ধর্ষণের মামলা থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগ নেতার বিয়ে

আগের সংবাদ

বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : খাদ্যের অপচয় কমাতে হবে

পরের সংবাদ

মার্টিনেজ-নেইমার আলোয় উদ্ভাসিত আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা জিততে থাকা ব্রাজিল হোঁচট খায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে। হতাশাজনক সে ম্যাচের আগুন দ্বিগুণ করে নেইমাররা ফিরিয়ে দেয় উরুগুয়ের বিপক্ষে। এদিন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার মাঠে তার ফুটবল ছন্দে গোল, অ্যাসিস্টে মাতিয়েছেন দর্শকদের। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের ম্যাচে গতকাল সকালে উরুগুয়ের বিপক্ষে ৪-১ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের অন্য ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্টিনেজের গোলের পর দলকে পেনাল্টি থেকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। দুই মার্টিনেজের নৈপুণ্যে মেসিরা ঘরের মাঠে শুক্রবার সকালে পেরুর বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় পায়। তবে ম্যাচটিতে ব্রাজিলিয়ান রেফারি সাম্পাইওর রেফারিং নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আর্জেন্টাইন সুপার স্টার লিওনেল মেসি।
ব্রাজিল এবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সবদিক দিয়েই দুর্দান্ত খেলছে। শুধু কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটিতেই যেন খেই হারিয়ে ফেলে তারা। যদিও ওই দিন তিতের শিষ্যরা জয় তুলে নিতে পারত তাহলে এখন তাদের পয়েন্ট দাঁড়াত ৩৩। কিন্তু এখন ১১ ম্যাচ শেষে ৩১ পয়েন্ট নিয়েও বেশ শক্ত অবস্থানেই আছে তারা। এবার ব্রাজিল যে দিকটি দিয়ে সবচেয়ে বেশি মুন্সিয়ানা দেখাচ্ছে সেটি হলো তাদের রক্ষণভাগ। বাছাইয়ে ১১টি ম্যাচ খেলে তারা মাত্র ৪টি গোল হজম করেছে। কনমেবলে যা কোনো দলের রক্ষণভাগের দিক দিয়ে সবচেয়ে সেরা সাফল্য। ব্রাজিল এবারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কোনো ম্যাচে হারেনি শুধু তাই নয়। তারা সবমিলিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা ২৮টি ম্যাচে অপরাজিত আছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে চিলির বিপক্ষে ২-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছিল তারা। এরপর ব্রাজিলকে বাছাইয়ের ম্যাচে আর হারের স্বাদ পেতে হয়নি। অন্যদিকে উরুগুয়ে এখন পর্যন্ত ১২টি ম্যাচ খেলেছে। আর এ ম্যাচগুলো খেলে তারা জয় পেয়েছে মাত্র ৪টি ম্যাচে। ড্র করেছে ৪টি ম্যাচে। আর হেরে গেছে বাকি ৪টি ম্যাচে। বর্তমানে তারা ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে আছে। ব্রাজিলের বিপক্ষে উরুগুয়ে সর্বশেষ জয়ের দেখা পেয়েছে ২০০১ সালে। এরপর আরো ১৩ বার মুখোমুখি হয় দুদল। কিন্তু আর একবারো উরুগুয়ে জয়ের দেখা পায়নি। এমনকি শেষ ৪টি ম্যাচের সবগুলোতে ব্রাজিলই জয় পেয়েছে।
এর আগে কলম্বিয়ার বিপক্ষে আগের ম্যাচে পয়েন্ট হারানো ব্রাজিলের আগুনে যেন পুড়ল উরুগুয়ে। গত রাউন্ডে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরে আসা দলটি প্রায় পুরো ম্যাচেই ব্যস্ত ছিল রক্ষণ সামলাতে। ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা ব্রাজিল গোলের জন্য শট নেয় ২২টি, এর ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। উরুগুয়ের পাঁচ শটের কেবল ৩টি ছিল লক্ষ্যে। ঘরের মাঠে নেইমারের নৈপুণ্যে দশম মিনিটে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ফ্রেডের বাড়ানো বল সঙ্গে লেগে থাকা দুই খেলোয়াড়কে এড়িয়ে ডি বক্সে নিয়ন্ত্রণে নেন এই পিএসজি ফরোয়ার্ড। আট মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্রাজিল। আবার ডি-বক্সে বল পেয়ে যান নেইমার। তার দূরের পোস্টে ছুটে গিয়ে বল জালে পাঠান রাফিনহা। ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয় ব্রাজিল। তাদের আক্রমণের ঝাপটা সামলে গোলের তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না উরুগুয়ে। ব্যবধান কমানোর সন্ধানে থাকা উরুগুয়ে উল্টো ৫৮তম মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে তৃতীয় গোল হজম করে বসে।
