ইজিবাইকচালককে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬ : মাদকের টাকা জোগাতে ছিনতাই

আগের সংবাদ

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে ডিজিটাল ছোঁয়া

পরের সংবাদ

পাসপোর্ট জটিলতায় আটকে আছেন অর্ধলাখ প্রবাসী

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পাসপোর্ট জটিলতায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে প্রায় অর্ধলাখ প্রবাসীর ভবিষ্যৎ। পরিবার নিয়ে তারা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। যার প্রভাব পড়তে পারে রেমিট্যান্সে। বিদেশ থেকে দেশে ফিরে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) নবায়ন করতে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে তথ্যে অসঙ্গতি থাকায় ঝুলে আছে তাদের পাসপোর্ট। প্রতিকারের আশায় দৌড়ঝাঁপ করে সদুত্তর না পাওয়ায় তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। আবার অনেকের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর্যায়ে। এরমধ্যে বরিশাল ও ময়মনসিংহ পাসপোর্ট অফিসে এসব পাসপোর্ট নবায়ন করতে দালালরা দাবি করছে ২০-৫০ হাজার টাকা। নিরুপায় হয়ে অনেকে এ ফাঁদে পা দিলেও অধিকাংশই হতাশায় পড়েছেন।
জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের তোয়াক্কা না করে কয়েক বছর আগে দালালদের মাধ্যমে পাসপোর্ট করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন অনেকে। যাদের অনেকের এনআইডিতে উল্লিখিত স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার সঙ্গে পাসপোর্টে উল্লিখিত ঠিকানার হেরফের রয়েছে। অনেকের ঠিকানাই ভুয়া। দালালরা চুক্তিতে এসব পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়ার পর যারা এ নিয়ে বিদেশে গেছেন তারা এবার দেশে ফিরে পড়েছেন বিপাকে। ওই সব পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নবায়নের আবেদন করলে এনআইডির সঙ্গে তথ্যে গরমিল থাকায় নতুন পাসপোর্ট হচ্ছে না। পাসপোর্টে ভিসার মেয়াদ থাকলেও তা নবায়ন না হওয়ায় তারা যেতে পারছেন না বিদেশে। এদের মধ্যে এমআরপি পাসপোর্টধারীরা আছেন অধিক বিপাকে।
একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক জানিয়েছেন, পাসপোর্ট জটিলতায় সৌদি আবর, মালয়েশিয়া, কাতার ও দুবাই থেকে ফেরা প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক এখন দিশাহারা। যাদের অধিকাংশ অশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত শ্রমিক। পাসপোর্ট তৈরিতে তাদের ভরসা ছিল দালাল। ভিসার মেয়াদ থাকলেও পাসপোর্ট জটিলতায় এরা দেশে আটকে পড়ায় বন্ধ আছে রেমিট্যান্স। পরিবার নিয়ে এরা পড়েছেন ঝুঁকিতে। এ নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন অনেকে। তবুও মিলছে না সদুত্তর।
সূত্রমতে, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে এমআরপি পাসপোর্ট নবায়ন বলতে গেলে বন্ধ রয়েছে। তবে ময়মনসিংহ ও বরিশাল অফিসে ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিয়ে দালাল ধরে এমআরপি পাসপোর্ট নবায়ন করা যাচ্ছে। অন্য আঞ্চলিক অফিসগুলোতে তাও সম্ভব হচ্ছে না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, এনআইডির সঙ্গে পাসপোর্টে উল্লিখিত বয়স এমনকি জন্ম সন ও তারিখেও ফারাক রয়েছে।
এদিকে, এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি অভিবাসীরা তাদের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, এক কোটিরও বেশি অভিবাসী বছরে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান, যা দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখে। কিন্তু তাদের সমস্যাগুলো কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করছে না। মালয়েশিয়া প্রবাসী ওয়াহিদ নিজাম জানান, পাসপোর্ট পেতে চার থেকে ছয় মাস সময় লেগেছে। এতে, প্রবাসীরা অনিশ্চয়তা আর মালয়েশিয়ান পুলিশের গ্রেপ্তারের ভয়ে আছেন। তিনি বলেন, সময়মতো পাসপোর্ট না পাওয়ার কারণে আমরা অনেকেই কাজের অনুমোদন নবায়ন করতে আবেদন জমা দিতে পারছি না। এমনকি যারা নথিভুক্ত নন, তারা সাধারণ ক্ষমা প্রাপ্তির প্রক্রিয়াতেও আবেদনপত্র জমা দিতে পারছেন না।
সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক রশিদুল ইসলাম জানান, আবেদনপত্র জমা দেয়ার তিন থেকে চার মাস পরও পাসপোর্ট না পাওয়ায় তারা উদ্বেগের মধ্যে আছেন। সৌদি আরবে কর্মরত এক বাংলাদেশি অভিবাসী জানান, তারা দূতাবাসের কাছ থেকে পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার কারণে ইকামা (বসবাসের অনুমতি) নবায়ন করতে পারছেন না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়