ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে আরেক মামলা

আগের সংবাদ

রুট পারমিটের তোয়াক্কা নেই রাজধানীর গণপরিবহনের

পরের সংবাদ

মরুর বুকে গতির ঝড় অব্যাহত

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ চলছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মানেই হলো উত্তেজনা। এর ছাপ ইতোমধ্যেই বাছাইপর্বে পড়েছে। গতকাল পর্যন্ত হওয়া পাপুয়া নিউগিনি ও স্কটল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ পর্যন্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি রেকর্ড। গত ১৭ অক্টোবর নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে জয় পায়। পরশুদিন আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাচে চার বলে চারটি উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র বোলার হিসেবে ডাবল হ্যাটট্রিক করেন আইরিশ পেসার কুর্তিস ক্যাম্পার।
গতকাল পাপুয়া নিউগিনি ও স্কটল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করে স্কটল্যান্ড। ম্যাচটিতে তারা ১৬৫ রান করে ৯ উইকেট হারিয়ে। তারা তাদের যে ৯টি উইকেট হারায় তার মধ্যে ছয়টি খোয়ায় নিজেদের ইনিংসের শেষ ১১ বলে। এখন পর্যন্ত মরুর দেশ ওমানে দেখা যাচ্ছে বোলারদের দাপট। বিশেষ করে পেসাররা ভালো করছেন। এর মধ্যে কাবুয়া মোরিয়ার এক ওভারে যায় চারটি উইকেট। এ ম্যাচটিতে পাপুয়া নিউগিনি ১৭ রানে হেরে যায়। স্কটিশদের এ রানের জয় এনে দিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন পেসার জস ডেভি। তিনি মাত্র ১৮ রান দিয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন।
বিশ্বকাপের এবার উদ্বোধন হয় পাপুয়া নিউগিনি ও ওমানের ম্যাচের মাধ্যমে। সে ম্যাচটিতে ওমানের অধিনায়ক জিসান মাকসুন চারটি উইকেট তুলে নেন। যদিও তিনি স্পিনার। তবে দলের বাকি দুই পেসার বিলাল খান ও কালিমুল্লাহ দুটি করে উইকেট তুলে নেন। সব মিলিয়ে তাদের ঝলকে মাত্র ১২৯ রানে গুটিয়ে যায় পাপুয়া নিউগিনি।
এরপর বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ডের ম্যাচে গতির ঝড় তোলেন বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ডের পেসাররা। বাংলাদেশের বিপক্ষেও জয় পেতে পেসার স্কট ডেভি অবদান রাখেন। পরশুদিন নেদাল্যান্ডসের বিপক্ষে তো আয়ারল্যান্ডের পেসার রেকর্ডই গড়ে ফেললেন। ওই দিন দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে নামিবিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামে শ্রীলঙ্কা। নামিবিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কার মিডিয়াম পেসার মহিস থিকসানা তিনটি ও ফুল পেসার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা দুটি উইকেট তুলে নিয়ে নামিবিয়াকে মাত্র ৯৬ রানে গুটিয়ে দেন।
এদিকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে আইরিশ পেসার কুর্তিস ক্যাম্পার তৃতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে চার বলে চারটি উইকেট শিকার করেছেন। এর আগে আফগানিস্তানের স্পিনার রশিদ খান ও শ্রীলঙ্কার পেসার লাসিথ মালিঙ্গা চার বলে চারটি উইকেট শিকার করেছিলেন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৪ বছর পর দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের দেখা মেলে কুর্তিস ক্যাম্পারের সৌজন্যে। কিন্তু এতেই ক্ষান্ত থাকেননি। বিশ্বকাপে নতুন করে ইতিহাস লেখেছেন তিনি। ক্যাম্পার ম্যাচটিতে চার ওভার বল করে ২৬ রান দিয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন। এই এক ওভারেই যা করার তার করে নেন তিনি। ক্যাম্পার প্রথমে তার