জামালদের বিদায় করে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

আগের সংবাদ

বাস মালিক-শ্রমিকরা বেপরোয়া : এখনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় > গেটলক-সিটিং সার্ভিস বহাল > বিআরটিএর তৎপরতা লোক দেখানো

পরের সংবাদ

রাজধানীতে যাত্রী ভোগান্তি : গণপরিবহনে অঘোষিত ধর্মঘট

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর গণপরিবহনে চলছে অঘোষিত ধর্মঘট। গতকাল বুধবার রাজধানীতে কিছু বাস চলাচল করলেও পরিবহন শ্রমিকদের বাধার মুখে তা বন্ধ হয়ে যায়। মিরপুর থেকে উত্তরা পর্যন্ত রুটে কিছু বাস চলেছে। বাড্ডা, নতুন বাজার রুটের কোনো বাস চলাচল করেনি। অঘোষিত এ বাস ধর্মঘটের ফলে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। সিটিং সার্ভিসের নামে বেশি ভাড়া আদায় করতে না পেরে মিরপুর রোডের পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এই অঘোষিত ধর্মঘট ডেকেছেন বলে পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার মিরপুর ১২ নম্বর থেকে বিভিন্ন রুটের ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোয় বেশি ভাড়া আদায় নিয়ে বাকবিতণ্ডার একাধিক ঘটনা ঘটে। এরপর দুপুর থেকে বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল শ্রমিকরা বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যার পরে কিছু বাস চলাচল করে। তবে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই আবার পরিবহন শ্রমিকরা অঘোষিত ধর্মঘট শুরু করেন। এতে অফিসগামী এবং বিভিন্ন কাজে বের হওয়া মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
অনেক বছর ধরে গেটলক ও সিটিং সার্ভিসের নামে গণপরিবহনগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে আসছে। এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এক সংবাদ সম্মেলনে রাজধানী থেকে সিটিং সার্ভিস ও গেটলক সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেন। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিআরটিএ এবং মালিক সমিতির ভিজিল্যান্স টিম রাস্তায় নেমে তৎপরতা শুরু করে। কিন্তু পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের কিছু অংশ এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। তারাই এখন অঘোষিত বাস ধর্মঘটের মাধ্যমে সিটিং সার্ভিস ও গেটলক সার্ভিস চালু রাখতে চাপ সৃষ্টি করছেন।
সকালের দিকে মিরপুর সাড়ে ১১ ও ১২ নম্বর সেকশন থেকে পরীস্থান, বসুমতি পরিবহনের কিছু বাস উত্তরা পর্যন্ত চলতে দেখা গেছে। কিন্তু বেলা বাড়ার পরে পরিবহন শ্রমিকরা এসব বাস চলাচলে বাধা দেন। বসুমতি পরিবহনের চালক জানান, মালিকপক্ষ থেকে গাড়ি বন্ধে কোনো কিছু বলা হয়নি। পরিবহনের শ্রমিকরা গাড়ি বন্ধ রেখেছেন। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, কোনো ধরনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়নি। শুধু মিরপুর রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাস বন্ধ রাখার বিষয়টি আমরা জেনেছি। সমাধানের চেষ্টা করছি।
সরজমিন দেখা যায়, মিরপুর-১, ১০, ১১, ১২, কালশী, পূরবী, সিরামিক রোডে যাত্রীবাহী বাস কম। রাস্তার দুই পাশে ফুটপাতে হেঁটে যাচ্ছেন শত শত মানুষ। তবে মিরপুর ১২ নম্বরের প্রধান সড়কে বাস পার্কিং করে রাখা হয়েছে। একইভাবে উত্তরা এবং গুলশান থেকেও মিরপুরগামী বাস চলাচল কমে গেছে। গুলশান থেকে মিরপুর ১০ নম্বরে যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় ছিলেন নজরুল ইসলাম। দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো বাস পাননি। এ সময় তিনি বলেন, শুনেছি বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের খবর পেয়ে মিরপুরগামী বাস কমে গেছে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এমন হয়রানি বন্ধে সরকারকে আরো কঠোর হওয়া উচিত।
যাত্রীদের এমন হয়রানির প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে সরকার বাস ভাড়া বাড়িয়েছে। কিন্তু তার চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন তারা। এর সঙ্গে যাত্রী হয়রানিও বেড়েছে। এসব বিষয় নিয়েই সংবাদ সম্মেলন করা হবে।
এদিকে গতকাল বুধবার মহাখালীতে বাসের ‘হাফ পাস’ ভাড়ার দাবিতে রাস্তায় নামা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তিতুমীর কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা রাস্তায় অবস্থান করার ১০-১৫ মিনিট পর তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের প্রায় ৪০ জন কর্মী তাদের ওপর হামলা করেন। হামলাকারীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের (নুরুল হক নুর) লোক ও বহিরাগত বলে মারধর করে?। শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস ভাড়ার দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উভয় পক্ষই পুলিশ আসার আগে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অবশ্য বনানী থানার ওসি নুরে আজম মিয়া হামলার বিষয়টি জানা নেই বলে গণমাধ্যমকে জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়