জামালদের বিদায় করে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

আগের সংবাদ

বাস মালিক-শ্রমিকরা বেপরোয়া : এখনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় > গেটলক-সিটিং সার্ভিস বহাল > বিআরটিএর তৎপরতা লোক দেখানো

পরের সংবাদ

রহস্যের বৃত্তেই পরীমনির ভিডিও ফাঁসের ঘটনা : অভিযোগের তীর পুলিশের দিকেই

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা বোটক্লাব কাণ্ডের পর আলোচিত-সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েকদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে পরীমনি ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিলের জন্মদিন উদযাপনে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত প্রকাশ পায়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরে দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিতর্কিত কার্যকলাপ যেমন সবাইকে বিস্মিত করে, ঠিক তেমনি প্রশ্ন ওঠে ভিডিওটি ফাঁস করল কে?
ভিডিও ফাঁসকারী ব্যক্তি এক পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে ভিডিওটি পেয়েছেন বলে জানালে জব্দকৃত পরীমনির মোবাইল থেকে বিদেশে ভিডিও সরবরাহ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। যদি তাই হয়, তাহলে বিষয়টি কতটা আইনসংগত সে বিষয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দেয় পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল। কিন্তু এখনো রহস্যের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে আলোচিত এ ঘটনাটি।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানায়, যে বা যারা ভিডিওটি ফাঁস করেছে সে বা তারা পুলিশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে ভিডিওটিতে। কেননা, অনলাইন অপরাধীরা সবসময় চায় পুলিশ যেন ব্যাকফুটে চলে যায়। পাশাপাশি পুলিশকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার

করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে। পরীমনির ভিডিও ফাঁসের পরে এই অপতৎপরতাই চালানো হয়েছে। তাহলে কোনো উৎস থেকে ভিডিওটি ছড়াল এমন প্রশ্নের জবাবে সূত্রটি জানায়, প্রথমত পরীমনি সাধারণ কেউ নন। তার সঙ্গে সবসময় ব্যক্তিগত সহকারী ও ক্যামেরাম্যানসহ ৩-৪ জন লোক থাকতেন। তাদের মাধ্যমেও ভিডিওটি ফাঁস হতে পারে।
আবার এটাও মাথায় রাখতে হবে, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ফাঁসকারী ব্যক্তির অসংখ্য শুভাকাক্সক্ষী বাংলাদেশে রয়েছে, তাদের মাধ্যমেও হতে পারে। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেটিও হয়তো তদন্তে বেড়িয়ে আসবে। যেহেতু পরীমনিকে র‌্যাব গ্রেপ্তারের পরে তাকে ডিবিতে এবং পরে সিআইডিতে নেয়া হয়, এই ৩ সংস্থার সংশ্লিষ্ট কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে, ওই ভিডিও পুলিশের কাছে আসার কথা নয়।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটিই ভিডিও ফাঁসের বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে। তবে, ভিডিও ফাঁসকারী পুলিশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন বলে জানান তিনি।
সিআইডির মিডিয়া উইংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, পরীমনিকে র‌্যাব গ্রেপ্তারের পর ডিবি হয়ে সিআইডিতে মামলার তদন্ত আসে। কিভাবে ভিডিও ফাঁস হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের জানা নেই। এ ঘটনায় পুলিশের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। প্রয়োজন মনে করলে ওই কমিটিই এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।
গত ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ পরীমনিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ ঘটনার ৫ দিন পর (১০ আগস্ট) আমেরিকা প্রবাসী একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাবেক সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনের ইউটিউব চ্যানেলে পরীমনি ও সাকলাইনের ভিডিওটি আপলোড করা হয়। মুহূর্তেই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সাংবাদিক ইলিয়াস ভিডিওতে দাবি করেন ‘একজন পুলিশ কর্মকর্তা’র কাছ থেকে ভিডিওটি পেয়েছেন।
জানা গেছে, ফাঁস হওয়া ভিডিওটি ঈদের পর পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনের বাসায় ধারণ করা। সেখানে পরীমনি তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি এবং তার গাড়িচালক ছিলেন। জিমি ভিডিওটি ধারণ করেন। তবে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, পরীমনির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে এডিসি গোলাম সাকলায়েন শিথিলকে ডিবি থেকে বদলি করা হয় পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে। আর পরীমনিও বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়