শিকারে পরিণত করেন কলিন অ্যাকারম্যানকে। এরপর অভিজ্ঞ রায়ান টেন ডেসকাটকে সাজঘরের পথে পাঠান তিনি। হ্যাটট্রিক করার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর সেটি করতে আর ভুল করেননি ক্যাম্পার। তিনি তার হ্যাটট্রিকটি তুলে নেন স্কট এডোয়ার্ডকে আউট করে। হ্যাটট্রিক করেই ক্ষান্ত হননি এই আইরিশ পেসার। নিজের অসাধারণ দক্ষতায় রিউলফ ভেন ডার মারউইকে সরাসরি বোল্ড আউট করে চার বলে চার উইকেট পূর্ণ করেন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চার বলে চার উইকেট নেয়ার ঘটনা ঘটে সর্বপ্রথম ২০১৯ সালে। সেবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চার বলে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে ইতিহাস গড়েন আফগান স্পিনার রশিদ খান। এবার আয়ারল্যান্ডের বোলার ইতিহাস গড়লেও সেবার আয়ারল্যান্ড হয়েছিল অঘটনের শিকার। এরপর দ্বিতীয়বার এমন কীর্তি গড়েন শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা। এমনকি সে ২০১৯ সালেই। সেবার শ্রীলঙ্কার মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আসে নিউজিল্যান্ড। সে ম্যাচটিতে চার বলে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন মালিঙ্গা।
সেবার টি-টোয়েন্টিতে চার বলে চার উইকেট তুলে নিয়ে ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য এক রেকর্ডের মালিক হয়ে যান তিনি। সেটি হলো ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই ফরমেটেই একমাত্র বোলার হিসেবে চার বলে চারটি উইকেট নেয়া।
কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গা ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার বলে চারটি উইকেট নিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। এর আগে অনেক বোলার হ্যাটট্রিক করলেও চার বলে যে চারটি উইকেট তুলে নেয়া যায় সেটি বুঝিয়েছিলেন মালিঙ্গা। লঙ্কান এ পেসার ওয়ানডেতেও প্রায় ১৪ বছর আগে এমন কীর্তি গড়ার পর এখন পর্যন্ত কেউ তার রেকর্ডে ভাগ বসাতে পারেনি।
তবে টি-টোয়েন্টিতে এমন ঘটনা ইতোমধ্যেই তিনবার ঘটে গেল। রশিদ খান যখন ২০১৯ সালে প্রথম এমন কীর্তি গড়েন তখন মনে করা হয়েছিল রশিদ খানের এ রেকর্ড অক্ষুন্ন থাকবে দীর্ঘদিন। তবে সে বছরই তার রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে দেন মালিঙ্গা। আর দুই বছর বাদে আয়ারল্যান্ডের ক্যাম্পার এখন বিশ্বের দুই সেরা বোলারের সঙ্গে যৌথভাবে রেকর্ডের মালিক হলেন।
তবে মালিঙ্গা রশিদ খান ও ক্যাম্পারের চেয়ে একটি দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছেন। আর সেটি হলো তিনি বাকি দুইজনের চেয়ে অনেক কম রান দিয়েছেন।
রশিদ খান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচটিতে চার ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে মোট পাঁচটি উইকেট তুলে নেন। চার বলে চারটি উইকেট নিলেও তার বলে আইরিশ বোলাররা রান তুলে নিতে সমর্থ হয়। অপরদিকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ক্যাম্পার মোট ২৬ রান দিয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন। কিন্তু মালিঙ্গা যেমন উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তেমনই রানের চাকা সমানভাবে আটকে রাখতে সমর্থ হন। তিনি সেবার চারটি উইকেট তুলে নেন মাত্র ছয় রান দিয়ে।
তবে এ তিনজনের মধ্যে একটি মিল রয়েছে সেটি হলো তারা যেদিন রেকর্ড গড়েছেন সেদিন তাদের প্রত্যেকের দল জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। মানে তাদের এমন অসাধারণ বোলিং বেশ কাজে দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়