এ মাসের ১৫ দিনে ডেঙ্গু রোগী ছাড়ালো ৩ হাজার

আগের সংবাদ

ভস্মীভূত হিন্দুপল্লীজুড়ে আতঙ্ক : মূল হোতাসহ ৪৬ জন গ্রেপ্তার, থানায় দুই মামলার প্রস্তুতি, প্রতিবাদে রংপুরে বিক্ষোভ > সাম্প্রদায়িক হামলা

পরের সংবাদ

হার দিয়েই শুরু টাইগারদের বিশ্বকাপ মিশন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্বকাপের মিশনে নামার আগে বাছাইপর্বে দুটি ম্যাচে হেরে যায় বাংলাদেশ। তখন থেকেই একটি শঙ্কা কাজ করছিল বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে কি করবে বাংলাদেশ? কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না তো। ওমানের মাস্কটে আল আমিরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সেই ভয়টাই সত্যি হয়েছে। টাইগাররা গতকাল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ রানে হেরে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে। সুপার টুয়েলভে যেতে হলে এখন বাংলাদেশে নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয় ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকল না। গত কয়েক ম্যাচ ধরেই বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়েও একটি শঙ্কা করা হচ্ছিল। এই শঙ্কাটাও সত্যি হলো। বোলাররা তাদের কাজটা করে দিলেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এ ম্যাচে স্কটিশ বোলাররা দারুণ নিয়ন্ত্রিত ও বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং করেছেন। আর সে চাপে বাউন্ডারির জন্য হাপিত্যেশ করতে করতে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা। এ ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বোলাররা যত না ভালো বল করেছেন তার চেয়ে বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে ম্যাচ জিতেছে। ২০১২ সালেও বাংলাদেশকে হারিয়েছিল স্কটল্যান্ড। আগামীকাল টাইগাররা ওমানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে। বৃহস্পতিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনির মোকাবিলা করবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। গতকাল টাইগারদের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন স্কটল্যান্ডের ক্রিস গ্রেভেস।
গতকাল প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করে স্কটল্যান্ড। জবাবে টাইগাররা ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করে থেমে যায়। বাংলাদেশ এর আগে ২০১৪ ও ২০১৬ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে খেলেছে। গতকাল একটা সময়ে ৫৩ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল স্কটিশরা। শেষ দিকে ক্রিস গ্রেভেসের ২৮ বলের ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংসে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করাতে সমর্থ হয় স্কটল্যান্ড।
ম্যাচটিতে বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান। অপরদিকে দুটি উইকেট তুলে নিয়ে ১০৮ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গাকে সরিয়ে দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হিসেবে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন সাকিব আল হাসান। ১৪১ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে ম্যাচটিতে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। দলীয় ৮ রানের মাথায় ৫ বল খেলে ৫ রান করে জস ডেভির বলে ক্যাচ আউট হন সৌম্য সরকার। এরপর ব্যাট করতে নামেন সাকিব। আরেক ওপেনার লিটন দাসকে নিয়ে যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল তখন লিটন দাস ৭ বল খেলে ৫ রান করে ব্র্যাড হুইলের বলে জর্জ মুনসির হাতে ধরা পড়েন। সৌম্যর ক্যাচটিও নিয়েছিলেন মুনসি। এরপর আসেন মুশফিকুর রহিম। তবে তিনি ও সাকিব মিলে রানের চাকা সচল রাখতে পারছিলেন না। তাদের শক্তভাবে চেপে ধরেন স্কটল্যান্ডের বোলাররা। ম্যাচের আট ওভার পর্যন্ত ভীষণ চাপে ছিলেন তারা। তবে ম্যাচের নবম ওভারে গিয়ে ১৮ রান তুলে নেন দুইজন মিলে। মাইকেল লিসাকের করা ওই ওভারটিতে পর পর দুটি ছক্কা মারেন মুশফিক। এরপর মুশফিক হাত খুলে মারতে থাকেন। কিন্তু সাকিব যেন খেলতে পারছিলেন না। তবে যখন তিনি হাত খুলে মারলেন ঠিক তখনই ক্রিস গ্রেভেসের বলে বাউন্ডারিতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। এরপর মুশফিকও সেই গ্রেভেসের বলে ৩৬ বল খেলে ৩৮ রান করে সরাসরি বোল্ড আউট হয়ে যান। এক প্রান্ত আগলে ধরে খেলতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বলের সঙ্গে সমান তালে রান তুলতে পারছিলেন না তিনি। অবশেষে ২২ বল খেলে ২৩ রান করে ক্যাচ আউট হন তিনি। একটা সময় আফিফ হোসেন রান তোলার চেষ্টা করলেও তিনিও ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তিনি ১২ বলে করেন ১৮ রান। নুরুল হাসান সোহান ৩ বলে ২ রান করেন। শেষ দিকে সাইফ উদ্দিন ও মেহেদী হাসান শুধুই ব্যবধান কমান। যা ক্ষতি হওয়ার তা আগেই হয়ে যায়। মেহেদী ৫ বল খেলে ১৩ রান করেন। অপরদিকে সাইফউদ্দিন ২ বলে ৫ রান করেন।
স্কটল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট তুলে নেন ব্রেড হুয়েল। ২৪ রানে তিনি এ তিনটি উইকেট নেন। ব্যাটিংয়ে স্কটল্যান্ডের হয়ে দ্যুতি ছড়ানো ক্রিস গ্রেভেস বোলিংয়েও দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেন। তিনি তিন ওভার বল করে ১৯ রানে মুশফিক ও সাকিবের উইকেট দুটি তুলে নেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচটিতে প্রথমেই বিপদে পড়ে যায় স্কটল্যান্ড। বাংলাদেশের বোলারদের চাপের মুখে পড়ে তারা। যেখানে পাওয়ার প্লেতে রানের ফোয়ারা ছোটার কথা ছিল সেখানে তারা রানই করতে পারেনি।
অধিনায়ক কোয়েতজার ৭ বল খেলে কোনো রান করার আগে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে আউট হন। এরপর জর্জ মুনসি ও ম্যাথু ক্রস মিলে ৪০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। এই পার্টনারশিপ ভাঙেন স্পিনার মেহেদি হাসান। তিনি ক্রসকে এলবিডব্লিউ আউট করে দেন। এরপর মুনসিকে করেন বোল্ড। তখনই বড় চাপে পড়ে যায় স্কটল্যান্ড। সাকিব তখন নিজের দ্বিতীয় ওভারে দুটি উইকেট তুলে নিয়ে তাদের আরো চেপে ধরতে সমর্থ হন। বেরিংটনকে ২ ও লিসাককে ০ রানে ফেরান সাকিব। এরপর ম্যাকলিউডকে ৫ রানে মেহেদি ফেরালে মাত্র ৫৩ রানেই ছয় উইকেট পড়ে যায় স্কটল্যান্ডের। শেষের দিকে স্কটল্যান্ড আরেকটি পার্টনারশিপ গড়তে সমর্থ হয় ক্রিস গ্রেভাস ও মার্ক ওয়েট মিলে টানেন দলকে। তবে ওয়েট ১৭ বলে ২২ রান করে তাসকিনের বলে ক্যাচ আউট হন। কিন্তু একপ্রান্ত আগলে রাখেন গ্রেভেস। তিনি শেষ পর্যন্ত ২৮ বল খেলে ৫৬ রান করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়