দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন : বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত ৮১ জন চেয়ারম্যান

আগের সংবাদ

সম্প্রীতির জমিনে শকুনের চোখ

পরের সংবাদ

পোশাক খাতকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। করোনায় প্রাদুর্ভাবে স্থগিত ও বাতিল হওয়া ক্রয়াদেশ ফিরে আসছে। ফলে বাড়বে রপ্তানি। এমন খবরে আমরা আশান্বিত হই। বিজিএমইএর তথ্য মতে, আগামী গ্রীষ্ম ও বসন্ত মৌসুমের জন্য মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে ১৫-২০ শতাংশ বেশি অর্ডার এসেছে, যা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার চেয়েও বেশি। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারে সেনা শাসনের কারণে কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হয়েছে। তার আগেই চীন থেকে কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে স্থানান্তর করে আসছে ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা। আগামী কয়েকটি বছর দেশের পোশাকশিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের প্রয়োজনে অত্যন্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল ভোক্তা চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের বহুমুখীকরণ বা বৈচিত্র্যসাধন, কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হলে পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। সেই প্রস্তুতি এখন থেকে নিতে হবে। অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অনেক প্রতিকূলতা এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির পথে। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে পোশাকশিল্পের কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসছে তার অন্যতম খাত হলো গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক অর্থ আয় করছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ব পোশাক বাজার এখন ৬৫০ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ এর মাত্র ৫ শতাংশ সরবরাহ করে। এ হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে পারলেই ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এই টার্গেট পূরণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক ও বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন। পোশাক খাতের ২৫ লাখ ৬২ হাজার শ্রমিকের মধ্যে সাড়ে ৩ লাখের বেশি শ্রমিক করোনার এই সময়ে কাজ হারিয়েছেন। এই সময়কালে ২৩২টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী সময়ে নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা। একই সঙ্গে পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ আরো উন্নত করতে হবে। করোনার প্রভাবে বারবার ক্রয়াদেশ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ার কারণে অনেক কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিতে শ্রমিকের মজুরি নিয়মিত পরিশোধ হয়নি। বকেয়া মজুরি এ সুসময়ে ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অর্থনীতি খাতকে চাঙ্গা রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প-কারখানার ওপর। খাতটির বিকাশের অপরিমেয় সুযোগ আমাদের সামনে রয়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশের পক্ষ থেকে আমাদের মারাত্মক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে। ব্যবসায়ের সফলতা ধরে রাখার জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক পটভূমি তৈরি অত্যন্ত জরুরি। তাই তৈরির পোশাক খাতটিকে বর্তমান ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জগুলোকে দ্রুত জয় করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়