ডেঙ্গুতে ৯১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত সাড়ে ২৩ হাজার

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সংঘাত থামছেই না : সংঘর্ষে জড়িতদের তালিকা করছে আ.লীগ, অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে এক মাসে নিহত ৮, নির্বাচনী সংঘর্ষে ৩৮ নিহত

পরের সংবাদ

ঘুম নেই পাহাড়ি অধিবাসীদের : শেরপুর সীমান্তে ফের বন্যহাতি আতঙ্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে : শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তে ফের বন্যহাতির আক্রমণ শুরু হয়েছে। এতে হাতি আতঙ্কে ঘুম নেই স্থানীয় পাহাড়ি অধিবাসীদের। তারা রাত জেগে জানমাল রক্ষার চেষ্টা করছেন।
জানা যায়, ভারতের সীমানাঘেঁষা শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের প্রায় ২০টি গ্রাম রয়েছে। ওইসব গ্রামের চারপাশ ঘিরে গারো পাহাড়। কয়েকদিন ধরে ভারত থেকে নেমে আসা শতাধিক বন্যহাতি কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে ওইসব এলাকায় বিচরণ করছে। বন্যহাতির দল সারাদিন পাহাড়ি ঝোপ-জঙ্গলে থাকলেও সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে লোকালয়ে। হামলা চালাচ্ছে বাড়িঘরে। খেয়ে সাবাড় করছে চলতি আমন মৌসুমের আবাদ। পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করছে বিস্তীর্ণ আবাদি জমির ফসল। আর ধ্বংস করছে সবজি ক্ষেত। বাধা দিতে গেলে শুরু হয় হাতি ও মানুষের যুদ্ধ। ঢাকঢোল পিটিয়ে, পটকা ফুটিয়ে আর মশাল জ্বালিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না হাতির তাণ্ডব। এখন ওইসব গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ হাতির আতঙ্কে দিন পার করছেন।
সরজমিন গেলে কথা হয় স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নেতা ব্রতীন মারাকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা পাহাড়ে বসবাস করি। এখানকার প্রায় সবাই কৃষির ওপর নিভরশীল। বন্যহাতি ক্ষেতের সবজি আর ধান খেয়ে সাবাড় করছে। মাঝেমধ্যে বাড়িঘরেও হামলা করছে। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানায় পৃথকভাবে অনেকে সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, ‘আমরা পাহাড়ের বাসিন্দা। ধান আর সবজি চাষ করি। এডা দিয়ে সংসার চলে। প্রতিবছরই ধান পাকলেই হাতি আয়ে। সবজি আর ধানক্ষেত খাইয়া যায়। মেলা ক্ষতি করতাছে। এইবারও মেলা ক্ষতি করছে। অহন বউ-পোলাপান লইয়া ক্যামনে চলুম?’
একই কথা নেয়াবাড়ির টিলা ও পার্শ্ববর্তী মালাকোচা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রহুল আমীন, মজনু মিয়া, আলাল মিয়া, আশ্রাফুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, শাহ আলম, হাছেন আলী, গোলাপ আলী, ফসি মিয়া, ওবায়দুল ইসলাম, আব্দুর বারিক, সাদা মিয়া, মনিরুল ইসলামসহ গারো পাহাড়ের অনেকের।
শ্রীবরদী উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. কোহিনুর হোসেন বলেন, আমরা একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্য মতে জানতে পেরেছি, এই পাহাড়ে ১৯৯৫ সাল থেকে বন্যহাতির আক্রমণ চলছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন শত শত। ক্ষতি হয়েছে বিস্তীর্ণ আবাদি জমির ফসল।
শ্রীবরদী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা বলেন, গারো পাহাড়ে বেশিরভাগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনের বসবাস। গ্রামবাসী হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। তবে এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ জন্য দিন দিন বন্যহাতির তাণ্ডবে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা আক্তার বলেন, আমরা বন্যহাতির হামলায় নিহত, আহত ও ঘরবাড়িসহ ফসল ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছি। এছাড়া স্থায়ীভাবে বন্যহাতির কবল থেকে রক্ষা পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জোরালো হস্তক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে।
খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়