়দাটা নিতে পারেনি টাইগাররা। বিশ্বকাপের মঞ্চেও দিতে হয়েছে এমন ভুলের মাশুল। এবার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার খেসারত দিতে হলো প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হেরে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে গতকাল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদে অধিনায়কত্বে মুন্সিয়ানার ঘাটতি দেখা গেছে। ম্যাচে তিনি বোলারদের ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারেননি। দেখা গেছে, শেষ ওভার করার জন্য তার হাতে কোনো স্ট্রাইক বোলারই ছিল না! এর আগে ১২৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানি ব্যাটিং লাইনকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করে দিয়েছিলেন তাসকিন-মুস্তাফিজ-মেহেদি। ১১ রানে ব্যাট করা ওপেনার রিজওয়ানকে কিছুটা ভেতরে ঢোকা দুর্দান্ত এক ইনসুইং ডেলিভারিতে বোল্ড করেন মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর পাকিস্তানের ব্যাটিং মেশিন বাবরকে ৭ রানে বোল্ড করেন তাসকিন।
দুই ওপেনারকে হারানোর পরপরই হায়দার আলীকে শূন্য রানে ফেরান শেখ মেহেদী। এরপর অভিজ্ঞ শোয়েব মালিককে দুর্দান্ত এক থ্রোতে রানআউট করে দেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান।
বাংলাদেশ দল যেখানে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ২৫ রান, সেখানে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪ রান তুলতে পেরেছিল পাকিস্তান।
৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে পাকিস্তান। তবে সময়ের সাথে সাথে সে চাপ কমাতে থাকেন ফখর জামান ও খুশদিল শাহ। দুজনে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ৫২ রান। এই সময়ে ফখর জামানকে তাসকিন আর খুশদিলকে তুলে নেন শরীফুল।
পরে ৩ ওভারে ৩২ রান প্রয়োজন হলে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তা ২ ওভার ২ বলেই সংগ্রহ করে নেন ১০ বলে অপরাজিত ২১ রান করা শাদাব আর ৮ বলে ১৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলা নেওয়াজ। ২২ রানে বাংলাদেশের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন পেসার হাসান আলী। গতকাল ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ বলেন, যখন আমরা টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছি, তখন উইকেট বেশ ভালো মনে হয়েছিল। কিন্তু এখানে বোলারদের জন্যও সহায়ক ছিল। এটাকে অজুহাত বলছি না। ব্যাট হাতে আরো ভালো পারফরম্যান্স করা উচিত ছিল। বিশেষ করে টপ অর্ডারের। এ জায়গায় বিশ্বকাপেও ঘাটতি ছিল। ১৪০ রান হলে সেটা ভালো হতো।
যদিও পাকিস্তান দলও নিজেদের ইনিংসের শুরুতে বেশ ভুগেছিল। তবে ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে রানের দেখা পেয়েছেন সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। শেষদিকে বাজিমাত করেন শাদাব খান মোহাম্মদ নেয়ার।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের শুরুটা ছিল ব্যর্থতায় ভরা। ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আসে কিন্তু রানে পরিবর্তন আসে না। শুরুটা সেই আগের মতোই হতশ্রী। টানা খেলা মোহাম্মদ নাঈমও ভরসার প্রতীক হতে পারেননি। নতুন মুখ সাইফ হাসানও রাঙাতে পারেননি অভিষেক ম্যাচ। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দুটি সেঞ্চুরির মালিক নাজমুল হোসেন শান্তও হতাশ করেছেন।
দুই ওপেনার নাঈম-সাইফ ফেরেন ১ রান করে। স্কোরবোর্ডে রান আর উইকেট সংখ্যা প্রায় যেন সমানই ছিল। এরপর শান্তও ফেরেন দলকে বিপদে ফেলে। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে রান আসে মাত্র ২৫টি। বাংলাদেশ উইকেট হারায় ৩টি।
দ্রুত তিন উইকেট হারালেও ক্রিজে আফিফ হোসেন ধ্রæব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ থাকায় আশা দেখছিল বাংলাদেশ। আফিফ তার সাবলীল ব্যাটিং করলেও মাহমুদউল্লাহ যেন খোলস থেকে বেরোতে পারেননি। ১১ বলে ৬ রান করেন তিনি।
আফিফ ১৯ রানে রিভিউ নিয়ে জীবন পেয়েছিলেন। এরপরই তার ব্যাটে দেখা যায় ঝড়। নেওয়াজকে পরপর ২ ছক্কা মারেন। প্রথমটি লং অফে ও দ্বিতীয়টি বোলারের মাথার ওপর দিয়ে। বাংলাদেশ প্রথম ছয়ের দেখা পায় এই ১১তম ওভারেই। ঝড় তুলেও বেশি দূর এগোতে পারেননি। দুটি করে চার-ছয়ে ৩৪ বলে ৩৬ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
আফিফের আউটের পর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নুরুল হাসান সোহান। প্রথম দিকে তার ব্যাট হাসছিল না। থিতু হতে কিছুটা সময় নিয়েছেন। তিনিও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শুরুতে ১০ বলে ৭ রান করা সোহান থামেন ২২ বলে ২৮ রান করে।
নুরুল চলে গেলেও ক্রিজে থাকা শেখ মেহেদী দারুণ ইনিংস খেলেছেন। ২টি ছয় ও ১টি চারে করেন ২০ বলে ৩০ রান। এক প্রান্তে উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি স্কোরবোর্ডে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। সোহান ফেরার পর অন্য প্রান্তে কাউকে সঙ্গী হিসেবে পাননি মেহেদী। অন্যদিকে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন হাসান আলী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়