দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন : বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত ৮১ জন চেয়ারম্যান

আগের সংবাদ

সম্প্রীতির জমিনে শকুনের চোখ

পরের সংবাদ

পর্যটনের অপার সম্ভাবনা সোনাইছড়া পানি প্রকল্প : মিরসরাইয়ে সেচের আওতায় আসছে ১শ হেক্টর কৃষি জমি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ ইউসুফ, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : মিরসরাইয়ে সোনাইছড়া পানি প্রকল্পের সেচ সুবিধায় প্রায় ৮০ হেক্টর কৃষি জমিতে রবিশষ্য চাষ ও ২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে। প্রকল্পে ৩০ ফুট গভীরের প্রায় ১০ একরের একটি লেক রয়েছে। যেখানে বর্ষাকালে পানি আটক রাখা হয়, শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ করার জন্য পানি ছাড়া হয়। সোনাইছড়া ঝর্ণাকে নিয়ে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন শিল্পও।
জানা গেছে, ২০০৬ সালে উপজেলার ১২নং খইয়াছড়া ইউনিয়নের ৫, ৬, ৭নং ওয়ার্ডের সাড়ে ৬শ কৃষককে নিয়ে সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি. গঠিত হয়। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া, নিজেদের সঞ্চিত অর্থ থেকে কৃষকদের কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয় সমিতি থেকে। বিগত কয়েক বছর আগেও বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢল পূর্ব পোলমোগরা গ্রাম প্লাবিত হতো। কৃষকদের ফসল নষ্টের পাশাপাশি পুকুরের মাছও ঢলে ভেসে যেত। পরবর্তীতে সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি পাহাড়ের পাদদেশে একটি বাঁধ নির্মাণ ও সøুইস গেট স্থাপনের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা অফিসে যোগাযোগ করেন। এলজিইডি ২০০৬ সালে ৪২ শতক জমি অধিগ্রহণ করে ও সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি ১০ শতক জমি ক্রয় করে। ৫২ শতক জমিতে প্রায় ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এলজিইডি বারোমাসি সোনাইছড়ার মুখে বাঁধ নির্মাণ ও পানি আটকানোর জন্য রেগুলেটর স্থাপন করে। একই সঙ্গে সাড়ে ৩ কিলোমিটার খাল সংস্কার করা হয়। ২০১৮ সালে বাঁধ নির্মাণ ও রেগুলেটর স্থাপনের কাজ শেষ হয়। উপজেলার ১২নং খইয়াছড়া ইউনিয়নের ৩৭নং ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, খইয়াছড়া ইউনিয়নের ৫, ৬, ৭নং ওয়ার্ডে আগে বোরো চাষ হতো না। সোনাইছড়ি পানি প্রকল্পের কারণে বিগত বছর ১০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। চলতি বছর ২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া লেকের পানি দিয়ে রবিশষ্য চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, লাউ, বরবটি, ধুন্দল, চিনাবাদাম চাষ করা হচ্ছে। প্রকল্পের পানি দিয়ে বোরো চাষ, আউশের বীজতলা প্রস্তুত, রবিশষ্যসহ প্রায় ১শ হেক্টর কৃষি জমি চাষের আওতায় এসেছে।
এদিকে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে এখানে। সোনাইছড়া পানি প্রকল্পে রয়েছে নয়নাভিরাম ঝর্ণা। ১০ একরবিশিষ্ট লেকের স্বচ্ছ নীলজলরাশি মুগ্ধ করবে যে কোনো ভ্রমণপিয়াসুকে। লেকের পাশ বেষ্টিত পাহাড় থেকে বাতাসে ভেসে আসে হরিণের ডাক ও নানা প্রজাতির পাখির সুমধুর কণ্ঠ। ভ্রমণের জন্য লেকে প্যাটেল চালিত বোড ও কায়াকিং ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে সমিতির। ইতোমধ্যে বারৈয়ঢালা ন্যাশনাল পার্ক সোনাইছড়া ঝর্ণাকে ইজারা দিয়েছে। সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির উদ্যোগে ইকো রিসোর্ট নির্মাণ ও বারৈয়ঢালা ন্যাশনাল পার্ক (সিএমসি) অধীনে ইকোশপ নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সোনাইছড়া পানি প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলে খইয়াছড়া ইউনিয়নের ৫, ৬, ৭নং ওয়ার্ডে এখন বোরো চাষ ও রবিশষ্য চাষাবাদ হচ্ছে। সোনাইছড়া ঝর্ণার রাস্তার উন্নয়ন ও ৩টি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। শিগগিরই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে বলে জানান তিনি। সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড ও বারৈয়ঢালা ন্যাশনাল পার্ক নির্বাহী কমিটির সভাপতি মো. সরওয়ার উদ্দিন বলেন, সোনাইছড়া পানি প্রকল্পের মাধ্যমে পাহাড়ি ঢল থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি প্রায় ১শ হেক্টর কৃষি জমিতে রবিশষ্য আবাদ ও বোরো চাষ হচ্ছে। পর্যটন হিসেবেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়