দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ : চট্টগ্রামে বিএনপির বিক্ষোভ

আগের সংবাদ

ঢিমেতালের ফাঁদে সোনালি ব্যাগ : সিলিং মেশিনে আটকে আছে উৎপাদন, বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ

পরের সংবাদ

জামাল-লামোসের ভাবনা এবার মালদ্বীপ বধ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে ভালো শুরুর পরেও শেষে হতাশ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসে টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সিশেলসের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে জামাল ভূঁইয়ারা। ম্যাচে লিড নিয়েও পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ফলে এমন সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর বাংলাদেশের পর্তুগিজ কোচ মারিও লামোস স্বভাবতই হতাশ। এমনকি দুর্বল সিশেলসের বিপক্ষে জিততে না পারায় চার জাতি টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠার পথটা জামালদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। রাউন্ড রবীন লিগভিত্তিক এ প্রতিযোগিতায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামীকাল মালদ্বীপের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচে জামাল-তপুদের লক্ষ্য তিন পয়েন্ট। সেলক্ষ্যে গতকাল নিজেদের প্রস্তুত করছেন তারা। শিষ্যদের নিয়ে মালদ্বীপকে হারানোর ছক কষতে শুরু করেছেন কোচ মারিও লামোস। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত হোটেল সুইমিংপুল রিকভারি সেশন সম্পন্ন করেছে জামাল-জিকোরা। দুপুর ২টায় গত ম্যাচে একাদশের বাইরে থাকা খেলোয়াড়রা জিম করেছেন। আর বিকাল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছেন।
গত মাসে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত ও নেপালের সঙ্গে ড্র করলেও মালদ্বীপের বিপক্ষে হেরেছিল লাল-সবুজের দলটি। তাছাড়া শক্তির বিচারে জামালদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে মালদ্বীপ। র‌্যাঙ্কিংয়েও এগিয়ে আছে দলটি। মালদ্বীপ ১৫৬ আর র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ আছে ১৮৭-তে। তবে এসব নিয়ে জামালরা ভাবতে নারাজ। শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে মালদ্বীপকে হারাতে মরিয়া হয়ে আছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
এছাড়া নিজদের প্রথম ম্যাচে কলম্বো রেসকোর্স মাঠে সিশেলসের বিপক্ষে প্রথমার্ধে দাপটে খেলেছে জামাল-তপুরা। এমনকি গোল পেতেও সময় লাগেনি। মোহাম্মদ ইব্রাহীমের লক্ষ্যভেদে ১৭ মিনিটে এগিয়ে যায়। তবে বিরতির পর গোল শোধ করে সিশেলস। তাই ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হতাশা প্রকাশ করেছেন কোচ লামোস। তিনি বলেন, এটা হতাশাজনক ম্যাচ। প্রথমার্ধে আমরা গোল পেলাম, ভালো কিছু সুযোগ তৈরি করেছি। দ্বিতীয়ার্ধে সেশেলস ফরমেশন বদলে খেলেছে, যেটা আমাদের জন্য বিপদের কারণ হয়েছে। যখন আপনি জয়ের পথে আছেন, তখন ৮৮তম মিনিটে গোল খাওয়াটা আসলে মনোযোগের ঘাটতি। আমি জানি ছেলেরা ক্লান্ত ছিল, তারা খুব বেশি ফিটও নয়। তবে আমি আশা করি, পরের ম্যাচগুলোতে আমার শিষ্যরা ভালো করবে।
এদিকে পূর্ব আফ্রিকার ক্ষুদ্র একটি দেশ সিশেলস। যাদের জনসংখ্যা এক লাখেরও কম। ফুটবল র‌্যাঙ্কিংয়েও পিছিয়ে অনেক। এমন দলের বিপক্ষে ড্র করা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য চরম লজ্জাকর। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করলেও দ্বিতীয়ার্ধে একচেটিয়া খেলেছে আফ্রিকা মহাদেশের দলটি। তারাও একাধিক গোলের সুযোগ মিস করেছে। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই দুর্দান্ত সেভ করেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। এরপর ক্রমান্বয়ে আরো কয়েকটি আক্রমণ করে সিশেলস। ফরোয়ার্ডরা গোলের সুবর্ণ সুযোগ মিস করেছেন, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সচরাচর হয় না। শেষ পর্যন্ত ৮৮ মিনিটে বাংলাদেশ আর নিজেদের লিড ধরে রাখতে পারেনি। প্রথমার্ধে লিড পাওয়ার পর আক্রমণে না গিয়ে ম্যাচের বাকি সময় বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছে। কর্নার আদায় করলেও গোল আদায় করতে পারেননি বাংলাদেশে আক্রমণভাগের ফুটবলাররা। বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে গিয়েছিল ফাইনাল খেলার লক্ষ্যে। কিন্তু দুর্বল সিশেলসের বিপক্ষে ড্র করে ফাইনাল খেলার আশা ক্ষীণ হয়ে গেল জামাল ভূঁইয়াদের।
টানা বৃষ্টিতে কলম্বোর রেসকোর্স মাঠ অনেকটা ভারী। সিশেলসের অর্ধ আরো বেশি ভারী তুলনামূলক। বাংলাদেশ দল এমন ভারী মাঠে প্রথমার্ধে এক গোলের লিড নিয়েছে। যদিও প্রথমার্ধে তিন গোলে লিড নেয়ার মতো সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। সিশেলসের বক্সে বেশি কাদা থাকায় ফরোয়ার্ডরা অবশ্য স্বাভাবিক শট নিতে পারেননি অনেক সময়। ম্যাচের ১৬ মিনিটে লিড এনে দেন ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহীম। ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা লম্বা থ্রæ ঠেলে দেন। বাংলাদেশের মিডফিল্ডার ও সিশেলসের ডিফেন্ডারদের ফাঁকে বল পান ইব্রাহীম। বলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একজন কাটিয়ে বক্সের মধ্যে প্রবেশ করেন বসুন্ধরা কিংসের এই ফরোয়ার্ড। কোনাকুনি শটে গোল করেন ইব্রাহীম। সিশেলস এ সময় মাঝ মাঠে বল দখলের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে টক্কর দিলেও গোল করার মতো কিছু করতে পারেননি। একবার দূরপাল্লার শট নিয়েছিল সিশেলসের ফরোয়ার্ড। গোলরক্ষক জিকো সরাসরি গ্রিপে না আনতে পারলেও কোনো বিপদ হয়নি বক্সের মধ্যে কেউ না থাকায়। ইব্রাহীম ৪১ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ মিস করেন। বক্সের মধ্যে ফ্রি থেকেও ভালোমতো শট নিতে পারেননি। সহজ একটি গোলের সুযোগ মিস করেন ইব্রাহীম। তার মতো অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও একই রকম একটি সুযোগ মিস করেন মিনিট দশেক আগে। তাদের এই ব্যর্থতার পেছনে বক্সের কাদাও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পর্তুগালের কোচ মারিও ল্যামোসের এই ম্যাচের মাধ্যমে জাতীয় দলের ডাগাউটে অভিষেক হয়েছে। অভিষেকটা জয়েও রাঙাতে পারতেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দলের এলোমেলো খেলায় ও ফরোয়ার্ডের বেশ কিছু সুযোগ নষ্টের ফলে গোল হজম করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধের সময় যত গড়িয়েছে মাঠে তত অসহায় মনে হয়েছে মারিওর শিষ্যদের। শেষ পর্যন্ত একটি পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়