তিনজন গ্রেপ্তার : কৌশলে পানের ভেতর ইয়াবা পাচার

আগের সংবাদ

শূন্য থেকে মহাশূন্য জয় : ডিজিটাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

নীরব ভোলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী : ‘স্পেশাল’ ৭ স্পিডবোটে আসছে মাদকদ্রব্য

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এইচ এম নাহিদ, ভোলা থেকে : দেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলা। সময়ের পরিক্রমায় তেঁতুলিয়ার তীরে গড়ে ওঠা ভোলা সদর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল হলো ভেদুরিয়া ইউনিয়ন, এখানে ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। কলেজসহ ২০টিরও অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যমান। মাদকের বিস্তার ক্রমাগত এক ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে এখানে। স্থানীয়রা বলছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদিচ্ছার অভাবেই এমনটা হচ্ছে। সূত্র মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক অভিযানে মাদক সরবরাহের স্থান চিহ্নিত হওয়ায় কারবারিরা সরবরাহের রুট পরিবর্তন করে তেঁতুলিয়া নদীবেষ্টিত ভেদুরিয়া ও তার কাছাকাছি ইউনিয়নগুলোকে বেছে নিয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা রাত ১২টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট ব্যবহার করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই কাজে ৭টি স্পিডবোটেই মাদক সরবরাহ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তেঁতুলিয়া ও মেঘনায় অবৈধ স্পিডবোটে সয়লাব। ভেদুরিয়া ঘাটেই ১২৪টি স্পিডবোট। এর মধ্যে স্পেশাল নামে ৭টি বোট শুধু মাদক কারবারি ও বিভিন্ন বেআইনি কাজে ব্যবহৃত হয়। রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে নদীর ডুবো চরগুলোতে স্পিডবোট নোঙর করে ঢাকাগামী লঞ্চ আসার অপেক্ষায় থাকে। কাক্সিক্ষত লঞ্চ আসলে মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্য দুর্ধর্ষ সাহানুর বেগমসহ (৩০) একাধিক আন্ডারগ্রাউন্ডের মাদক ব্যবসায়ীদের সহোচর কর্তৃক নদী পাড়ি দিয়ে ভেদুরিয়াসংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অপেক্ষাকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছে দেয়। তেঁতুলিয়া সংলগ্ন ভেলুমিয়ার শীল বাড়ির দরজার ৪ রাস্তার মোর, বিশ্বরোডের মাথার লঞ্চ ঘাট, চরগাজী গাছালীর মোর, ভেলুমিয়া বাজার, শরীফখান বাজার এবং ভেদুরিয়ার ব্যাংকের হাট, বউবাজার, ভাওয়ালীকান্দা, বান্দের পাড়, হামিদ খাঁন ব্রিজ, টেকের হাট, চাঁন মাঝির বাগান, মোল্লা বাজার, শেরেবাংলা, চর চটকিমারায়, চর চন্দ্রমোহন ও মুনসীর চরের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে সরবরাহসহ সব ধরনের মাদক পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়। জানা যায়, ভেদুরিয়া ঘাট থেকে মাদক ব্যবসার ডিলার লাল মনির, সোহরাব (মাদক মামলায় বর্তমানে জেলে), কালু, ইঊনুছ, মিলন, ইউছুপ ফলপান, মনির চকিদার, ছোটন, কোস্টগার্ডের সোর্স জিয়া, ইব্রাহীম, ইব্রাহীম মহুরী, শহিদুল মেম্বার ও রফিকসহ ৩০ সদস্যের এই স্থানীয় চক্রটি স্থলপথে মাদক পাচার করে জেলার পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের হাতে তুলে দেন। এদের অনেকেই মাদক মামলার চিহ্নিত আসামি। স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি মো. মোসলেউদ্দিন পাটওয়ারী ঘটনার সত্যতা শিকার করেন। ভেদুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই মাস্টার বলেন, সমাজের প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের টিকিটি স্পর্শ করতে পারে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সদিচ্ছাকে দায়ী করে বলেন, এই অবস্থার পরিবর্তন খুব জরুরি।
চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মাস্টার বলেন, ঘটনা সত্য, আমিও কয়েকটি মাদক স্পটসহ অপরাধীদের তালিকা প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এদের প্রভাবে আমার ইউনিয়নের বহু তরুণ-তরুণী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জেলার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল আলিম বলেন, সামাজিক সচেতনতা ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা ছাড়া সমাজ থেকে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। তাছাড়া সরকারের আরো কিছু সংস্থাও মাদক নির্মূলে কাজ করছে । সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়