জাবির ভর্তি পরীক্ষা : প্রক্সি দিতে গিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থী কারাগারে

আগের সংবাদ

এশিয়ান আর্চারিতে পদক খরা ঘোচাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

নবান্ন উৎসব উদযাপন : মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতার মূলোৎপাটনের প্রত্যয়

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যখন মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার উদ্যত থাবা ক্ষতবিক্ষত করছে বাঙালির সৌহার্দ্য আর ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, তখন ‘সংস্কৃতির হাতিয়ারে’ তা রুখে দেয়ার প্রত্যয় ধ্বনিত হলো সংস্কৃতিকর্মীদের কণ্ঠে। শুভবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তাসম্পন্ন তরুণদের নিয়ে মৌলবাদের মূলোৎপাটন করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
জাতীয় নবান্ন উৎসব উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে ‘নবান্ন উৎসব’ এর ২৩তম পর্বের উদ্বোধনী আয়োজনে তারা এ কথা বলেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এই উৎসবের উদ্বোধন করেন। এ সময় নবান্ন কথন পর্বে অংশ নেন জাতীয় নবান্ন উৎসব উদযাপন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক নাঈম হাসান সুজা। মঞ্চে ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ ও উৎসব উদযাপন পর্ষদের সদস্য সঙ্গীতা ইমাম ও মানজারুল ইসলাম চৌধুরী সুইট। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় গাজী আব্দুল হাকিমের বাঁশির সুরে শুরু হয় উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
কে এম খালিদ বলেন, করোনাকালে দেশের সংস্কৃতি চর্চায় যে ভাটা পড়েছিল, করোনা-উত্তরকালে আমরা চেষ্টা করছি সংস্কৃতি চর্চা বেগবান করার মাধ্যমে তা পুষিয়ে নিতে। সেজন্য আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব উদযাপন করছি।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে যে ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব হবে। জাতীয় নবান্ন উৎসব উদযাপন পর্ষদের সভাপতি লায়লা হাসনা যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় উৎসব আয়োজকরা তার লিখিত বক্তব্যটি পাঠ করে শোনান।
লায়লা হাসান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তানিরা না থাকলেও আজো তাদের দোসর বা সেই মানসিকতাসম্পন্ন মানুষ রয়ে গেছে। রয়ে গেছে ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী অমানুষেরা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার উদ্যত থাবা ক্ষতবিক্ষত করছে আমাদের সৌহার্দ্য, আমাদের ভ্রাতৃত্ব, আমাদের এতকালের এক হয়ে থাকার বন্ধন। ধর্মান্ধতার কলুষতা হানাহানি এই রক্তক্ষরণ এই কি আমাদের সোনার বাংলা? এই জন্যই কী আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগ ও আত্মাহুতি?
তিনি বলেন, সংস্কৃতির হাতিয়ার

নিয়ে শুভবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তাসম্পন্ন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ আগামী প্রজন্মকে এই মৌলবাদের মূলোৎপাটনের দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। আমরা চাই পঙ্কিলমুক্ত কলুষহীন অসাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যপূর্ণ ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ সম অধিকারের সোনার বাংলা।
উৎসবে সম্মেলক গান, নৃত্য ও কবিতায় শিশুদের পর্বে অংশ নিয়েছে স্বরবৃত্ত, কিশলয় কচিকাঁচার মেলা, দনিয়া সবুজ কুড়ি কচিকাঁচার মেলা, স্বপ্নবীণা শিল্পকলা বিদ্যালয়, মন্দিরা সাংস্কৃতিক পাঠশালা, সুর বিহার, স্বপ্নবিকাশ কলা কেন্দ্র, মৈত্রী শিশু দল, রঙ্গপীঠ শিশু দল।
দলীয় সংগীত পরিবেশনায় বড়দের পর্বে অংশ নেয় বহ্নিশিখা, ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাফা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, সমস্বর, উজান, সুর সাগর ললিতকলা একাডেমি, পঞ্চায়েত।
দলীয় নৃত্য পরিবেশনার বড়দের পর্বে অংশ নেন বাফা, জি এ মান্নান দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন, কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, নান্দনিক নৃত্য সংগঠন, নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র, স্পন্দন, নৃত্যজন, পুষ্পাঞ্জলী, নূপুরের ছন্দ। একক সংগীত পরিবেশন করেন- ফাতেমা তুজ জোহরা, শাহীন সামাদ, মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না, মহাদেব ঘোষ, মোস্তফা কামাল, মাহজাবিন শাওলী, আবু বকর সিদ্দিক, অনিমা রায়, এস এম মেজবা উদ্দিন, সুরাইয়া পারভীন, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, ফেরদৌসী কাকলি, তামান্না নিগার তুলি, সঞ্জয় কবিরাজ, মনিরা ইসলাম পাপপু, ত্রিবেনী পান্না, মৌমিতা বড়ুয়া, শ্রাবণী গুহ রায়, নবনীতা জায়ীদ চৌধুরী, সোহাগ চন্দ্র শিমুল, মায়শা সুলতানা উর্বী, নাহিয়ান দুরদানা সূচি, রকিবা খান লুবা, তাহমিনা আক্তার মুক্তি, আসিফ ইকবাল সৌরভ, সোনিয়া আক্তার, শান্তা সরকার, রাবেয়া আক্তার, মোহাম্মদ মারুফ হোসেন, মানসী অনন্যা, দেবু প্রসাদ দাঁ, অনিমেষ বাউল, মেহেদী ফরিদ।
একক আবৃৃত্তি পরিবেশন করেন আহকাম উল্লাহ, বুলবুল মহলানবীশ, রূপা চক্রবর্তী, শাহাদাৎ হোসেন নিপু, রফিকুল ইসলাম, মাসকুর এ সাত্তার কল্লোল, বেলায়েত হোসেন, নায়লা তারান্নুম কাকলি, ফয়জুল আলম পাপ্পু, মাসুদুজ্জামান, আহসান উল্লাহ তমাল, আজিজুল বাশার মাসুম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়