‘ভীষণ এক্সাইটেড ও নার্ভাস’

আগের সংবাদ

নির্বাচন ঘিরে বারবার নির্যাতন : ইস্যু যাই হোক হামলার লক্ষ্যবস্তু ‘সংখ্যালঘু’, স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ধর্ম’

পরের সংবাদ

চারঘাটের ১০ লেভেলক্রসিং অরক্ষিত : অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাইনুল হক সান্টু, চারঘাট (রাজশাহী) থেকে : চারঘাটে অরক্ষিত লেভেলক্রসিং ও গেটম্যান না থাকায় প্রতিনিয়ত চলাচলরত ট্রেনের সঙ্গে স্থানীয় ছোট ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। গত কয়েক বছরে অন্তত ২০টি রেল ও মোটরসাইকেল, নসিমনসহ স্থানীয় যানবাহনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও একজন ইউনিয়ন পরিষদের সচিবসহ প্রায় ১০ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন আরো বেশ কিছু মানুষ। এছাড়া রেলক্রসিং সংলগ্ন রেললাইনের দুই ধারে ঝোপঝাড় ও গাছপালা থাকায় অধিকাংশ সময়ে রাস্তা থেকে ট্রেন দেখতে না পাওয়ার ফলে অসাবধানবশত এসব দুঘর্টনা ঘটছে বলে জানান গত বৃহস্পতিবার ট্রেন ও নসিমন সংঘর্ষে অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া ঝিকরা গ্রামে মদন কুমার।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী থেকে দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালগাড়ী ট্রেনগুলো চারঘাট উপজেলার সরদহ ও নন্দনগাছী স্টেশন হয়ে চলাচল করে। দিনে ও রাতে মিলে প্রায় ২৫টি ট্রেন উপজেলায় ভেতরে দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দেয়। এই দীর্ঘ রেলপথে প্রায় ১২টি জায়গায় লেভেলক্রসিং পথ রয়েছে। উল্লেখযোগ্য লেভেলক্রসিং পথগুলো হলো- দিঘলকান্দি মোল্লাপাড়া ঢালান, দিঘলকান্দি গাঙ্গনপাড়া, হলিদাগাছী, হলিদাগাছি সিগন্যাল, দৌলতপুর, শলুয়া ঢালান, বালুদিয়ার, নন্দনগাছি, কমকারপাড়া, বরকতপুর ও কালুহাটি। এগুলোর মধ্যে শুধু দুটি জায়গার লেভেলক্রসিংয়ে রেলগেট আছে, যার একটি হলো চারঘাট-রাজশাহী মহাসড়কের হলিদাগাছি নামক জায়গায় এবং অন্যটি চারঘাট-পুঠিয়া রোডে নন্দনগাছি নামক জায়গায়।
এই দুটি লেভেলক্রসিংয়ে গেটম্যান থাকায় দুর্ঘটনা না ঘটলেও অন্য লেভেলক্রসিংগুলো প্রায়ই ট্রেনের সঙ্গে বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনের সংঘর্ষ হচ্ছে। নন্দনগাছির দোকান ব্যবসায়ী মইদুল (৩৭) বলেন, রেললাইনের ওপর এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত রয়েছে। এই রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজন মারা গেছেন এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। রেলস্টেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেকবার কথা বললেও রেলক্রসিংয়ে গেট বসানোর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। গেটম্যান না থাকার ফলে ২০২০ সালে নভেম্বর বরেন্দ্র এক্সপ্রেস নসিমনের সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কায় আহত হন তিনজন। একই বছরে দৌলতপুর ঢালানে ভ্যানের সঙ্গে উত্তরা ট্রেনের সংঘর্ষে ভ্যানচালক মারা যান, গাঙ্গনপাড়ায় নসিমনের সঙ্গে সংঘর্ষে ২ জন আহত হন। সবশেষে গত বৃহস্পতিবার শলুয়া অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেন ও ভটভটির সংঘষে ভটভটি দুমড়ে-মুচড়ে ৫শ মিটার গিয়ে ট্রেনের ইঞ্জিনে আটকে যায়। সৌভাগ্যবশত ভটভটিতে থাকা ড্রাইভারসহ একজন যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান বলে এলাকাবাসী জানান।
উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে উপজেলার প্রতিটি রেলক্রসিংয়ে গেট ও গেটম্যান বসানো খুবই জরুরি। তবে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সরদহ স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলার ভেতরে দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার রেলপথে অনুমোদিত ৩টি লেভেলক্রসিংয়ের মধ্যে ২টিতে গেট ও গেটম্যান রয়েছে এবং বাকিগুলোতে নিজস্ব সতর্কতায় চলাচল করার জন্য জনসাধারণকে নিদের্শনা দেয়া আছে। তবে খুব গুরুত্বপূর্ণ লেভেলক্রসিংগুলোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়