টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সফল পাঁচ অধিনায়ক : তাইফ রহমান রাফি

আগের সংবাদ

সড়কে নেই ‘ডিজিটাল’ ছোঁয়া

পরের সংবাদ

উইন্ডিজকে লজ্জায় ডুবিয়ে ইংল্যান্ডের শুভ সূচনা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৪, ২০২১ , ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও রানার্সআপ ইংল্যান্ড মুখোমুখি হচ্ছে। এ ম্যাচে নিশ্চিত চার ছক্কার ফুলঝুরি ছুটবে। বোলার ব্যাটসম্যানরা তাদের কারিশমা দেখাবে। গতকাল এমনই প্রত্যাশা ছিল সবার। তবে এর কিছুই হয়নি। গতকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গত বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্টের ম্যাচটি হয়েছে লো স্কোরিং। চার ছক্কার ফুলঝুরি ছড়ানোর বদলে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এক ম্যাচেই হয়েছে অনেক লজ্জার রেকর্ডের মালিক। উইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে শুভ সূচনা করেছে ইংল্যান্ড।
চরম উত্তেজনাকর ম্যাচটিতে গতকাল প্রথমে ব্যাট করে ১৪.২ বল খেলে মাত্র ৫৫ রানে আউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। জবাবে ৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংলিশরা। সর্বশেষ ২০১৬ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছিল দুই দল। সেবার ইংলিশদের হারিয়ে শিরোপা জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই হারের বদলা ইংল্যান্ড নিল এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই। ইংল্যান্ডকে দ্রæত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে ২২ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলেন জস বাটলার। ইংলিশদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ রান করেন জেসন রয়।
ম্যাচটিতে মূলত ইংলিশ স্পিনারদের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়েছে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ। স্পিনার আদিল রশিদ মাত্র ২ রান দিয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা সবচেয়ে ভালো বোলিংয়ের রেকর্ড। অপর স্পিনার মঈন আলী ১৭ রানে তুলে নেন দুটি উইকেট। সিমন্স ও হেটমায়ারকে আউট করায় ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন তিনি। এর আগে বিশ্বকাপে সেরা বোলিং ছিল শ্রীলঙ্কার রঙ্গনা হেরাথের। তিনি ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৩ রান দিয়ে পাঁচটি উইকেট নেন। উইকেট শিকারের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন আরেক লঙ্কান বোলার অজন্তা মেন্ডিস। তিনি মাত্র ৮ রান দিয়ে ২০১২ সালে জিম্বাবুয়ের ছয়টি উইকেট শিকার করেছিলেন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৫ রান করে লজ্জার সব রেকর্ডের মালিক হয়েছে ডিফেন্ডিং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ৫৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বনি¤œ রানের লজ্জার রেকর্ড গড়েছে ক্যারিবিয়ানরা। প্রথমত, বিশ্বকাপে এটি তাদের সর্বনি¤œ রানের লজ্জাজনক রেকর্ড। এর আগে বিশ্বকাপে সর্বনি¤œ ১০১ রান করেছিল তারা। সেটি ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওভালের মাঠে হয়েছিল। তাছাড়া নিজেদের টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বনি¤œ রান। ২০২০ সালে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই মাত্র ৪৫ রানে অলআউট হয়েছিল দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এখন এই ইংল্যান্ডই তাদের দ্বিতীয় সর্বনি¤œ রানের লজ্জা দিল। তাছাড়া বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বনি¤œ রান। ৩৯ ও ৪৪ রান করে প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বনি¤œ রানের লজ্জার রেকর্ডটির মালিক হলো নেদারল্যান্ডস। এর আগে তৃতীয় সর্বনি¤œ রানের রেকর্ডটি ছিল নিউজিল্যান্ডের। তারা ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে মাত্র ৬০ রানেই আউট হয়ে যায়।
ম্যাচটিতে শুরুতেই ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ৮ রানের মাথায় এভিন লুইস মাত্র ৬ রান করে ক্রিস উকসের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান। এরপর ক্রিজে আসেন ক্রিস গেইল। তবে অপর ওপেনার লেন্ডি সিমন্সও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি। তিনি মঈন আলীর বলে ক্যাচ আউট হন। এরপর দায়িত্ব এসে পরে ক্রিস গেইলের ওপর। তিনি দেশেশুনে খেলার নীতি নিয়ে খেলতে থাকেন। তাকে পাশে থেকে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করেন শিমরন হেটমায়ার। কিন্তু বেশিক্ষণ ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারেননি তিনি। দলীয় ২৭ রানের সময় ৯ রান করে মঈন আলীর বলেই ক্যাচ আউট হন তিনি। হেটমায়ারের মতো ধৈর্য হারান ক্রিস গেইলও। তিনি দলীয় ৩১ রানের সময় ১৩ রান করে তাইমাল মিলসের বলে ক্যাচ আউট হন বাজে একটি শট খেলে। এরপর দলীয় ৩৭ রানের সময় ডোয়াইন ব্রাভো ক্রিস জর্ডানের বলে ক্যাচ আউট হন। তিনি আউট হওয়ার পর নিকোলাস পুরান ১, কাইরন পোলার্ড ৬, আন্দ্রে রাসেল শূন্য, ওবে ম্যাককয় শূন্য ও রবি রামপাল ৩ রান করে আউট হয়ে যান। ১৩ বলে ৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন আকিল হোসেন।
তাছাড়া ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের ফিল্ডারদের পারফরমেন্স ছিল চোখে পড়ার মতো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০ ব্যাটসম্যানের মধ্যে সাতজনই হন ক্যাচ আউট। আর যতবারই ক্যাচ উঠেছে তার একটিও তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হননি ইংলিশ ফিল্ডাররা। আদিল রশিদের চার উইকেটের পাশাপাশি দুটি করে উইকেট শিকার করেন মঈন আলী ও তাইমাল মিলস। আর একটি করে উইকেট শিকার করেন ক্রিস ওকস ও ক্রিস জর্ডান।
তবে এই রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডও কিছুটা ধাক্কা খায়। দলীয় ২১ রানের সময় জেসন রয়, ৩০ রানের সময় জনি বেয়ারেস্টো ৯ রান, ৩৬ রানের সময় মঈন আলী ৩ রান করে রান আউট হন। সর্বশেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে লিভিংস্টোন দলীয় ৩৯ রানের সময় এক রান করে আউট হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৪ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন আকিল হোসেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়