ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে আরেক মামলা

আগের সংবাদ

রুট পারমিটের তোয়াক্কা নেই রাজধানীর গণপরিবহনের

পরের সংবাদ

আলোচনা সভায় সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী : বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে জাতীয় ইস্যু হিসেবে দেখতে হবে

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে হলে একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে গুরুত্বারোপ করতে হবে টেকসই সার্কুলার ইকোনমির (ফোর আর) দিকেও। এজন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। সিটি করপোরেশনের বাজেটে যে থোক বরাদ্দ দেয়া হয় তা একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে আনার পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে একটি জাতীয় ইস্যু হিসেবে দেখতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক আইনি সীমাবদ্ধতা ও সুপারিশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউএসএইড ও এফসিডিওর আর্থিক সহযোগিতায় এবং কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহযোগিতায় ডিএসকে কনসোর্টিয়াম কর্তৃক বাস্তবায়িত ঢাকা কলিং প্রকল্পের উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়। দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (ডিএসকে) নির্বাহী পরিচালক ও কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওরের (কাপ) চেয়ারপারসন ডা. দিবালোক সিংহের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য রেজাউল করিম বাবলু, ভোরের কাগজ সম্পাদক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শ্যামল দত্ত, ইনসাইটসের উপদেষ্টা সুমন আহসানুল ইসলাম, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি মইনুদ্দীন আহমদ ও এনডিবিইউএসের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার। আর ঢাকা কলিং প্রকল্প সম্পর্কে অবগত করেন কনসোর্টিয়াম কো-অর্ডিনেটর সানজিদা জাহান আশরাফী।
তানভীর শাকিল জয় বলেন,

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুনির্দিষ্ট আইন না থাকলেও পরিবেশ সংরক্ষণে যেসব আইন বিদ্যমান তার যথাযথ প্রয়োগ কতটুকু হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরকরণে এর বাণিজ্যিকীকরণ জরুরি বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
রেজাউল করিম বাবলু বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশ গঠন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কাজ করছে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করে তৃণমূল পর্যায়ে এই সচেতনতা বৃদ্ধিতে এনজিওর কাজকে সমর্থন করে তৃণমূলের তথ্য তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য এনজিওদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
শ্যামল দত্ত বলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালায় গ্যাপ নিরসন, দ্রুত অনুমোদন ও সঠিক বাস্তবায়ন দরকার। সুইডেনের মতো বিশ্বের অনেক দেশ বর্জ্য আমদানি করে যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুমন আহসানুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫, পরিবেশসংক্রান্ত সব আইনের জন্য একটি ছাতার ন্যায় কাজ করলেও এখানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তেমন কিছু বলা নেই। সিটি করপোরেশন কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সিটি করপোরেশন আইন-২০০৯ এ উল্লেখ থাকলেও তা কীভাবে করবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা আইনে নেই। তাই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ আইনি বিধিমালা প্রণয়ন জরুরি।
আবু নাসের খান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বর্জ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্জ্য কমিয়ে আনা এবং একে সম্পদে রূপান্তরিত করায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই।
মইনুদ্দীন আহমদ বলেন, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরকরণে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া যেতে পারে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় টেকসই একটি মডেল তৈরি করতে পারলে সেটা সব জায়গায় বাস্তবায়ন করা যাবে। ঢাকা কলিং প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন সময় প্রাপ্ত যেসব সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়েছে তা বিবেচনায় নেয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।
বস্তিবাসী সংগঠনগুলোর পক্ষে ফাতেমা আক্তার বলেন, বস্তিবাসীদের বর্জ্য অপসারণ সেবা অধিকার এবং বস্তিতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতকরণে নীতিমালা এবং আইনে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরের মাধ্যমে নগর দরিদ্রদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিরও অনুরোধ জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. দিবালোক সিংহ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী ২০ বছরে প্রায় তিন কোটি লোক বাস্তুহারা হয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে নগরের বস্তিগুলোতে আশ্রয় নেবে, যা নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আরো শোচনীয় করে তুলবে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পর্কিত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি সংসদে উত্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, পরিবেশ আইন (কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) ও বিধিগুলোর সংশোধনের উদ্যোগকে গতিশীল করা, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কর্তৃক কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ (খসড়া) চূড়ান্ত করা ও তা অনুমোদন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বাজেট বৃদ্ধি করা ও নগর এলাকায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আরো যতœবান এবং প্রণীত বিধি বাস্তবায়নে নজরদারি বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়