‘ভীষণ এক্সাইটেড ও নার্ভাস’

আগের সংবাদ

নির্বাচন ঘিরে বারবার নির্যাতন : ইস্যু যাই হোক হামলার লক্ষ্যবস্তু ‘সংখ্যালঘু’, স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ধর্ম’

পরের সংবাদ

আফগানিস্তান-নামিবিয়ার মর্যাদার লড়াই

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন পরাশক্তি আফগানিস্তান। বড় বড় দলগুলো হকছকিয়ে যায় আফগাদের বিরুদ্ধে। সুপার টুয়েলভে স্কটল্যান্ডকে ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে হারানোর পর পাকিস্তানকেও প্রায় রুখে দিয়েছিল রশিদ- মুজিবরা। এদিকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এসে ক্রিকেট বিশ্বকে একের পর এক চমক উপহার দিচ্ছে আফ্রিকার দেশ নামিবিয়া। বাছাইপর্বে আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডকে হটিয়ে ডেভিড ভিসা মূলপর্বের প্রথম ম্যাচেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় স্কটিশদের বিপক্ষে। আবুধাবির শেখ আবু জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বিকাল ৪টায় নবী-রশিদের মোকাবিলায় মাঠে নামবে ভিসা, ফ্রাইলিঙ্করা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলতে এসেছে নামিবিয়া। ওয়ানডেতে তাদের পদচারণা ২০০৩ সালে হলেও প্রথমবার তারা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ২০১৯ সালে ঘানার বিপক্ষে। তবে এই দুই বছরে ভালোই আধিপত্য করে নিয়েছে দেশটি। আফগানিস্তান ম্যাচের আগ পর্যন্ত ২৬টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে তারা। এর মধ্যে মাত্র ৫ ম্যাচে হারলেও জয়ের দেখা পেয়েছে বাকি ২১ ম্যাচেই। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে তাদের অবস্থান ১৬তম স্থানে।
এদিকে টি-টোয়েন্টি গত কয়েক বছর ধরে আধিপত্য করে চলেছে আফগানিস্তান। ২০১০ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৮৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে রশিদরা হেরেছে মাত্র ২৭ ম্যাচে, বাকি ৫৯ ম্যাচের সবকটিতে জয় আছে তাদের। ২০০৭ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কাও যেখানে বাছাইপর্বের বাধায় পড়ে, সেখানে নিজেদের তৃতীয় আসরে এসেই বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলছে আফগানিস্তান। র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে তাদের অবস্থান সাতে। নামিবিয়া টি-টোয়েন্টিতে পরাশক্তির বার্তা দিলেও আফগানিস্তান সেই অবস্থানেই আছে। র‌্যাঙ্কিং পরিসংখ্যান, পারফরম্যান্স, অভিজ্ঞতা সব দিক দিয়ে নামিবিয়ার চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তান। তবে স্বল্প বলের খেলায় যে কেউই চমক দেখিয়ে জয় তুলে নিতে পারে। তাই নামিবিয়াকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই আফগানদের।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের প্রথম যাত্রা ২০১৪ বিশ্বকাপে। সে যাত্রায় দলটি পেরোতে পারেনি বাছাইপর্বের বাধা। তিন ম্যাচের মধ্যে ২ ম্যাচে হেরে আসর থেকে বিদায় নেয় তারা। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ তাদের হারায় ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য হংকংয়ের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় তারা। কিন্তু নেপালের বিপক্ষে ৯ রানে হেরে সেবার বিশ্বকাপ যাত্রা থেমে যায় মোহাম্মদ নবীদের। পরের বিশ্বকাপেই আফগানরা যেন ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে বদলে গেল। ২০১৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা বাছাইপর্বে একে একে হারায় স্কটল্যান্ড, হংকং ও জিম্বাবুয়েকে। তবে সেবার মূলপর্বে নিজেদের খুব একটা মেলে ধরতে পারেনি তালেবান শাসিত দেশটি। একে একে হেরে বসে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে তারা যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আধিপত্য করবে সে বার্তা দিয়ে গিয়েছিল ষষ্ঠ বিশ্বকাপ আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচে। সে আসরে যারা চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গ্রুপপর্বে আফগানরা হারায় ৬ রানে। আর পরের বিশ্বকাপে অর্থাৎ চলতি বিশ্বকাপে আফগানিস্তান আর বাছাইপর্বের বাধা নিয়ে ভাবে না। তাদের পরিকল্পনায় এখন বিশ্বকাপ ট্রফি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন তারা নতুন পরাশক্তি।
আইসিসির সহযোগী দেশগুলো তো তাদের কাছে পাত্তাই পাই না আবার টি-টোয়েন্টিতে শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে তাদের লড়াই চলে হাড্ডহাড্ডি। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৬ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায় নবীরা। এরপর ব্যাটিং, বোলিং নৈপুণ্যে স্কটল্যান্ডকে সুপার টুয়েলভের মূলপর্বে একেবারে ধসে দেয় আফগানরা। তুলে নেয় ১৩০ রানের বড় জয়। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে উড়ন্ত পাকিস্তানের বুকেও প্রায় চিড় ধরিয়ে দিচ্ছিল রশিদ, মুজিবরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানদের ইনিংস থামে ১৪৭ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। জয়ের পাল্লা তখন দুই দলের দিকেই। তবে আসিফ আলীর বিধ্বংসী ইনিংসে যে যাত্রায় আফগানদের হাত থেকে রক্ষা পায় পাকরা। অথচ বিশ্বকাপের দুই হট ফেভারিট ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারাতেও এতটা বেগ পেতে হয়নি বাবর আজমদের।
এদিকে চলতি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত নামিবিয়া। প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলছে। অথচ ব্যাটিং, বোলিংয়ে যেন অজ্ঞিতায় পরিপূর্ণ একটি দল। কেনই বা থাকবে না? এই দলটিতে খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সি গায়ে খেলা অলরাউন্ডার ডেভিড ভিসা। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নিয়মিত ক্রিকেটার জেন ফ্রাইলিঙ্কও খেলছেন নামিবিয়ার জার্সি গায়ে। আর রুবেন ট্রাম্ফেলম্যান তো এর আগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওভারে তিন উইকেট নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। বিশ্বকাপ যাত্রায় বাছাইপর্বে তারা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারলেও নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ এবং আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে ইরাসমাসের নেতৃত্বাধীন দলটি। ফলে আফগানিস্তানের জন্য তারা হতে পারেন ভয়ঙ্কর এক প্রতিপক্ষ।
তবে রশিদ, মুজিব, নবীদের বোলিংয়ে বিশ্বের বাঘা বাঘা ক্রিকেটাররাও যেখানে হকচকিয়ে যায় সেখানে নামিবিয়ার জন্য তাদের মোকাবিলা বেশ কঠিনই বটে। আর হযরতউল্লাহ যাযাই, মোহাম্মদ শেহজাদের ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং নামিবিয়ার চির ধরিয়ে দিতে পারে নামিবিয়ার বোলিং শিবিরে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়