গুলিস্তানে বাস উল্টে ২ কাবাডি খেলোয়াড় আহত

আগের সংবাদ

মণ্ডপে হামলার নেপথ্যে কারা

পরের সংবাদ

নানা সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত : পাবনা মানসিক হাসপাতাল এখন নিজেই ভারসাম্যহীন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আবুল কালাম আজাদ, পাবনা থেকে : ব্রিটিশ আমলের অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, কর্মকর্তা আর যন্ত্রপাতির অভাবে মানসিক চিকিৎসাসেবা নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নেই আধুনিক মানের বহির্বিভাগ। নানা সংকটে পাবনা মানসিক হাসপাতালটি নিজেই ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। সিনিয়র কনসালটেন্ট ও ক্লিনিক্যাল সাইক্রিয়াটিস্ট ছাড়াই ৩১ জন চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ১১ জন চিকিৎসক দিয়েই চলছে দেশের একমাত্র ৫০০ শয্যার বিশেষায়িত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাবনা মানসিক হাসপাতাল।
জানা গেছে, ১৯৫৭ সালে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালটি জেলা শহরে ‘শিতলাই হাউজ’ নামক জমিদার বাড়িতে এটি অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়। এর দুই বছর পরই ১৯৫৯ সালে পাবনা জেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে হেমায়েতপুরে ১১২.২৫ একর জমির উপর হাসপাতালটি স্থানান্তরিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে শয্যা সংখ্যা ছিল ৬০টি। ১৯৫৯ সালে ২০০ এবং ১৯৬৬ সালে ৪০০ ও ২০০০ সালে হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। হাসপাতালটির মোট ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে পুরুষ রোগীর জন্য প্রতি বছর ১৩টি এবং নারী রোগীদের জন্য ৫টি নির্দিষ্ট ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর জনসংখ্যা ও মানসিক রোগীর হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়লেও সে অনুপাতে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বা চিকিৎসকের পদ সংখ্যা বাড়েনি। আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও), অ্যানেসথেটিস্ট, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট, বায়োকেমিস্ট, ডেন্টাল সার্জনের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসক ছাড়াই চলছে এ মানসিক হাসপাতাল। প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় ১ হাজার থেকে দেড় হাজার রোগী সেবা নিতে আসেন। আউটডোরে এসব রোগী বা রোগীর সাথে আসা মানুষের জন্য নেই বিশ্রাম বা বসার জায়গা, নেই টয়লেট ব্যবস্থা। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থেকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে হয় তাদের। নানা অভিযোগ আর সীমিত চিকিৎসক ও জনবল দিয়েই যথাসম্ভব সেবা না পেয়ে হতাশ চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ।
পাবনা মানসিক হাসপাতালের সাইক্রিয়াটিস্ট সোশ্যাল ওয়ার্কার বোরহান উদ্দিন হায়দার জানান, ব্রিটিশ আমলের তৈরি এই পুরনো ভবনেই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে বহির্বিভাগ হিসেবে। ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। শঙ্কার মধ্যেই রোগী দেখতে হয় তাদের। বহির্বিভাগের জন্য নতুন আধুনিক একটি ভবনের দাবি তাদের।
পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল বাশার মো. আছাদুজ্জামান জানান, পাবনা মানসিক হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসক সংকট রয়েছে। হাসপাতালটিতে ৩১ জন চিকিৎসকের মধ্যে ২০ জনই নাই। মাত্র ১১ জন চিকিৎসক দিয়ে কোনোমতে সেবার কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকের অভাবে তারা সুন্দরভাবে মানসিক রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে ২০১০ সালে বছরে রোগীর সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ২২৭ জন, ২০২১ সালে সেটা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৪২৬ জনে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিসক ছাড়া কোনোমতেই হাসপাতালটি চালানো সম্ভব নয়।
প্রতি বছর শুধু ঘটা করে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে দিবস পালন নয় মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগ ও অবকাঠামোর উন্নয়ন করে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়