দেয়াল চাপায় শিশুর মৃত্যু : কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিস

আগের সংবাদ

বিজয়ী বিদ্রোহীদের ভাগ্যে কী আছে : সিদ্ধান্ত অমান্যকারীরা সাময়িক বহিষ্কার > ১৯ নভেম্বর আ.লীগের সভায় আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত

পরের সংবাদ

জামালগঞ্জে সুরমা নদীর চর প্রভাবশালীদের দখলে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অঞ্জন পুরকায়স্থ, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) থেকে : জামালগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান সুরমা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে ৪৭০টি পরিবারের বসতবাড়ি। বর্তমানে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চাঁনপুর হারুন মার্কেটের উত্তরে পুরনো চাঁনপুর গ্রামে ছিল ৬০টি হিন্দু পরিবার। নদীভাঙনের কবলে পড়ে তারা দুর্গাপুরে বসতি স্থাপন করে। বর্তমানে বিলীন হওয়া তাদের বসতভিটার স্থানে চর জেগে উঠেছে। কিন্তু কেউ পারছে না দখল নিতে। মধ্যস্বত্বভোগীরা জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছে। একই ইউনিয়নের পশ্চিম ল²ীপুর গ্রামের বন্ধেরহাটি নামক গ্রামের ৭০টি পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছে।
পুরনো সোনাপুর গ্রামটি সুরমা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় বর্তমান সোনাপুর, চাঁনপুর নামক গ্রামে দেড় শতাধিক কৃষক বসতি স্থাপন করেন। নদীভাঙনের ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এই গ্রামের মানুষ সুরমা নদীর চরে জেগে ওঠা তাদের পুরনো বসতভিটা ফিরে পেতে চায়। এছাড়া সদর ইউনিয়নের তেলিয়া গ্রামের ৩০টি নাথ, নমঃশূদ্র ও মুসলিম পরিবারের বসতভিটাসহ একটি মসজিদ হয়েছে নদীগর্ভে বিলীন।
ফেনারবাঁক ইউনিয়নের আমানীপুর বর্মণপাড়া গ্রামটি নদীভাঙনের কবলে পড়ায় ৩০টি পরিবার ও আমানীপুর বাজারের ভিটসহ ২০টি মুসলিম পরিবার হয়েছে বসতভিটা হারা। ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের কাবিটা প্রকল্প ব্যয়ে বর্মণ পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করা হলেও টেকসই উন্নয়ন হয়নি এখনো। একই ইউনিয়নের নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে রামপুর গ্রামের ২০টি ও আলীপুর গ্রামের ২০টি পরিবার।
সাচনা বাজার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আমিনুল হক পাঠান জানান, নদীগর্ভে ২টি মসজিদসহ নূরপুর গ্রামের ১৫০টি পরিবার ও রামনগর বাজারের ২০টি দোকান ভিট, অনেক ফসলি জমি ও এলাকায় ১০টি পরিবার ও ফতেহপুর গ্রামের ৫০টি পরিবার হয়েছে ভিটে ছাড়া। ভিমখালী ইউনিয়নের দেবল তালুকদার জানান, উজ্জ্বলপুর গ্রামের ১০টি পরিবার, বাহাদুরপুর গ্রামের ২৫টি পরিবার বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে।
এসব পরিবার নিজস্ব রেকর্ডীয় বসতভিটা হারিয়ে বন্ধকি জমিসহ খাস জমিতে বসবাস করছে। যারা নদীভাঙনের শিকার হয়ে উদাসীন অবস্থায় অস্থায়ীভাবে যাযাবরের মতো বসবাস করছে, তারা সবাই সরকারের চলমান উন্নয়ন ধারায় আশ্রয়হীনদের মতো পুনর্বাসনের আবেদন জানায়। সদর ইউনিয়নের নদীভাঙনের শিকার সোনাপুর ও চাঁনপুর গ্রামের নির্মল কর, প্রবোধ কর ও শ্যামল দত্ত বলেন, আমাদের গ্রাম সুরমা নদীতে বিলীন হয়েছিল। ১০ বছর আগে আবার ভরাট হয়ে চর জেগে উঠেছে। কিন্তু আমাদের সেই ভূমিতে বসতভিটা স্থাপন করতে পারছি না। এখানে খুব কষ্টে আছি। আমাদের পূর্বের ভিটা ফিরে পেতে সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। ফেনারবাঁক ইউনিয়নের নদীভাঙনের শিকার আমানীপুরের আলী আহমদ, শুক্কুর আলী ও বিজয় বলেন, সরকার নদীভাঙন রোধ করতে না করলে বাস্ত হারা হয়ে যাযাবরের মতো জীবন কাটাতে হবে।
জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের তেলিয়া গ্রামের মাস্টার নজরুল ইসলাম, নগেন্দ্র দেবনাথ, মাওলানা মুকলেসউর রহমান, আব্দুল হক চৌধুরী বলেন, সুরমা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে মসজিদসহ অনেক বাড়িঘর, পাউবো কতৃর্ক নদী শাসন করলেও গুরুত্বপূর্ণ বাকি থাকায় ভাঙন রোধ হচ্ছে না।
সাচনা বাজার ইউনিয়নে রামনগর ও নূরপুর গ্রামের শেরে আলম ও সায়েম পাঠান বলেন, সরকারের নদী শাসন করাসহ বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন করার জরুরি আবেদন জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, নদীভাঙন রোধ করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব। গ্রামগুলো ভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব। ভিটে ছাড়া ও ভূমিহীনদের সরকারি নিয়মে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়