প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
করোনার প্রভাবে দেশে বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এখন বিশ্ব অনেকটা স্বাভাবিক। অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে প্রয়োজন প্রচুর বিনিয়োগ। আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যমান আইন-বিধি আরো সংস্কার ও সহজীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে দেশে বিনিয়োগ পদ্ধতি আরো সহজ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঞ্চার করতে হবে। বিদেশিদের জন্য বরাদ্দ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ার কথা। কিন্তু বাড়ছে না কেন। এর কারণ বের করে এ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। এদেশের আছে বিশাল মানবসম্পদ, প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় রয়েছে যথেষ্ট শ্রমশক্তি। এ শ্রমশক্তির দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমাদের দেশে পণ্য উৎপাদনের বড় বাজার রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে চীন ও ভারতের মতো দেশে রপ্তানি করা যায়। অর্থনীতিতে কূটনীতিতে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। ভিয়েতনাম বিদেশি বিনিয়োগে আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় ভিয়েতনাম ২৫ নম্বরে, যেখানে বাংলাদেশ আছে ৫৬ নম্বরে। ভিয়েতনামের রপ্তানি বাজার অনেক বড়। পোশাক রপ্তানিতেও তারা দ্বিতীয় স্থানে। বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে। তারা শুধু শ্রম শিল্প নয়, বরং এখন তারা উচ্চ প্রযুক্তি রপ্তানি করছে, যা তাদের মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেক। এটা সম্ভব হয়েছে মূলত এফডিআইয়ের কারণে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালে দেশে যে পরিমাণ নিট এফডিআই এসেছিল, এর চেয়ে ২০২০ সালে প্রায় ১০.৮০ শতাংশ কম এসেছে। ২০১৯ সালে দেশে নিট এফডিআই এসেছিল ২৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার আর ২০২০ সালে এসেছে ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে সাড়ে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো একক বছরে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, গত বছর সবচেয়ে বেশি ৪০ কোটি ডলারের নিট এফডিআই এসেছে নেদারল্যান্ডস থেকে। এরপরই রয়েছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। আর সর্বোচ্চ ৫০ কোটি ৫১ লাখ ডলারের নিট এফডিআই এসেছে বিদ্যুৎ খাতের প্রকল্পে। আমরা মনে করি, যে কোনো দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি উন্নত অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা দরকার। বাংলাদেশে একধরনের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলেও অন্যান্য দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। শিল্পকারখানার জন্য যে জমি দরকার, তা সহজে পাওয়ার উপায় নেই। অন্যদিকে সরকারি অনুমোদন নিতে উদ্যোক্তাদের ঘাটে ঘাটে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। জানা গেছে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সব ধরনের আইনি জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা), অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলো একত্রে কাজ করছে। এছাড়া ১১টি সংস্থার ৪১ ধরনের পরিষেবা দেয়ার ক্ষেত্রে এসব সংস্থার সার্বিক কার্যক্রমে গতি আনার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। আমরা চাই সরকারের উদ্যোগগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। সর্বোপরি বিনিয়োগে সব বাধা দূর হোক।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।