‘শিশু বক্তা’ রফিকুল মাদানীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

আগের সংবাদ

চমক থাকছে টাইগার স্কোয়াডে ; মিরপুরে পতাকা উড়িয়ে পাকিস্তানের অনুশীলন

পরের সংবাদ

‘মান’ হানির আশঙ্কা! : মুক্তিযোদ্ধা কোটা বুয়েটে অকার্যকর

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) প্রথম বর্ষ ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালুর দাবি বিবেচনায় নেয়নি কর্তৃপক্ষ। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম তুষার বুয়েট কর্তৃপক্ষকে এ দাবিতে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে অহিদুল ইসলামকে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন লিখিত চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেন।
চিঠিতে বলা হয়, ‘অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের পোষ্যদের জন্য ভর্তির কোটা থাকলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো কোনো কোটা ছিল না এবং এখনো নেই। মুক্তিযুদ্ধ প্রায় ৩৪ বছর পূর্ব থেকে এ পর্যন্ত কোনো কোটা ছাড়াই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলে আসছে। কোটা সিস্টেম চালু হলে বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রমের স্ট্যান্ডার্ড ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। সার্বিক বিবেচনায় একাডেমিক কাউন্সিল কোটা সিস্টেম চালুর বিপক্ষে মত দেন।’ বুয়েটের এমন অবস্থানে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ফেসবুকেও প্রতিবাদে অনেকেই লিখেছেন, মুক্তিযুদ্ধে বুয়েটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অবদানও অসামান্য। কিন্তু যে ভাষায় বুয়েট প্রশাসন মুক্তিযোদ্ধাদের তাচ্ছিল্য করেছে তাতে করে তাদের রাজাকারী মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে। আগে ক্ষমা চান। শিক্ষার মানে ঘাটতি না রেখে কীভাবে পিছিয়ে পড়াদের প্রকৌশল শিক্ষা দেবেন তা বের করুন।
মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননার অভিযোগ এনে রেজিস্ট্রারকে অপসারণের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারা। সংগঠনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মহান মুক্তিযুদ্ধকে চরমভাবে কটাক্ষ ও অবমাননা করা হয়েছে। তার এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, প্রকৃতপক্ষে তিনি বুয়েটে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। বুয়েট কি তাহলে বাংলাদেশের বাহিরের প্রতিষ্ঠান? তারা আরো বলেন, কোটা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার বক্তব্য দেশের প্রচলিত আইন, সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি। বুয়েটের প্রশাসনের বক্তব্য অনুযায়ী, তাহলে কি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান-প্রজন্মরা বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম, সমাজ ও রাষ্ট্রের স্ট্যান্ডার্ডের বাহিরে? বুয়েট প্রশাসনকে অবশ্যই তাদের বক্তব্য জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া তিনি সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দটির সঙ্গে বীর শব্দটি লেখেননি, যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চরম অবমাননাকর। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ শতাংশ কোটায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনীরা ভর্তি হতে পারবেন। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারের এই নির্দেশনা মানতে পারলে বুয়েট প্রশাসন কেন মানতে পারছে না?
সংগঠনটির নেতারা বলেন, বুয়েট প্রশাসনের নিকট আহ্বান, দেশের সংবিধান, প্রচলিত আইন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি বক্তব্য দেয়ার অপরাধে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিনকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় বুয়েট প্রশাসনিক ভবন ঘেরাওসহ আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এদিকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদারকে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খানের কাছে চিঠির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে অবহিত নন বলে জানান। অন্যদিকে যার স্বাক্ষরে চিঠি পাঠানো হয়েছে সেই রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, ‘কীসের চিঠি, আপনি কোথা থেকে চিঠি পেয়েছেন’। চিঠির হুবহু লাইন তুলে ধরলে তিনি বলেন, ‘কোনো চিঠির কথা আমার এ মুহূর্তে জানা নেই। আমি বাসায়, অফিসে না। অফিসে গেলে ফাইল দেখলে বলা যাবে’।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়