রাশিয়ার একাতেরিনবার্গে ভেজাল মদপানে মৃত্যু ১৮

আগের সংবাদ

মরুর বুকে গতির ঝড় অব্যাহত

পরের সংবাদ

যেভাবে এলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বতর্মানে বিশ্বব্যাপী ৪টি ফরমেটে খেলা হচ্ছে ক্রিকেট। ফরমেটগুলো হলো- টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি ও টি-টেন। এ ৪টি ফরমেটের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ২০ ওভারের খেলা টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেটের জনপ্রিয় এ ফরমেটটির কোনো অস্তিত্বও ছিল না ২০০০ সালের আগে। ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টির আবির্ভাব হয় ইংল্যান্ডের হাত ধরে।
২০০২ সালে ইংল্যান্ডের ৫০ ওভারের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা ব্যান্ডসন এন্ড হেজেস কাপের সমাপ্তি ঘটে। তখন এ টুর্নামেন্টটির জায়গায় নতুন একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার জন্য মাঠে নামে ইংল্যান্ড বোর্ড (ইসিবি)। আর তখন ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটের চেয়ারম্যানের কাছে ইসিবির মার্কেটিং অফিসার স্টুয়ার্ট রবার্টসন ৫০ ওভারের বদলে ২০ ওভারের খেলা চালানোর প্রস্তাব দেন। মূলত তখন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল সাধারণ ইংলিশ দর্শকরা। ফলে প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্য কম সময়ের মধ্যে ম্যাচ আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করতে থাকে ইংল্যান্ড। আর সেই চিন্তা থেকেই ২০০৩ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে টি-টোয়েন্টি। কাউন্টি ক্রিকেটে টোয়েন্টি-২০ কাপ নিয়ে শুরু হয় ২০ ওভারের খেলার। বিখ্যাত লর্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় মিডেলসেক্স ও সারে। ওই ম্যাচটিতে প্রায় ২৮ হাজার দর্শক উপস্থিত হয়। কাউন্টি ক্রিকেটে ১৯৫৩ সালের পর যা ছিল একটি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি দর্শকের উপস্থিতি।
নতুন একটি ফরমেট যে এতটা জনপ্রিয়তা পাবে তা ভাবতে পারেনি ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। ইংল্যান্ডের এ সফলতা দেখে ২০০৪ সালে পাকিস্তান ঘরোয়াভাবে ২০ ওভারের খেলা চালু করে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এভাবে দ্রুতগতিতে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলোতে এমন সাফল্য পাওয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ২০ ওভারের খেলা সংযুক্ত করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। সর্বপ্রথম ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের পুরুষ দল খেলে। আর ওই ম্যাচটিতেই ব্যাপক দর্শক মাঠে আসে।
ঘরোয়া প্রতিযোগিতা ও আন্তর্জাতিক দ্বিপক্ষীয় ম্যাচে সাধারণ মানুষের আগ্রহ দেখে ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় আইসিসি। ২০০৭ সালেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে হয় ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। ওই ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের পর দক্ষিণ আফ্রিকায় হয় টি-টোয়েন্টির প্রথম বিশ্বকাপ। ওয়ানডে বিশ্বকাপ যে দর্শক হয়েছিল তার চেয়ে বহু দর্শক হয়েছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ২০ ওভারের খেলার প্রথম বিশ্বকাপ হয় আইসিসি ওয়ার্ল্ড টোয়েন্টি-টোয়েন্টি নামে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের ফাইনালে খেলে ভারত ও পাকিস্তান। আবার শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জেতে ভারত। আর ভারতের শিরোপা জয়ের মাধ্যমে আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ২০ ওভারের খেলা। প্রথম বিশ্বকাপে মোট ১২টি দেশ খেলে। আইসিসির পূর্ণ ১০ সদস্য ও ২টি সহযোগী দেশ হিসেবে কেনিয়া ও স্কটল্যান্ড খেলে। আইসিসি ২০০৭ ক্রিকেট ওয়াল্ড লিগ ডিভিশনের মাধ্যমে এ ২টি দেশ খেলার সুযোগ পায়। প্রথম বিশ্বকাপেই ঘটে নানা নাটকীয়তা। ভারতের যুবরাজ সিং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক ওভারে ৬টি ছক্কা হাঁকান। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন ক্রিস গেইল। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। সব মিলিয়ে এলাহি কাণ্ড। প্রথম বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট শুধু উপরেই উঠেছে। বিশ্বকাপের সফলতা দেখে ২০০৮ সালে ভারত শুরু করে আইপিএল। আর আইপিএলের কল্যাণে বিশ্বব্যাপী আরো বেশি ছড়িয়ে যায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। ২০০৭ সালেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে বছর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ হবে সে বছর আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোনো আসর হবে না। আর এ কারণে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় আসর হওয়ার পর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের আগের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করার জন্য ২০১০ সালেও হয় বিশ্বকাপের আরেকটি আসর। এরপর দুই বছর পরপর নিয়মিত বিশ্বকাপ আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১২, ২০১৪ ও ২০১৬ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়। তবে প্রতি দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজন করায় আবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ থাকায় দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলো নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। আবার ঘন ঘন বিশ্বকাপ আয়োজন করায় আইসিসিরও হিমশিম খেতে হয়। য় মোহাম্মদ তানভীরুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়