নেইমারের বাড়ানো বল ধরে দুটি স্পর্শে কোনাকুনি শট নেন রাফিনহা। ৭৭তম মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে ব্যবধান কমান সুয়ারেজ। চলতি আসরে এই প্রথম ঘরের মাঠে গোল হজম করল ব্রাজিল। ৮২তম মিনিটে বারবোসার গোলে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা প্রায় শেষ হয়ে যায় উরুগুয়ের। নেইমারের উঁচু করে বাড়ানো বল জালে পাঠান এই স্ট্রাইকার। ১১ ম্যাচে ১০ জয় ও এক ড্রয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল।
অন্যদিকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পেরুকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল আর্জেন্টিনা। ঘরের মাঠে খেলতে নেমে লাওতারো মার্টিনেজের এক গোলে পেরুর বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানের জয় পায় লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। তবে ম্যাচের শুরুতে পেরুর রক্ষণদেয়াল ভেদ করতে পারছিল না স্বাগতিকরা। ৯ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যেতে পারত আর্জেন্টিনা। হেড করে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠান ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, কিন্তু তিনি অফসাইডে থাকায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি আর্জেন্টিনার। এরপর ম্যাচের ৪৩তম মিনিটে মাতিটনেজের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। নাউয়েল মোলিনার ক্রস থেকে দুর্দান্ত হেডে প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে নেন ইন্টার মিলানের এই ফরোয়ার্ড। ৬৫তম মিনিটে সুযোগ নষ্ট করে পেরু। আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক মার্টিনেজ ডি-বক্সে ফাউল করে জেফারসন ফারফানকে। পেনাল্টি পেয়ে লক্ষ্যে শট নিতে পারলেন না ইয়োশিমার ইয়োতুন। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ১-০ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। ১১ ম্যাচে সাত জয় ও চার ড্রয়ে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে অবস্থান করছে মেসিবাহিনী।
প্রশ্নবিদ্ধ রেফারিং নিয়ে মেসির সরব হওয়া নতুন নয়। তাও আবার রেফারি যদি হয়ে থাকেন ব্রাজিলের মতো চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী দেশের। সর্বশেষ শুক্রবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পেরুর-আর্জেন্টিনা ম্যাচের রেফারি ছিলেন ব্রাজিলিয়ান সাম্পাইও। তার রেফারিং নিয়ে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা করেছেন আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর। ইন্সটাগ্রামে মেসি লিখেছেন, ‘কঠিন ম্যাচ ছিল, খেলাটাও হয়েছে কঠিন। তীব্র বাতাসের সঙ্গে প্রতিপক্ষও গভীরে খেলেছে, আমাদের সেভাবে জায়গাই দেয়নি। এই রেফারি সবসময় এমন করে, যখন সে আমাদের ম্যাচ পরিচালনা করে। মনে হয় যেন কোনো উদ্দেশ্য নিয়েই সে এই কাজটা করে। শেষ পর্যন্ত ভালো হয়েছে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ৩ পয়েন্ট পেয়েছি এবং আমাদের লক্ষ্যের আরো কাছে পৌঁছে গেছি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়